এক প্রজ্ঞাপনেই ১৭ বছরে করা ৪ লাখ মামলা প্রত্যাহার করতে হবে: মির্জা আব্বাস
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। ছবি: সংগৃহীত
বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ও অখন্ড ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র মির্জা আব্বাস বলেছেন, অন্তর্বর্তী সরকার যে প্রক্রিয়ায় ও যে গতিতে বিএনপি নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা রাজনৈতিক মামলাগুলো প্রত্যাহারের উদ্যোগ নিয়েছে- তা সারা জীবনেও শেষ হবে না।
তিনি বলেন, ২০০৭ সাল থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ১৭ বছরে দায়ের করা (প্রায়) ৪ লাখ মিথ্যা ও গায়েবি মামলা একটি প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমেই প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এ নিয়ে দীর্ঘসূত্রতার কোনো সুযোগ নেই। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে যেভাবে তাদের সব নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের দায়ের করা সব মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এটা করতে হবে। অন্যথায় এ মামলা কখনোই শেষ হবে না।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দেশের একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া বিশেষ সাক্ষাৎকারে এ দাবির কথা জানান অখন্ড ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র।
মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় গিয়ে যেভাবে তাদের সব নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ওয়ান-ইলেভেনের সরকারের দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করে নিয়েছিল, ঠিক সেভাবেই এটা করতে হবে। অন্যথায় এ মামলা কখনোই শেষ হবে না।
বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা রাজনৈতিক মামলা প্রত্যাহার তিনি আরও বলেন, সারা দেশে দল ও অঙ্গ সংগঠনের ৬০ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় ৪ লাখ মিথ্যা ও গায়েবি মামলা দায়ের করা হয়েছে। গত সাড়ে ১৭ বছরে দায়ের করা এসব মামলায় লাখ লাখ নেতা-কর্মী জেল খেটেছেন। জুলুম-নির্যাতন ও গুমের শিকার হয়েছেন। এমনকি মৃত্যুবরণও করেছেন অনেকে। কিন্তু মামলা এখনো শেষ হয়নি।
এসব রাজনৈতিক মামলা শেষ করার একটা শ্লথ (গতি) প্রক্রিয়া শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ প্রক্রিয়ায় সারা জীবনেও এসব মামলা শেষ হবে না, যোগ করেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, দেশের একটি বৃহৎ ষড়যন্ত্রকারী চক্র পতিত আওয়ামী লীগের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বিএনপিকে নিশ্চিহ্ন করতে চায়। এর সঙ্গে রয়েছে দেশি-বিদেশি গভীর চক্রান্ত। বিএনপিকে ধ্বংস করতে মরিয়া হয়ে তারা বহুমুখী ষড়যন্ত্র অব্যাহত রেখেছে। কিন্তু বিএনপি এমন একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দল, যা সত্যিকার অর্থেই এদেশের সাধারণ জনগণের ওপর নির্ভরশীল। এ দলের বিরুদ্ধে অতীতে অনেক ষড়যন্ত্র হয়েছে। শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করে তাকে মিথ্যা মামলায় সাজানো রায় দিয়ে জেল খাটানো হয়েছে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের বিরুদ্ধে মিথ্যা ও প্রতিহিংসামূলক মামলা দিয়ে তাকেও ষড়যন্ত্র করে দেশের বাইরে রাখা হয়েছে। কিন্তু এদের কোনো ষড়যন্ত্রই সফল হবে না। কারণ বিএনপির সঙ্গে দেশের আপামর জনসাধারণ আছে। তবে এসব চক্রান্ত সম্পর্কে আমাদের সবাইকে সব সময় সজাগ ও সতর্ক থাকতে হবে।
বর্ষীয়ান এ রাজনীতিক বলেন, বাংলাদেশের রাজনীতি এখন ঘোলাটে। অর্থনীতি পঙ্গু। রাষ্ট্রের প্রত্যেকটি অর্গানকে পতিত আওয়ামী লীগ সরকার ধ্বংস করে দিয়ে গেছে। স্বৈরাচার শেখ হাসিনা এটা উদ্দেশ্যমূলকভাবে করে গেছেন। দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতিটাকে তিনি এমনভাবে বিনষ্ট করেছেন যে, রাজনীতির চরিত্রের ওপর এখন একটা মারাত্মক নেতিবাচক ও স্বৈরাচারী প্রভাব পড়েছে। বিশেষ করে দেশের রাজনীতিবিদদের বেশির ভাগই এখন একেকজন একেকটা ডিক্টেটর হয়ে বসে আছেন। দেশ থেকে রাজনৈতিক এই কুসংস্কৃতির অবসান ঘটাতে হবে।