ষড়যন্ত্র করে কোনো লাভ হবে না, জিয়ার সৈনিকরা দাঁত ভাঙা জবাব দেবে: তারেক রহমান
জনসভায় ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে বক্তব্য দিচ্ছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। ছবি: সংগৃহীত
স্বৈরাচার বিদায় হলেও তাদের প্রেতাত্মারা এখনও ঘোরাফেরা করছে। তারা বিভিন্ন বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে বলে জানিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ষড়যন্ত্রকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর হুঁশিয়ারি দিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিএনপি এই দলের নাম ব্যবহার করে অনেকে বিভিন্ন রকম অনৈতিক কাজের সাথে সম্পৃক্ত হয়েছে। পরিষ্কারভাবে আমি জানিয়ে দিতে চাই, ষড়যন্ত্র কোনো লাভ হবে না। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের মুক্তিকামী মানুষ এবং শহীদ জিয়া, খালেদা জিয়ার প্রকৃত সৈনিকেরা ষড়যন্ত্রের ব্যাপারে প্রতিবাদ প্রতিরোধ গড়ে তুলবে এবং তাদের রুখে দেওয়াসহ যেকোনোভাবে তারা বিষ দাঁত ভাঙা জবাব দেবে।
কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস-চেয়ারম্যান, সাবেক উপমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুসহ সকল রাজবন্দিদের মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে বুধবার (১১ সেপ্টেম্বর) বিকালে টাঙ্গাইলের গোপালপুরের সুতি ভিএম পাইলট মডেল সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গোপালপুর উপজেলা ও পৌর বিএনপি আয়োজিত এক সমাবেশে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
তারেক রহমান বলেন, আমাদের দলের পক্ষ থেকে কতগুলো প্রস্তাবনা রেখেছি জাতির সামনে। বিগত প্রায় ১৭ বছরের জনগণের আন্দোলনের ফলে, জনগণের বিজয় অর্জিত হয়েছে গত ৫ আগস্ট। জনগণের বিজয়ের মাধ্যমে স্বৈরাচার পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। স্বৈরাচার দেশ থেকে বিদায় হয়েছে। এখন আমাদেরকে দেশকে গড়তে হবে।
তিনি আরও বলেন, আমরা দেশ ও দেশের মানুষের সামনে দেশের রাজনীতির কিছু মৌলিক বিষয় পরিবর্তনের ৩১ দফা প্রস্তাবনা দিয়েছি। এগুলো আপনারা দেখেছেন। এরই মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এরই ভিতর আমরা উল্লেখ্য করেছি। আপনাদের আন্দোলনের মাধ্যমে যে স্বৈরাচার সরকারকে বিদায় করেছি আমরা এই বিদায়ের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক যে বিজয় তার একটি অংশ অর্জন করেছি। কিন্তু আমাদের যে মূল লক্ষ্য জনগণের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করা।
অ্যাডভোকেট আব্দুস সালাম পিন্টুর মুক্তির প্রসঙ্গে তারেক রহমান বলেন, এতো অত্যাচার ও নির্যাতনের মধ্যেও বিএনপি টিকে আছে। আজ আবার যদি জনগণের সাহায্য ও সমর্থন বিএনপির প্রতি অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা সেই সম্ভাবনার বাংলাদেশ গড়তে সক্ষম হবো। আমাদের সহকর্মী আব্দুস সালাম পিন্টুর মুক্তির দাবিতে এই সমাবেশে সকলের নিকট দাবি রাখছি যে, আব্দুস সালাম পিন্টুসহ বিএনপির যত নেতাকর্মী যাদের নামে মিথ্যা মামলা ও আটকে রাখা হয়েছে তাদের সকলের মুক্তি দাবি করছি।
টাঙ্গাইল উদ্দেশ্যে তারেক রহমান আরও বলেন, আমাদের সেই লক্ষ্য অর্জন করতে হবে। সেই সাথে আমাদের অর্জন করতে হবে জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি। আমাদেরকে সেই সকল সম্ভাবনার দ্বারগুলোকে খুলে দিতে হবে। এই সম্ভাবনার দ্বারগুলো খুলে দিলে আমরা জনগণের অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে সক্ষম হব। বিএনপির সরকার গঠন করলে টাঙ্গাইলের শাড়ি, চমচম, পাটজাত পণ্য, আনারস ব্যাপক হারে বিদেশে রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া হবে। বিভিন্ন জেলার সম্ভাবনা নিয়ে কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি খন্দকার জাহাঙ্গীর আলম রুবেলের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক বেনজির আহমেদ টিটু, সদস্য অ্যাডভোকেট ওবায়দুল হক নাসির, টাঙ্গাইল জেলা বিএনপির সভাপতি হাসানুজ্জামিল শাহীন, সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. ফরহাদ ইকবাল, জেলা ওলামা দলের সভাপতি আবুল কালাম আজাদ, গোপালপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ-সম্পাদক কাজী লিয়াকত প্রমুখ।
প্রসঙ্গত, আব্দুস সালাম পিন্টু ১৯৯১ ও ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে টাঙ্গাইল-২ (গোপালপুর-ভূঞাপুর) আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি উপমন্ত্রীর দায়িত্ব পান। ২০০৮ সালের জানুয়ারিতে তিনি ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলায় গ্রেফতার হন। গ্রেফতারের পর থেকেই তিনি কারাগারে বন্দি রয়েছেন।