আগামীকাল সারাদেশে বিএনপি ও জামায়াতের হরতাল
আগামীকাল রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দিয়েছে বিএনপি। নয়াপল্টনে সমাবেশে পুলিশের সাথে ব্যাপক সংঘর্ষের পর এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলটি। এদিকে,আগামীকাল সারা দেশে হরতাল ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী। বিএনপির সমাবেশে হামলা ও দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে জামায়াতের নেতাকর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে দলটি।
বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী জানান, আগামীকাল রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালিত হবে। শান্তিপূর্ণ মহাসমাবেশে পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হামলা, গুলিবর্ষণ এবং অসংখ্য নেতা-কর্মী আহত করার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে।
সমাবেশ পণ্ড হওয়ার পর দলীয় কার্যালয়ের নিচে হ্যান্ড মাইকে হরতালের ঘোষণা দেন দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ সমাবেশে পুলিশ লাঠিচার্জ, সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ার শেল ছুড়ে পণ্ড করে দিয়েছে। এর প্রতিবাদে রোববার সারাদেশে সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন করবে বিএনপি।
বিএনপির পাশাপাশি ১২ দলীয় জোট এই হরতাল পালন করবে। ১২ দলের সমন্বয়ক সৈয়দ এহসানুল হুদা গণমাধ্যমকে জানান, আমরাও আগামীকাল সারা দেশে হরতাল পালন করব।
বিএনপির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকেও হরতালের ডাক দেওয়ার তথ্য জানানো হয়েছে।
এছাড়া বিএনপির যুগপৎ আন্দোলনের সঙ্গী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হকও হরতালের সিদ্ধান্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন।
এর আগে দুপুরে বিএনপির সমাবেশ শুরু হওয়ার কিছুক্ষণ পর ধাওয়া দেয় পুলিশ। বেশ কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারশেল ছোড়ে পুলিশ। এর ফলে স্টেজ থেকে বিএনপির নেতাকর্মীরা নেমে যান।
এদিকে,আগামীকাল সারা দেশে হরতাল ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলাম। জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল এটিএম মা'ছুম বিবৃতিতে বলেন,‘রাজধানীর শাপলা চত্বরে জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশ বানচাল করার হীন উদ্দেশ্যে সরকার দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ৩ শতাধিক নেতা-কর্মীকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করেছে। মিটিং-মিছিল করা যেকোনো রাজনৈতিক দলের সংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার।’
‘জামায়াতের মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা–কর্মীদের বাস, লঞ্চ ও ট্রেন থেকে নামিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এই গ্রেপ্তার সম্পূর্ণ বেআইনি, অগণতান্ত্রিক, অনাকাঙ্ক্ষিত ও অনভিপ্রেত। আমি জালিম সরকারের এই অন্যায় গ্রেপ্তারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সঙ্গে অবিলম্বে সরকারের পদত্যাগ, কেয়ারটেকার সরকারের অধীনে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন, বিএনপির মহাসমাবেশে আওয়ামী লীগ ও পুলিশের হামলা, আমিরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানসহ নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার এবং জামায়াত ঘোষিত ২৮ অক্টোবরের মহাসমাবেশে পুলিশের বাধাদান ও মহাসমাবেশে যোগ দিতে আসা নেতা–কর্মীদের অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে আগামীকাল ২৯ অক্টোবর রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা শান্তিপূর্ণ হরতালের কর্মসূচি ঘোষণা করছি। হরতালের এই কর্মসূচি শান্তিপূর্ণভাবে সফল করার জন্য আমি সংগঠনের সর্বস্তরের জনশক্তি এবং দেশবাসীর সহযোগিতা কামনা করছি।’
হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স, ফায়ার সার্ভিস, সংবাদপত্রের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট গাড়ি এবং ওষুধের দোকান হরতালের আওতামুক্ত থাকবে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়।