বিএনপির চেয়ারপারসন হিসেবে খালেদা জিয়ার ৪১ বছর

প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর ১৯৮২ সালের ৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে রাজনীতিতে সক্রিয় হন বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। কিন্তু ১৯৮৪ সালের ১০ মে বিএনপির কাউন্সিলের মাধ্যমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের চেয়ারপাসন নির্বাচিত হন তিনি। সেই হিসেবে গৃহবধু থেকে দলের চেয়ারপারসন হিসেবে রাজনীতিতে আসার ৪১ বছর পূর্ণ করেছেন তিনি। বর্তমান রাজনীতি অনেকটা নিষ্ক্রিয় থাকলেও দলের চেয়ারপারসনের দায়িত্ব পালন করছেন তিনি।
খালেদা জিয়ার প্রকৃত নাম খালেদা খানম। ডাক নাম পুতুল। ১৯৪৬ সালের ১৫ আগস্ট জলপাইগুড়িতে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তিন বোন এবং দুই ভাইয়ের মধ্যে তিনি তৃতীয়। ভাইয়েরা সবার ছোট। তার বাবা ইস্কান্দর মজুমদার এবং মা বেগম তৈয়বা মজুমদার।
১৯৬০ সালের আগস্ট মাসে জিয়াউর রহমানের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। তখন তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর একজন ক্যাপ্টেন ছিলেন। ডিএফআই এর অফিসার হিসাবে তখন দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন।
খালেদা জিয়ার দুই ছেলের মধ্যে বড় তারেক রহমান বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান। বর্তমানে তিনি লন্ডনে আছেন। আর ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি মালয়েশিয়া একটি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যান।
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, উনার জীবনে অর্জন অনেক ব্যাপাক। একজন গৃহবধূ থেকে তিনি রাজনীতিতে এসেছেন। এরশাদ (হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ) সরকারের আমলে যখন বিএনপিকে ধ্বংস করার পরিকল্পনা করা হয়, তখন তিনি শক্ত হাতে হাল ধরেন। দীর্ঘ ৯ বছর আন্দোলন করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়ে ১৯৯১ সালে সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। একইভাবে ২০০১ সালে আবার প্রধানমন্ত্রী হন। একইভাবে তিনি তিনবার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ যখন গণতন্ত্রের জন্য আন্দোলন করছেন, তখন তাকে গৃহঅন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। এরআগেও তাকে কারাগারে রাখা হয়েছিল। কিন্তু তিনি কখনো নতি স্বীকার করেননি।
খালেদা জিয়া বড় অর্জন তিনি গণতন্ত্রকে পুনরুদ্ধার করা জন্য সব সময় লড়াই করেছেন বলেও উল্লেখ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, তিনি সফলও হয়েছেন। এখনো তিনি গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করার জন্য গৃহবন্দী রয়েছেন।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুদকের করা মামলায় সাজাপ্রাপ্ত নাজিমউদ্দীন রোড়ের পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে যান খালেদা জিয়া। এরপর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল থেকে সরকারের নির্বাহী আদেশ মুক্তি পান তিনি। এরপর থেকেই তিনি গুলশানে বাসভবন ফিরোজা আছেন। এরমধ্যে গত ২৯ এপ্রিল ৬ ষষ্ঠবারের মতো হাসপাতালে চিকিৎসা নেন।
প্রসঙ্গত. উইকিপিডিয়ার তথ্য অনুযায়ী ১৯৭৮ সালের ১ সেপ্টেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান জাতীয়বাদী দল বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। ১৯৭৭ সালের ৩০ এপ্রিল জিয়াউর রহমান তার সামরিক শাসনকে বেসামরিক করার উদ্দেশ্য ১৯ দফা কর্মসূচি প্রণয়ন করেন। জেনারেল জিয়া রাষ্ট্রপতির পদের জন্য নির্বাচন করবেন তখন তার নেতৃত্বে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) প্রতিষ্ঠিত হয়। এই দলের সমন্বয়ক ছিলেন বিচারপতি আব্দুস সাত্তার।
এমএইচ/আরএ/
