নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই হবে: দুুদু
এ বছরের শেষে অথবা আগামী বছরের শুরুতে নির্বাচন হবে এবং সে নির্বাচন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘আপনি এবং আপনার দল তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করবেন কি না তা ভেবে দেখতে পারেন। কিন্তু আপনার অধীনে এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হবে না।’
বৃহস্পতিবার (৪ মে) জাতীয় প্রেসক্লাবে ইয়ুথ ফোরামের আয়োজনে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও ডা. জোবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহারের দাবিতে এ প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়।
দুদু বলেন, প্রধানমন্ত্রী তত্ত্বাবধায়ক সরকারকে ভয় পাচ্ছেন। তত্ত্বাবধায়ক সরকার ঠেকানোর জন্য বিদেশ সফর শুরু করেছেন। কিন্তু কোনো লাভ হবে না।
তিনি বলেন, ‘দেশ আজ ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকটে পড়েছে। দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। জাতীয় সংসদ থেকে ইউনিয়ন পর্যন্ত নির্বাচন ব্যবস্থায় ধ্বংস হয়েছে। সকল পেশাজীবী সংগঠনের স্বাভাবিকভাবে নির্বাচন হয় না, এমনকি মসজিদ কমিটি নির্বাচনের দলীয়করণ হয়।’
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, মানুষের কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। সরকারের বাইরে কোনো পত্রিকায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়া নাই। সম্প্রতি দৈনিক দিনকাল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, তার আগে আমার দেশ পত্রিকা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে, দিগন্ত টেলিভিশন, চ্যানেল ওয়ান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
শামসুজ্জামান দুদু বলেন, শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে গণতন্ত্রের প্রতীক হচ্ছেন খালেদা জিয়া। বলা হয়, খালেদা জিয়া এতিমের টাকা মেরে খেয়েছেন। আমি চ্যালেঞ্জ করে বলছি, যে টাকার কথা বলা হয়েছে সেই টাকা বিদেশ থেকে এতিমের টাকা হিসেবে আসেনি। জিয়ার নামে প্রতিষ্ঠান করার জন্য কুয়েতি সরকার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা এখন ব্যাংকে কয়েকগুণ হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী, রাজনীতিবীদসহ সরকারের মিডিয়া এই টাকার মিথ্যা বয়ান জাতি ও বিশ্ববাসীকে দিয়েছে।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ১৬-১৭ বছর দেশে থাকেন না। আইন করে তার কণ্ঠরোধ করা হয়েছে। তার বক্তব্য সংবাদপত্রে বা টেলিভিশনে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে। তারেক রহমানকে নিয়ে আওয়ামী লীগ ভয় পেয়েছে।
এ কারণে তার মুখোমুখি হওয়ার সাহস সরকারের নাই। তার নামে আপনারা আতঙ্কিত। সে দেশে আসলে আপনার কীভাবে থাকবেন, কী করবেন, কীভাবে চলবেন এই আতঙ্কে তারেক রহমানকে কোনঠাসা করে ও বিদেশে থাকতে বাধ্য করছেন।
সাবেক এ ছাত্র নেতা বলেন, তারেক রহমানের স্ত্রী হওয়ার কারণে মেধাবী ডাক্তার ডা. জুবাইদা রহমানের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হয়েছে। শুধু মামলা নয়, এমন কোনো কুৎসা নাই যা আপনার তার বিরুদ্ধে করেন নাই।
কৃষকদলের সাবেক এই আহ্বায়ক বলেন, সংবিধানে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছিল, সেই আইনটা আপনারা পরিবর্তন করেছেন। ৯০ এর গণভোটের মাধ্যমে ভোটের অধিকার ফিরিয়ে এনেছিল এদেশে মানুষ। প্রয়োজনে আবারও গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে এদেশের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠা হবে। এ ব্যাপারে কোনো আপস নাই।
তিনি বলেন, আপনারা (আওয়ামী লীগ) বলছেন বিএনপির সঙ্গে আলোচনা করবেন না, কিন্তুু বিএনপি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবে তো? কোথায় পেয়েছেন যে বিএনপি আপনাদের সঙ্গে আলোচনা করবে? শুধু বিএনপি নয়, কোনো বিরোধী দলই প্রধানমন্ত্রীকে বিশ্বাস করে না।
তিনি বলেন, ‘রাজনীতিকভাবে পরাজিত হয়ে জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে এখন বিদেশে ধরনা দিচ্ছে আওয়ামী লীগ।’
বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন-অর-রশিদ, সহ-তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগাঠনিক সম্পাদক লায়ন মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার, কৃষকদরের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক এম জাহাঙ্গীর আলম,
জাতীয়াতাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনের সভাপতি আমির হোসেন বাদসা, মৎসজীবি দলের সদস্য ইসমাইল হোসেন সারাজী, দেশ বাঁচাও-মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রকিবুল ইসলাম রিপন। সঞ্চলনায় ছিলেন শরিফুল ইসলাম শরিফ।
এমএমএ/