ফিরোজা’য় ঈদ খালেদার; নেতারা কেউ ঢাকায়, কেউ নিজ এলাকায়
প্রায় চৌদ্দ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি নেতাদের ঈদ আনন্দ আয়োজন চলছে। প্রতি বছরের মতো এবারও তাদের কেউ কেউ ঢাকায় আবার কেউ কেউ ঈদ করবেন নিজ নির্বাচনী এলাকায়।
তবে বেশিরভাগ কেন্দ্রীয় নেতা নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ উদযাপন করবেন। কেউ কেউ ঢাকায় ঈদের নামাজ শেষে নির্বাচনী এলাকায় যাবেন। এবার বিএনপি নেতারা সবাই ঈদে নিজ এলাকায় যাচ্ছেন আন্দোলনের বার্তা নিয়ে।
বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ঢাকায় ঈদ না করে নিজ নিজ এলাকায় যেতে দলের হাইকমান্ড থেকে নেতাদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ঈদের আগে প্রত্যেক কেন্দ্রীয় নেতাকে নিজ এলাকায় হামলা-মামলায় ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য করতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে ঈদ করার পাশাপাশি ঈদ পরবর্তী আন্দোলনের কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে সাংগঠনিক কর্মকৌশল ঠিক করার নির্দেশনা রয়েছে।
মামলায় সাজাপ্রাপ্ত হয়ে অন্তরীণ থাকা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া। খালেদা জিয়া গুলশানের বাসভবন ‘ফিরোজা’য় ঈদ করবেন। দীর্ঘদিন পর এবার তিনি ছোট ছেলে প্রয়াত আরাফাত রহমান কোকোর স্ত্রী শর্মিলী রহমান সিঁথির সঙ্গে ঈদ করবেন। এ ছাড়া, বোন সেলিমা রহমান ও ভাই শামীম এস্কান্দারসহ পরিবারের কয়েকজন সদস্যও ঈদের দিন খালেদা জিয়ার সঙ্গে সময় কাটাবেন। ওইদিন সন্ধ্যায় তার সঙ্গে বিএনপির সিনিয়র নেতাদের দেখা করার কথা রয়েছে। বিএনপি মিডিয়া সেলের সদস্য শায়রুল কবির খান ঢাকা প্রকাশ কে এ তথ্য জানান।
খালেদা জিয়া ছাড়াও দলের অন্য শীর্ষ নেতারা এবার কে কোথায় ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন, একনজরে তা তুলে ধরা হলো।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এবার ঢাকায় ঈদ করবেন। ঈদের পর নিজ এলাকা ঠাকুরগাঁওয়ে যাওয়ার কথা রয়েছে তার। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এবং আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী চট্টগ্রামে নিজ এলাকায় ঈদ করবেন।
স্থায়ী কমিটির অন্য সদস্যদের মধ্যে মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, জমির উদ্দিন সরকার, নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান ঢাকায় ঈদ করবেন। তবে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আব্দুল মঈন খানের ঈদের দিন নিজ এলাকা নরসিংদীতে যাওয়ার কথা রয়েছে। ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু চিকিৎসার জন্য সিঙ্গাপুর এবং সালাউদ্দিন আহমেদ ভারতে আছেন। তারা সেখানেই ঈদ কাটাবেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাড়ে চার মাস ধরে কারাগারে রয়েছেন। জানা যায়, তিনি ৫০ মামলায় জামিন পেয়েছেন, তার মুক্তিতে এখন আর কোনো আইনি বাধা নেই। কারামুক্ত হলে রাজধানীর আদাবরের বাসায় ঈদ করার কথা রয়েছে তার। অন্যথায় রিজভীর ঈদ কাটবে কারাগারে।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক নিজ এলাকা নোয়াখালীতে এবং দলটির যুগ্ম মহাসচিব ও পদত্যাগকারী সংসদ সদস্য হারুনুর রশিদ নিজ এলাকা চাঁপাইনবাবগঞ্জে ঈদ করবেন।
দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ও সংরক্ষিত নারী আসনের পদত্যাগকারী এমপি ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা এ বছর ঢাকায় ঈদ উদযাপন করবেন।
দলটির ভাইস চেয়ারম্যান শাহজাহান ওমর, আবদুল আউয়াল মিন্টু, এজেডএম জাহিদ হোসেন ঈদে ঢাকায় থাকবেন। অন্যদিকে ভাইস চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান ও বরকতউল্লাহ বুলু নোয়াখালীতে, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বরিশালে এবং সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু নাটোরে নিজ এলাকায় ঈদ করবেন। কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বে থাকা সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স ময়মনসিংহের নিজ এলাকা থেকে ঘুরে এসেছেন। ঢাকায় ঈদ করে তিনি আবার নিজ এলাকায় যাবেন। আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ নিজ এলাকা মুন্সিগঞ্জে যাওয়ার কথা রয়েছে। সহ-দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু নাটোরে ঈদ করবেন।
কেন্দ্রীয় অন্য নেতাদের মধ্যে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল নিজ এলাকা জামালপুরের মেলান্দহে, আবু নাসের মোহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, তাবিথ আউয়াল ও ইশরাক হোসেন ঢাকায় ঈদ করবেন। ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান ও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আবদুস সালাম নিজ এলাকায় ঈদ করবেন। ঢাকার অন্য নেতাদের মধ্যে আমিনুল হক ও রফিকুল আলম মজনু নিজ নির্বাচনী এলাকায় ঈদ করবেন।
এমএইচ/এমএমএ/