আইএমএফের শর্তে গ্যাস-বিদ্যুৎ-সারের দাম বাড়াচ্ছে সরকার: ফখরুল

আইএমএফের শর্ত মানতে সরকার গ্যাস-বিদ্যুৎ-সারের দাম বাড়াচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন মির্জা ফখলরুল ইসলাম আলমগীর।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে এক অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘আজকে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য আইএমএফের শর্ত মেনে নিয়ে একদিকে বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে, গ্যাসের দাম বাড়ানো হচ্ছে এবং সেই বাড়ানোর পরে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে। এখন আবার কৃষকদের সারের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে। সেখানে বলা হয়েছে যে, কৃষকদের কষ্ট হবে কিন্তু উন্নয়নের স্বার্থে এটা মেনে নিতে হবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘কোন উন্নয়ন, কার উন্নয়ন? এই উন্নয়ন হচ্ছে এই শাসকগোষ্ঠী তাদের নিজেদের উন্নয়ন। আজকে এই যে বৈষম্যটা সৃষ্টি করেছে বাংলাদেশে। একদিকে সেই বিশাল বিশাল অঙ্কের টাকার মালিক। তারা বাড়ি-গাড়ি সমস্ত বিলাস-বৈভব নিয়ে হাজার হাজার কোটি টাকা ব্যাংক থেকে লোপাট করে তারা বিদেশে পাচার করছে এবং বাড়ি ঘর কিনছে থাকছে।’
অন্যদিকে, আমাদের সাধারণ মানুষেরা তারা দুই বেলা দুই মুঠো খাওয়ার জন্যে তাদেরকে সংগ্রাম করতে হচ্ছে, লড়াই করতে হচ্ছে। তাও সে পুরোপুরি পাচ্ছে না। কারণ জিনিসপত্রের দাম তাদের আয়ত্বের বাইরে চলে গেছে, যোগ করেন তিনি।
গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নিহত, গুম ও নির্যাতনের শিকার নেতা-কর্মীদের দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ঈদ উপহার বিতরণ উপলক্ষে এই অনুষ্ঠান হয়।
অনুষ্ঠানে গুম হওয়া ছাত্র দলের নুরুল আলম নুরু, নুরুজ্জামান জনি, মাহমুদুর রহমান বাপ্পী, পারভেজ রেজা, তরিকুল ইসলাম তারা, মো. সোহেল, মফিজুল ইসলাম রাশেদ, জাকির হোসেন, জাকির হোসেন মিলন, স্বেচ্ছাসেবক দলের কাওসার, জাসাসের আমিরুল ইসলাম মিন্টুর পরিবারের সদস্যদের কাছে তারেকের ঈদ উপহার তুলে দেন বিএনপি মহাসচিব।
বিএনপির পক্ষ থেকে জানানো হয়, এবার সারা দেশে গুম-খুন-নির্যাতিত হওয়া এক হাজার পরিবারের কাছে তারেক রহমানের ঈদ উপহার পৌঁছানো হবে যা আজ থেকে শুরু হলো।
মির্জা ফখরুল বলেন, সারা দেশে আমার মনে হয় যে, কমপক্ষে ৭০০ উপরে আছেন যারা গুম হয়ে গেছেন, সহস্রাধিক গণতান্ত্রিক কর্মী আছেন যারা খুন হয়েছেন। একটা ভয়াবহ অবস্থা বিরাজ করছে গত ১৪/১৫ বছর ধরে। এখানে কিছুক্ষণ আগে বলেছেন, ১০ বছর/১১ বছর তারা তাদের পিতাকে, ভাইকে দেখতে পায়নি।
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রতিবছর এভাবে চেষ্টা করি আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাদেরকে এই কথাটা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্য যে, আমরা তাদের ভুলিনি, আমরা তাদের সঙ্গে আছি। যদিও এখানে উপহারের ব্যাপারটা একেবারেই গৌণ।’
বিএনপি মহাসচিবের সভাপতিত্বে ও মিডিয়া সেলের সদস্য আতিকুর রহমান রুমনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান ও সেলিমা রহমান, গুম হওয়া ছাত্রদলের মাহমুদুর রহমান বাপ্পীর বোন ঝুমুর ও সোহেলের মেয়ে সাদিকা সরকার সাফা বক্তব্য রাখেন।
অনুষ্ঠানে দলের চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ভারপ্রাপ্ত দফতর সম্পাদক সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন, সদস্য শাম্মী আখতার প্রমুখ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া, বিএনপির তাইফুল ইসলাম টিপু, যুব দলের মামুন হাসান, কামরুজ্জামান দুলাল, স্বেচ্ছাসেবক দলের এসএম জিলানি, নাজমুল আহসান, চেয়ারপারসনের একান্ত সচিব এবিএম আবদুস সাত্তারও অনুষ্ঠানে ছিলেন।
এমএইচ/এমএমএ/
