ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন সভ্য সমাজে কল্পনাও করা যায় না: দুদু

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন একটি ভয়ানক কালো আইন। সভ্য সমাজে এমন আইন কল্পনাও করা যায় না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু।
তিনি বলেন, ‘শুধু বাংলাদেশ নয় সারা দুনিয়ার মানবাধিকার সংগঠনগুলো এই আইন বাতিলের দাবি জানালেও সরকার সেটি না করে এই আইনে নাগরিকদের ধরে নিয়ে নির্যাতন করছে এমন কী নির্যাতনে অনেকে মারাও যাচ্ছেন। তিনি বলেন,এই কর্তৃত্ববাদী সরকারকে যদি হঠাতে না পারি তাহলে আগামী দিনে বাংলাদেশের স্বাধীনতা বিপন্ন হবে।’
মঙ্গলবার (৪ এপ্রিল) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা কালো আইন বাতিল, প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রমূলক মামলা প্রত্যাহার, আমার দেশ, দিগন্ত টিভি, চ্যানেল ওয়ান, ইসলামিক টিভি, দৈনিক দিনকালসহ সকল বন্ধ গণমাধ্যম খুলে দেয়ার দাবিতে এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব বলেন।
দুদু বলেন, ‘এই সরকার দেশে ভয়ের সাংস্কৃতি তৈরি করেছে।দেশের জনগণকে ভয় দেখিয়ে ঘরে রাখতে চাচ্ছে। আর সাংবাদিকদেরকে ভয় দেখিয়ে তাদের লেখার, বলার স্বাধীনতা কেড়ে নিতে চাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী, স্বৈরাচারী সরকারের কাছ থেকে গণতান্ত্রিক কোনো কিছু পাব এটা আশা করা যায় না।
অন্ধকার যুগ আবার ফিরে এসেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গত ১৫ বছরে দেশে একটি শ্বাসরুদ্ধ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। শুধু মতিউর রহমানের উপর প্রথম আক্রমণ আসেনি। মাহমুদুর রহমানের উপর আক্রমণ এসেছে। বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী সাংবাদিক শফিক রেহমানের উপর আক্রমণ এসেছে।
তিনি এমন আক্রমণের শিকার হয়েছেন যে এই বৃদ্ধ বয়সে দেশ ছেড়ে বিদেশে যেতে হয়েছে। তারপর পত্রিকা বন্ধ। আমার দেশ পত্রিকা, দিনকাল, দিগন্ত টিভি, ইসলামী টিভি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এসব কার্যক্রম দেখলে সেই বাকশালের কথা মনে পড়ে যায়। যখন চারটি পত্রিকা রেখে সকল সংবাদপত্র বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। এক নেতার এক দেশ করা হয়েছিল। সে ছাড়া আর কেউ নেতা হতে পারবে না। আর কোনো রাজনৈতিক দল থাকবে না দেশে কোনো সংবাদমাধ্যম থাকবে না। সেই অন্ধকার যুগ যেন আবার ফিরে এসেছে।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, এই দেশ যে জন্য স্বাধীন করা হয়েছিল সবকিছু আজ পদদলিত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী যেন একটি দলের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। প্রশাসন যেন একটি দলের প্রশাসন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সারা জীবন গণতন্ত্রের পক্ষে কাজ করে এসেছে। সেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সম্মতি স্বৈরতন্ত্রের পক্ষ নিয়েছে।
আমাদের সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব তাদের সংগঠন এই স্বৈরতন্ত্রের সরকারের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে, বিবৃতি দিচ্ছে। এটা জাতির অধপতনের লক্ষণ।
তিনি বলেন, জাতিসংঘ থেকে বলা হয়েছে ডিজিটাল আইন বাতিল করুন। আর আমাদের নিশি রাতের সরকার ও গনধিক্কিত আইন মন্ত্রী বলেছে এটা বাতিল করার প্রয়োজন নেই । মানুষ খেতে পাচ্ছে না। কাজ নাই,চাকরি নাই। আর এই কথা মানুষ বলতে পারবে না। আর বললেও সাংবাদিকরা লিখতে পারবে না। কি ভয়ংকর ব্যাপার।
প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, আমার দেশ পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানসহ যে সকল সাংবাদিক ও সম্পাদক এর উপর মামলা করা হয়েছে সকল মামলা প্রত্যাহার, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিও জানান তিনি।
সংগঠনের সভাপতি সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বিএনপির শিশু বিষয়ক সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ সিদ্দিকী, বাংলাদেশ সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের সদস্যসচিব কাদের গণি চৌধুরী, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সহসভাপতি বাছির জামাল ও রাশিদুল হক, কৃষকদলের কেন্দ্রীয় নেতা শাহ আবদুল্লাহ আল বাকী প্রমুখ বক্তব্য দেন।
এমএমএ/
