ওবায়দুল কাদেরকে 'শান্তি কমিটির' পদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান গয়েশ্বরের
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান আখ্যা দিয়ে বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় তাকে এই পদ থেকে পদত্যাগের আহ্বান জানিয়েছেন।
শুক্রবার (৩ মার্চ) দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে সামনে এক মানববন্ধনে এ আহ্বান জানান তিনি। বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াসহ কারাবন্দিদের মুক্তি, দৈনিক দিনকালসহ বন্ধ মিডিয়া খুলে দেওয়ার দাবিতে মানবন্ধনের আয়োজন করে বাংলাদেশে সম্মলিত পেশাজীবী পরিষদ।
গয়েশ্বর বলেন, ৭১ সালের বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের সময় তৎকালীন পাকিস্তানের রাষ্ট্রপতি ইয়াহিয়া খানের মতো আজকের প্রধানমন্ত্রীও একটি শান্তি কমিটি গঠন করেছেন। কিন্তু এই শান্তি কমিটিও তাকে রক্ষা করতে পারবে না।
তিনি বলেন, আমরা গণতন্ত্রের জন্য লড়াই করছি। এই ক্ষেত্রে যারা শামিল হতে পারবেন ভালো। আর যারা বিরোধিতা করবেন তারা ৭১ সালের মতো রাজাকারের খাতায় নাম লেখাবেন। ৭১ সালে একটি শান্তি কমিটি করেছিল ইয়াহিয়া খান। তখন যেখানে মুক্তিযোদ্ধা সেখানে শান্তি কমিটির উৎপাত। এখন আবার এই প্রধানমন্ত্রী আরেকটি শান্তি কমিটি করেছে। যেখানে আমরা আন্দোলন করতে যাই সেখানেই এই শান্তি কমিটি বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে। আর এই শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান হলেন ওবায়দুল কাদের। স্বাধীনতার যুদ্ধের পরে শান্তি কমিটির কী হয়েছে তা মনে হয় ওবায়দুল কাদেরের পারিবারিক সূত্রে তা জানা আছে। আমি বিশ্বাস করি তিনি শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান থেকে পদত্যাগ করবেন। অতীতে ৭১ সালের পরে তার পরিবারে যে ঘটনা ঘটেছিল তার যেন পুনরাবৃত্তি না ঘটে। আমি প্রকাশ করলাম না কী ঘটেছিল। সেটা অনেকে ভালো করে জানেন। সুতরাং কোনো কমিটি তাকে রক্ষা করতে পারবে না। একটা দাবি, স্বৈরাচারের পতন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন।
গয়েশ্বর বলেন, আমার মনে হয় এখন মুক্তির দাবি, কিংবা মামলা প্রত্যাহারে দাবি করা আমাদের কাছে মুখ্য নয়। এই সরকারকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে প্রত্যাহার করতে হবে। সেই দাবিটাই আমাদের মুখ্য হওয়া দরকার। এই সরকারকে সরাতে হবে। তারপর একটি সুষ্ঠু অবাধ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের প্রতিনিধির সমন্বয়ে একটি সরকার দেশের জন্য অপরিহার্য।
বর্তমান সরকার গণতান্ত্রিক নয় বলে তারা জনগণের কথা ভাবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, কালকে একজন চেয়ারম্যান একটি বক্তব্য দিল, সেটি হলো-জনগণ থাকবে ঘরে, ভোট দেবেন প্রশাসন, সন্ধ্যা বেলায় ফলাফল ঘোষণা করবে নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ জনগণকে ভোট কেন্দ্রে যেতে দেবে না। ভোট দেবে কে? প্রশাসন। প্রশাসন মানে ডিসি, এসপি, পুলিশ। যেটা আপনারা দেখেছেন ২০১৮ সালের নির্বাচনে। প্রতিযোগিতা কতপ্রকার ও কী, কী। অর্থাৎ কে কত বেশি ভোট চুরি করতে পারে। ভোট রক্ষার দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসন, সেই পুলিশকে দিয়ে তারা (আওয়ামী লীগ) ভোট চুরি করায়। না হলে তাদের চাকরি থাকবে না।
সরকারকে নিরাপদ এক্সিটের ব্যবস্থা করে দিতে পুলিশের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, যারা সরকারের চাকরি করেন, মনে রাখবেন আপনারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। জনগণের টাকায় আপনারা চলেন। দেশটা আমার একার নয়, আপনাদেরও। আপনাদেরও সন্তান আছে। তাই দেশের কথা চিন্তা করে ৭১ সালের মতো রুখে দাড়ান স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে।
বিদ্যুত খাতে লুটপাট করে দেশকে ধ্বংসের শেষ সীমানায় নিয়ে গেছে সরকার উল্লেখ করে গয়েশ্বর বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়লে সবকিছুর দাম বাড়বে। বিদ্যুত খাতে লুটপাটের টাকা জনগণের পকেট কেটে সমন্বয় করছে। বিদ্যুত উৎপাদন করুক বা না করুক ক্যাপাসিটি চার্জ দিতে হবে ভারতের আদানিকে।
পেশাজীবী পরিষদের আহ্বায়ক এ জেড এম জাহিদ হোসেন এর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে সংগঠনের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আতাউর রহমান ঢালী, সাংবাদিক নেতা আমিরুল ইসলাম কাগজী, আইনজীবী আবেদ রাজা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।
এসএন