নির্দলীয় সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না: আমির খসরু
নির্দলীয় সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না বলে হঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা বিভিন্ন ইস্যুতে বিভিন্ন রকম বক্তব্য দিচ্ছেন। কিন্তু আমরা এসবের কোনো উত্তর দিচ্ছি না। জনগণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন চায়। এটা আমাদেরও দাবি। আমরা এর বাইরে কোনো আলোচনা করব না।’
সোমবার (২৭ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে সেগুনবাগিচার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সাবেক ও বর্তমান নেতাদের উদ্যোগে এক প্রতিবাদ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য এসব কথা বলেন খসরু।
গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে সরকার পতনের চলমান আন্দোলনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলকে বিএনপির পদাতিক বাহিনী হিসেবে দেখতে চান দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমির খসরু।
চলমান আন্দোলনে ছাত্রদল এখনো প্রত্যাশা অনুযায়ী ভূমিকা রাখতে পারেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আন্দোলনে ছাত্রদল বিএনপির মূলশক্তি, অন্য অঙ্গ সংগঠন সহায়ক শক্তি। তাই ছাত্রদলকে রাজপথে অতীতের মতো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তাহলেই সরকারের পতন ঘটবে।’
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর মুক্তির দাবি এবং কারাগারে যথাযথ চিকিৎসা না দিয়ে রিজভীর উপর নির্যাতনের প্রতিবাদে এই সভা হয়।
বিএনপির বিশেষ সম্পাদক আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, ‘ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার দুরারোগ্য রোগে আক্রান্ত। সুষ্ঠু নির্বাচন না হলে এ রোগ থেকে তারা মুক্তি পাবে না।’
সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমান বলেন, শেখ হাসিনার পতন ছাড়া দেশ ও জনগণের মুক্তি নেই। এ লক্ষ্যে বিএনপির নেতৃত্বে আন্দোলন চলছে। শেখ হাসিনার পতন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে। মৃত্যু হবে, তবুও আমরা কেউ রাজপথ ছেড়ে যাব না।
সুচিকিৎসা না দিয়ে কারাগারে রুহুল কবির রিজভীকে হত্যার পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন বলেন, ‘বিএনপির নেতৃত্বে চলমান আন্দোলনকে আমরা আগামীতে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাব। নব্বইয়ের মতো ছাত্র-গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে এই সরকারকে বিদায় করব।’
ক্ষমতাসীনদের উদ্দেশে যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, যত চেষ্টাই করুন না কেন, জোর করে আর ক্ষমতায় থাকতে পারবেন না। গণআন্দোলনে ক্ষমতার পট পরিবর্তন হবেই। তখন পালানোর পথ পাবেন না।
বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন হুঁশিয়ার করে বলেন, আজকে তৃণমূলে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর যে কর্মসূচি চলছে, তা ধাপে ধাপে ঢাকামুখী হবে এবং ঢাকাকে স্তব্ধ করে দেবে।
নির্বাহী কমিটির সদস্য নাজিম উদ্দিন আলম বলেন, ‘এই সরকার বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের পাশাপাশি আলেম-ওলামাদের ওপরও নির্যাতন করছে। কিন্তু হামলা মামলা, অত্যাচার-নির্যাতন করে ক্ষমতায় টিকে থাকা যাবে না।’
বিএনপির প্রচার সম্পাদক শহীদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেন, এই সরকারকে হটাতে চলমান আন্দোলনে ছাত্রদলকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। তাদেরকে নতুন আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। যুব সমাজকেও এগিয়ে আসতে হবে। আন্দোলনে আমাদের পিছপা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
বিএনপির ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক রকিবুল ইসলাম বকুল বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারে এই সরকারকে বিদায় করতে হলে রাজপথ দখলে নিতে হবে। এজন্য আমাদের সর্বাত্মক প্রস্তুতি নিতে হবে।
সাবেক ছাত্রনেতা আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এবং আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সাবেক ছাত্রনেতা ফজলুল হক মিলন, নাজিম উদ্দিন আলম, কামরুজ্জামান রতন, হামিদুর রহমান হামিদ, রকিবুল ইসলাম বকুল, আজিজুল বারী হেলাল, আব্দুল খালেক, ওবায়দুর রহমান চন্দন, জাকির হোসেন রোকন, আকরামুল হাসান, ফজলুর রহমান খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএইচ/এমএমএ/