বিএনপি পথ হারায়নি: মোশাররফ

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন পথ হারিয়ে পথযাত্রা কীভাবে হয়? সারাদেশে একসঙ্গে এক দাবিতে কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। কোথাও কোথাও বাধা সম্মুখীন হলেও অধিকাংশ জায়গায় কর্মসূচি সফল হয়েছে। বিএনপি নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেশের সাধারণ জনগণ অংশগ্রহণ করে সরব উপস্থিতি জানান দিয়েছে। অর্থাৎ বিএনপি পথ হারায়নি।
বুধবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) খালেদা জিয়ার গুলশানের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নের জবাবে খন্দকার মোশাররফ এ সব কথা বলেন।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বিএনপির ঘোষিত কর্মসূচির বিপরীতে পাল্টা কর্মসূচি দিচ্ছে। কয়টি জায়গায় শান্তি সমাবেশ হয়েছে? আসলে এরা দৈন্যদশা পড়েছে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি যত দেবে তত তাদের ক্ষতি হবে, আমাদের ক্ষতি হবে না।
সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে রাজনৈতিক কর্মসূচি দেওয়ার অধিকার আছে। কিন্তু একটি রাজনৈতিক দলের কর্মসূচির দিনে অন্য রাজনৈতিক দল কর্মসূচি ঘোষণা দিলে এটাকেই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি বলে। আর এর মাধ্যমেই তাদের দৈন্যতা ও অসহায়ত্ব প্রকাশ পায়। আওয়ামী লীগ তাদের রাজনৈতিক অস্তিত্ব হারিয়ে ফেলেছে তাই পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি দিয়েও সফল করতে পারছে না।
তিনি বলেন, নিশাচর সরকারের সীমাহীন দুর্নীতি, লুটপাট, অযোগ্যতা ও অব্যবস্থার ফলে বিদ্যুৎ, গ্যাস, জ্বালানি, সার, চাল, ডাল, আটা, মাছ, মাংস, ডিম ও মরিচসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সব কিছুর মূল্যবৃদ্ধির পাশাপাশি যাতায়াত, বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও শিক্ষার ক্রমবর্ধমান ব্যয়বৃদ্ধির ফলে দেশের জনগণ আজ অতিষ্ট, ক্ষুব্ধ এবং অনিবার্য কারণেই তারা প্রকাশ্যেই প্রতিবাদ জানাচ্ছে। দেশের জনগণ এই দুঃসহ বর্তমান এবং অনিবার্য ধ্বংস থেকে বাঁচতে চায়। তাদের সমস্যা সমাধানে ব্যর্থ ও অক্ষম সরকারের পরিবর্তন চায় বলেই বিরোধী দলের সভা, সমাবেশ, মিছিলে তারা সক্রিয়ভাবে অংশ নিচ্ছে; হামলা, মামলা, নির্যাতন অগ্রাহ্য করতে সাহসী হয়েছে এবং বিজয়ের লড়াইকে বেগবান করছে।
সরকারের নানা ও নিয়ম ও দুর্নীতির চিত্র তুলে ধরে বিএনপির এই বর্ষীয়ান নেতা বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কেটে তাদের ফতুর করে দিয়ে তথাকথিত উন্নয়নের নামে ধোঁকা দেওয়া হচ্ছে। একদিকে কর্মহীন, ভূমিহীন, গৃহহীন মানুষের সংখ্যা দ্রত বাড়ছে আর অন্যদিকে বাড়ছে হাতে গোনা কিছু মানুষের অবৈধ সম্পদ। ঋণ বাড়ছে দেশ, দেশের মানুষ ও দেশের শিল্প-বাণিজ্য প্রতিষ্ঠান ও ব্যাংকের। সরকার, সরকারি দল এবং তাদের ঘনিষ্ঠজনরা দেশের সরকারি, বেসরকারি ব্যাংকগুলো থেকে ক্ষমতাসীনদের সহযোগীতায় ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করছে। সেকেন্ড হোম, বেগম পাড়া, দুবাইয়ে গুলশান-৩ আর সুইসব্যাংকে জমা হচ্ছে এসব লুটের টাকা।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, এমন এক জাতীয় দুর্যোগ মোকাবিলায় যখন দেশের স্বার্থে সবার একযোগে কাজ করা দরকার, তখন অবৈধ ও দুর্নীতিবাজ সরকার সমস্যার সমাধানের পরিবর্তে জনগণের স্বার্থে যারা কথা বলে তাদের উপর লাঠিচার্জ করে, গুলি চালিয়ে, মিথ্যা মামলা দিয়ে গ্রেপ্তার করে, নির্যাতন করে স্বৈরাচারী কায়দায় ক্ষমতায় টিকে থাকার শেষ চেষ্টা করছে। ইতিহাস সাক্ষী এমন চেষ্টা অতীতে যেমন ব্যর্থ হয়েছে এবারেও হতে বাধ্য।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, সেলিমা রহমান।
আরএ/
