আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস ছাড়া টিকতে পারে না: ফখরুল
আওয়ামী লীগ কোনো মতেই সন্ত্রাস ছাড়া টিকতে পারে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ প্রতিপক্ষকে সহ্য করতে পারে না। সন্ত্রাসের মধ্যে দিয়েই তারা প্রতিপক্ষকে দূরে সরিয়ে দিতে চায়। সন্ত্রাস না করলে তারা শাসন করতে পারে না।’
মঙ্গলবার (২২ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জ জেলা বিএনপি সভাপতি ও বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু'র স্ত্রী রোমানা মাহমুদকে দেখতে গিয়ে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল।
তিনি বলেন, ‘আজকের সংকটটা যদি তারা (আওয়ামী লীগ) উপলব্ধি করত যে, বাংলাদেশ একটা গভীর সংকটের মধ্যে পড়েছে। একেবারে খাদের কিনারায় এসে গেছে। একদিকে অর্থনীতি সংকট, অন্যদিকে রাজনৈতিক সংকট। যদি তারা সমাধান না করে তাহলে তো এই দেশের অস্তিত্বই বিলীন হয়ে যাবে।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা এখনো মনে করি সন্ত্রাস, অত্যাচার নির্যাতন বাদ দিয়ে তাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তারা সত্যিকার অর্থেই দেশে একটা অন্তর্বতীকালীন কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করে একটা সুষ্ঠু নির্বাচনের ব্যবস্থা করবে। অন্যথায় কোনো মতেই এই সমস্যা সমাধান সম্ভব না।’
এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা রাজনীতিবিদরা সবসময় আশাবাদী। আশাবাদী হতে হয়; জনগণের সামনে আশার সঞ্চার করতে হয়। আমরা এখনো আশা করি। আমি আওয়ামী লীগকে চিনি বহু আগে থেকে। পাকিস্তান সৃষ্টি হওয়ার পর থেকে আওয়ামী লীগকে চিনি। তারপরও আমরা মনে করি আওয়ামী লীগ একটা রাজনৈতিক দল; তাদের একটা পুরনো ঐতিহ্য আছে। আন্দোলন সংগ্রামে ঐতিহ্য আছে। তাদের কাছ থেকে এই দেশের মানুষ অবশ্যই প্রত্যাশা করেছিল গণতন্ত্রকে একটা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবে। কিন্তু উল্টোটা করেছে। যখনেই ক্ষমতায় এসেছে গণতন্ত্রকে শেষ করে দিয়েছে। তাদের মধ্যে রাজা রাজা ভাব আছে; আর বাকি সব মানুষ প্রজা। এই ধারণা থেকেই গণতন্ত্রের কালচার ধ্বংস করে ফেলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘আমার ভাবতে খুব কষ্ট হয়; আমরা বাংলাদেশের মানুষ ৭১ সালে গণতন্ত্রের জন্যই লড়াই করলাম। অথচ উদ্ভুত ঘটনা ৫০ বছর ধরে আওয়ামী লীগ যখনেই সুযোগ পেয়েছে গণতন্ত্রকে ধ্বংস করে দিয়েছে। এর জন্যই আমরা বলছি আশাবাদী; তাদের মধ্যে শুভ বুদ্ধির উদয় হবে। ভয়ঙ্কর ভাবে হুংকার দিয়ে কথাবার্তা যে বলে তাতে বোঝা যায় ‘সন্ত্রাসী’ ভাব। এই ভাব নিয়ে তো দেশে সুষ্ঠুভাবে গণতন্ত্র পরিচালিত করা যায় না। সুষ্ঠুভাবে দেশ পরিচালনা করা যায় না। কোনো সমাজ তৈরি হচ্ছে; চারদিকে তাকালেই চুরি-চোর, গুন্ডামি-মারামারি। এত কিছু করছেন; গুলি করে একজন সাধান দিনমজুরকে নাড়িভুরি বের করে দিচ্ছেন আর আপনাদের সামনে দিয়ে জঙ্গি উদাও হয়ে যাচ্ছে। গর্ভনেন্সকে কোথায় নিয়ে আসা হয়েছে? তাই এখনো তারা চাইলে অন্তর্বতীকালিন সরকারের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে পারে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ দেশ ও জাতিকে বড় সংকটে ফেলেছে। এটা একটা ক্রিটিক্যাল টাইম মুভমেন্ট; নির্বাচন যদি টিক মত না হয়। জনপ্রতিনিধি যদি সঠিকভাবে নির্বাচিত না হয় তাহলে এই দেশ কীভাবে চলবে? আমাদের পার্শ্ববর্তী দেশগুলোতে দেখুন; ভারতে কি কম সমস্যা আছে; সেখানে নির্বাচন হচ্ছে এবং সকল দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। নেপালে বিপরীতধর্মী দলগুলোও নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সবাই নির্বাচনে যাচ্ছে, নির্বাচন প্রক্রিয়াতে সবার বিশ্বাস-আস্থা আছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকেই সিরাজগঞ্জে একটা ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করা হয়েছে। মূল টার্গেট হচ্ছে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু এবং তার স্ত্রী রুমানা আহমেদ। ২০০৮ সালে নির্বাচনে ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু অংশগ্রহণ করতে পারেননি।
সেই নির্বাচনে অংশ নিয়ে বিজয়ী হয়েছেন রুমানা আহমেদ। ফলে তাদের প্রতি প্রতিরোধ প্রতিহিংসা অব্যাহত রেখেছে। প্রতি মুহূর্তে তাদেরকে অত্যাচার-নির্যাতন করছে। কিন্তু সেখানে বিএনপির যারা নেতা-কর্মী তারা এত বেশি সাহসী ও উজ্জীবিত তারা কখনো ছেড়ে দেয় না, কর্মসূচি পালন করে যাচ্ছেন।
এমএইচ/এমএমএ/