‘পদত্যাগ করুন, দেশের মানুষ মুক্তি পাক’
সরকারকে অনুরোধ জানিয়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আপনারা ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করে যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন তত তাড়াতাড়ি এ দেশের মানুষ মুক্তি পাবে।
সোমবার (২১ নভেম্বর) ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘অর্পণ বাংলাদেশ’ এর উদ্যোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের জন্মদিন উপলক্ষে এক আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।
দুদু বলেন, আমার কাছে মনে হয় না এই সরকারের সময় খুব বেশিদিন আছে। যদি ভালোই ভালোই সম্মানের সঙ্গে এই সরকার চলে যায় তাহলে ভালো। তবে তাদের একটাই পথ আছে, পদত্যাগ করা, পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া। নির্বাচন কমিশন পুনরায় গঠন করা। আগে থেকেই যদি এই কাজটা করে তাহলে সম্মানজনক প্রস্থান হবে। আমরা কাউকে অসম্মান করতে চাই না। কিন্তু সরকার সম্মানিতভাবে না অসম্মানিতভাবে যাবে এটা তাদের চিন্তাভাবনা করা উচিত।
তিনি বলেন, এই সরকারকে যেতেই হবে। এটা মুক্তিযুদ্ধের দেশ, এক সাগর রক্তের বিনিময়ে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। ৩০ লাখ শহীদের দেশ। এখানে প্রতারণা করে গুন্ডামি করে ক্ষমতায় থাকা যাবে এটা ভাবা ঠিক হবে না।
সাবেক এই সংসদ সদস্য বলেন, পৃথিবীর এমন কোনো দেশ নাই যেখানে বিএনপির লোক নাই। সব জায়গায়ই তারেক রহমানের জন্মদিন সাধারণভাবে পালন করা হচ্ছে। এটা তারেক রহমানের নির্দেশ। এর কারণ হলো দেশের মানুষ ভালো নাই। গত ৫০ থেকে ৫২ বছরের মধ্যে এত খারাপ অবস্থায় কখনো এ দেশের মানুষ ছিল না। একমাত্র দুর্নীতিগ্রস্ত সরকারের বিশেষ সুবিধাভোগী ছাড়া শতকরা ৯৯ ভাগ মানুষ কষ্টে আছে। অর্থ সংকটে, নিরাপত্তা সংকটে, শিক্ষা সংকটে আছে মানুষ।
তিনি বলেন, দেশের মানুষ শুধু যে খাবার সংকটে আছে তা নয়। নিরাপত্তা সংকটেও আছে। বাইরে বের হলে ঘরে ফিরতে পারবে কি না এর কোনো নিশ্চয়তা নাই। শিক্ষা সংকটের কথা বলেছি এই কারণে যে মা-বাবারা তাদের সন্তানদের যেভাবে শিক্ষিত করে তুলতে চান সেই পরিস্থিতি এখন নেই। দেশে কাগজের সংকট, শিক্ষা উপকরণের সংকট, কৃষি উপকরণের সংকট, উৎপাদিত দ্রব্যমূল্যের সংকট। শ্রমিকদের মিল কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, তাদের বেতন দিচ্ছে না ছাঁটাই করছে। যারা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী তাদের অবস্থাও ভালো না। এমন একটা পরিস্থিতিতে দেশ নায়ক তারেক রহমানের জন্মদিন পালন করা ঠিক হবে না বলেই তিনি জাঁকজমকভাবে করতে নিষেধ করেছেন। যার জনপ্রিয়তা খালেদা জিয়ার মতোই আকাশচুম্বী। সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হলে হয় বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী হতেন। আর না হলে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হতেন। এটাই বাস্তবতা। আর আওয়ামী লীগের ভাগ্যে ১০টি আসন জুটত এটা ভাবাও কঠিন।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, শেখ হাসিনা যদি সরকারের আসনে না থাকত, পার্লামেন্ট যদি ভেঙে দেওয়া হতো আর এই সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন না থাকে তাহলে এদের পরিণতি কী হবে বলা মুশকিল। কারণ তারা নিজেরাই বলে তারা যদি ক্ষমতায় না থাকতে পারে তাহলে তারা বাংলাদেশে থাকতে পারবে না।
তিনি বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মুনতাসির মামুন তিনিও টের পেয়েছেন আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় না থাকলে আওয়ামী লীগের আশ্রিত তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরাও এ দেশে থাকতে পারবে না। কেন থাকতে পারবে না? বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ছিলেন, আওয়ামী লীগ ছিল। এখন এ প্রশ্ন উঠছে কেন? এসব তথাকথিত বুদ্ধিজীবীরা এত অপকর্ম করেছে যে তারা বুঝতে পেরেছে তাদের পায়ের নিচে মাটি নাই। আর পায়ের নিচে মাটি না থাকলে থাকবেন কেমনে নিচে নেমে যাবেন তো। এটাই বাস্তবতা।
তিনি আরও বলেন, তারেক রহমান স্বাধীন, গণতন্ত্রের বাংলাদেশ চেয়েছিলেন। এটা কি তার অপরাধ? তার বাবা স্বাধীনতার ঘোষক। এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাষ্ট্রপতি। রণাঙ্গনের মুক্তিযোদ্ধা। তার মা এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী এবং তিনবারের প্রধানমন্ত্রী। তার বিরুদ্ধে এত অপপ্রচার করা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতার সঙ্গে কোনো মিল নেই। তারেক রহমান এ দেশের মানুষের হৃদয়ে আছেন।
এমএইচ/এসজি