নয়নকে সরাসরি গুলি করা হয়েছে: মির্জা ফখরুল
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র ফেরানোর আন্দোলনে তারেক রহমানের নেতৃত্ব ‘অপরিহার্য’। রবিবার (২০ নভেম্বর) সকালে নয়া পল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলে তিনি এই কথা বলেন।
দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ৫৮তম জন্মদিন উপলক্ষে বিএনপির উদ্যোগে নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। দুপুরে গুলশানে চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
মির্জা ফখরুল বলেন, আমরা লক্ষ্য করেছি আমাদের ৭টি বিভাগীয় সমাবেশের মধ্য দিয়ে মানুষের যে স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রহণ, আবেগ, কষ্ট করে সামনে এগিয়ে আসা, প্রাণ দেওয়া- এসব ঘটনা থেকে বোঝা যায়, তারেক রহমান আমাদের জন্য কতটা অপরিহার্য।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বিনা কারণে তাকে সাজা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হত্যা করা হচ্ছে, গুম করা হচ্ছে। তারপরেও দেখেন মানুষের স্বাধীনতার জন্যে, মুক্তির জন্যে কতটা আবেগ, কতটা আকুতি। আমাদের সামনে বিকল্প কোনো রাস্তা নেই। এই লড়াইয়ে, এই সংগ্রামে আমাদের জয়ী হতে হবে- কোনো বিকল্প নেই। আপনাদের কাছে অনুরোধ করব, সবাই ঐক্যবদ্ধ হোন, ঐক্যবদ্ধ হয়ে জীবন বাজী রেখে এই সংগ্রামে নেমে পড়েন সবাই।
তারেক রহমানের দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজকের এই দিন আমাদের কাছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের নেতা দীর্ঘ জীবন, সুস্বাস্থ্য ও একইসঙ্গে তিনি দেশে ফিরে এসে নেতৃত্ব দিতে পারেন এজন্য আমরা দোয়া চাই, তার নেতৃত্বে আমরা যেন বাংলাদেশকে দ্বিতীয়বারের মতো স্বাধীন করতে পারি।
ব্রাহ্মণবাড়ীয়ার বাঞ্ছারামপুরের সোনারামপুর ইউনিয়ন ছাত্র দলের নয়ন মিয়ার মৃত্যুতে গভীর শোক ও শ্রদ্ধা জানান তিনি। তিনি বলেন, গতকাল তাকে আহতাবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। সরাসরি গুলিতে তার পেটের সমস্ত নাড়ি-ভুঁড়ি বেরিয়ে গেছে। আমি ডা. রফিকুল ইসলামের সঙ্গে গতকাল কথা বললাম। খুব কাছে থেকে তাকে গুলি করা হয়েছে।
ছোট খাটো বিষয় নিয়ে নিজেদের মধ্যে সংঘাত সৃষ্টি না করতে দলের নেতা-কর্মীদের অনুরোধ করেন মির্জা ফখরুল। তিনি বলেন, ‘খুব কষ্ট হয় এদিকে আমার ভাইয়ের বুলেটবিদ্ধ মৃতদেহ (ছাত্র দলের নেতা নয়ন) পড়ে আছে মর্গের মধ্যে। আর আপনারা কমিটির জন্য এখানে হামলা করেন। দিস ইজ টু মাচ। এটা আমি কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না। আমি অনুরোধ করব এখানে রিজভী সাহেব আছেন। তাদের নাম ঠিকানা বের করে অবিলম্বে তাদের দল থেকে বহিষ্কার করার সমস্ত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
সকাল সাড়ে ৮টায় নয়া পল্টনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের এক অনুষ্ঠানে অংশ নিতে আসা ভোলার চরফ্যাশনের কমিটি নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। পরে নেতাদের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে। নয়া পল্টনে কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ মাহফিলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, আবদুস সালাম, জয়নাল আবেদীন (ভিপি জয়নাল), আব্দুল কুদ্দুস, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, কেন্দ্রীয় নেতা ফজলুল হক মিলন, আবদুল সামাদ আজাদ, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, মীর সরফত আলী সপু, এবিএম মোশাররফ হোসেন, রিয়াজুল ইসলাম রিজু, এম এ মালেক, তাইফুল ইসলাম টিপু, মোস্তাফিজুর রহমান, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল, স্বেচ্ছাসেবক দলের রাজীব আহসান, ইয়াসীন আলী, উলামা দলের শাহ নেছারুল হক, নজরুল ইসলাম তালুকদারসহ কেন্দ্রীয় ও অঙ্গসংগঠনের নেতারা অংশ নেন।
এসএন