প্রতিটি আঘাতের জবাব দেওয়া হবে: রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, বিএনপির গণসমাবেশ ঘিরে নারকীয় তাণ্ডব চালাচ্ছে সরকার। কিন্তু নিউটনের তৃতীয় সূত্র মনে রাখবেন। প্রতিটি আঘাতের সমান ও বিপরীত জবাব দেওয়া হবে। কাউকে গ্রেপ্তার করে বিএনপির আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। তারা সবাই আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে বিএনপির মহাসমাবেশ সফল করবে।
বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মুন্সিগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে আয়োজিত মানববন্ধনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন বলেন খেলা হবে। এটাতো ফিউচার টেনসে বলেছে, প্রেজেন্ট টেনসে বলবে না খেলা চলছে। আপনি কামরুজ্জামান রতনকে গ্রেপ্তার করেছেন, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছেন। এটা কী খেলার অংশ না? সারা দেশে সমাবেশ যাতে না হয় তার জন্য অনেকেই গ্রেপ্তার করেছে। এটা কী খেলার অংশ? বিএনপির সমাবেশের ২ দিন আগে বাস মালিক ধর্মঘট ডাকে এটাও তো আপনার খেলার অংশ। কারণ আপনার নির্দেশ ছাড়া এই বাস মালিক সমিতি ধর্মঘট ডাকার কথা না। বিএনপির সমাবেশ শেষে তাদের ধর্মঘট ও শেষ হয় এটা তো ওবায়দুল কাদের ও শেখ হাসিনার খেলার অংশ।
তিনি বলেন, খেলা দেখাচ্ছে জাতীয় অর্থনীতি নিয়ে। দেশের মানুষের আয় বেড়েছে ২১৩৪ ডলার। আবার প্রধানমন্ত্রী একবার বলছে দুর্ভিক্ষ হবে আবার বলছে হবে না। এই যে অনিশ্চয়তার মধ্যে প্রধানমন্ত্রী। মানুষের এত আয় বাড়লে দুর্ভিক্ষ হবে কেন? কিন্তু দুর্ভিক্ষ চলছে। সরকারি চাল ৩০ টাকা কেজি যে ট্রাকগুলোতে দেবে সেই ট্রাকগুলোর পেছনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মানুষ দাঁড়িয়ে থাকছে চাউলের জন্য। এটাই তো দুর্ভিক্ষের আলামত।
রিজভী বলেন, আওয়ামী লীগ বলে রিজার্ভে নাকি এখনো ৩৫ মিলিয়ন ডলার আছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে ২৪ মিলিয়ন ডলার। হঠাৎ করে কমে গেল কেন? বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর যেটা বলবেন সেটা? কিন্তু বাতাসে অনেক কথা বেরিয়ে যাচ্ছে। প্রকৃত রিজার্ভ তার চেয়েও কম। রাজকোষ শূন্য অবস্থায় এসে পড়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ কত লুটপাট করেছে যে আজ খেলাপি ঋণ ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা। আর বিএনপি যখন ক্ষমতা ছাড়ে তখন ঋণ খেলাপ ছিল শুধু ৪ হাজার কয়েকশো কোটি টাকা। এই ১ লাখ ৩৪ হাজার কোটি টাকা ঋণ খেলাপি হয়েছে এই টাকা কে নিয়েছে। দেশের ঋণ খেলাপি কে কে তার জন্য একটা তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। যারা যারা ঋণ খেলাপি তারাই সেই কমিটির সদস্য।
রিজভী বলেন, আমাদের নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে বাধা দিচ্ছেন, গ্রেপ্তার করছেন, মারধর করছেন। নিউটনের তৃতীয় সূত্র হলো আপনি যেভাবে আঘাত করবেন তার বিপরীত সমান প্রতিঘাত হবে। যে অন্যায় করছেন বিএনপির সঙ্গে, হত্যা নির্যাতন গ্রেপ্তার করছেন। খুলনা বরিশাল বিএনপির বড় বড় সমাবেশগুলোর আগে যেভাবে বিএনপি নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করছেন রক্তাক্ত করছেন সমানভাবে এর প্রতিঘাত জনগণকে সঙ্গে নিয়ে দেওয়া হবে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, কামরুজ্জামান রতনকে গ্রেপ্তার করেছে যাতে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশে লোকজন কম হয়। কিন্তু এটা আপনাদের ভুল পলিসি। কামরুজ্জামান রতনকে গ্রেপ্তার করার কারণে মুন্সীগঞ্জের নেতা-কর্মীরা জনগণ আরও ঐক্যবদ্ধ হয়ে ১০ ডিসেম্বর সমাবেশকে সাফল্যমণ্ডিত করবে। তিনি অবিলম্বে কামরুজ্জামান রতনসহ গ্রেপ্তারকৃত নেতা-কর্মীদের নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন।
জেলা বিএনপির সদস্য সচিব কামরুজ্জামান রতনের মুক্তি দাবিতে এই মানববন্ধন হয়। মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য শাহজাহান খানের সভাপতিত্বে ও আবদুল কুদ্দুস ধীরেনের পরিচালনায় বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক মীর সরফত আলী সপু, সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আ ক ম মোজাম্মেল হক, আলী আজগর রিপন মল্লিক, শহীদুল ইসলাম শহীদ, যুবদলের সোহেল আহমদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের আওলাদ হোসেন উজ্জ্বল সহ মুন্সীগঞ্জ জেলার বিভিন্ন থানা ও ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকরা। এ ছাড়া মুন্সীগঞ্জ জেলা বিএনপির সদস্য প্রকৌশলী মো. মাহবুব আলম, মহিউদ্দিন, স্বেচ্ছাসেবক দলের ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, শাহ আলম, এসএম জাহাঙ্গীরসহ অসংখ্য নেতা-কর্মী উপস্থিত ছিলেন।
এসএন