‘সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরব না’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘৭ নভেম্বর দিনটি আমাদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ দিন। এই দিনটিতে আমরা দ্বিতীয়বার স্বাধীনতাকে ফিরিয়ে এনেছিলাম। ৭ নভেম্বর সিপাহিদের গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের ঘোষক জিয়াউর রহমানকে বন্দিদশা থেকে বের করে নিয়ে এসে নতুন এক ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন। সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ নির্মাণে নতুন অধ্যায় সূচনা হয়েছিল।’
তিনি বলেন, ‘জিয়াউর রহমান সমগ্র বিভক্ত বাংলাদেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। তিনি মুক্ত অর্থনীতি নিয়ে এসেছিলেন। একদলীয় শাসক ব্যবস্থা থেকে বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে এনেছিলেন। দেশে বাকস্বাধীনতা, সংগঠনের স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। তিনি অল্প সময়ের মধ্যেই সমগ্র জাতিকে একটি নতুন স্বপ্ন দেখিয়েছিলেন।’
সোমবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল। জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন করে বিএনপি।
তিনি বলেন, ‘দুর্ভাগ্য আমাদের বাংলাদেশকে পরাধীন রাষ্ট্রে পরিণত করতে যে শক্ররা ৭ নভেম্বরের আগে জিয়াউর রহমানকে গৃহবন্দী করে রেখেছিল তারা ১৯৮১ সালের ৩১ মে তাকে হত্যা করেছিল। কিন্তু শহীদ জিয়ার দর্শন-আদর্শ এবং বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদের ভিত্তিতে গঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থা সেটা ধ্বংস করতে পারেনি। সেই আদর্শ সামনে নিয়ে এসেছেন আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়া।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে আজকে আওয়ামী লীগের যে সরকার জনগণের অধিকারগুলোকে কেড়ে নিয়ে, স্টিম রোলার চালিয়ে হত্যা-খুন-গুম করে, অসংখ্য নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে আবার বাংলাদেশকে সেই অন্ধকারের দিকে নিয়ে যেতে চায়। এ থেকে মুক্ত করার জন্য এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন জিয়াউর রহমান ও খালেদা জিয়ার ছেলে তারেক রহমান। এজন্যই ৭ নভেম্বর দেশের মানুষের কাছে স্বাধীনতা রক্ষা করার দিন। সেই স্বাধীনতার জন্য মানুষ পায়ে হেঁটে আমাদের সমাবেশগুলোতে যোগ দিচ্ছেন। তাদের একটাই দাবি, সেই দাবি হচ্ছে শেখ হাসিনা তুই কবে যাবি। এক দফা এক দাবি শেখ হাসিনার পদত্যাগ। পদত্যাগ করুন, সংসদ বিলুপ্ত করে নির্দলীয় সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করুন। নতুন নির্বাচন কমিশনের অধীনে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করুন।’
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আমরা অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছি। গ্রেপ্তার হচ্ছেন, জেলে যাচ্ছেন, নিহত হচ্ছেন। আমাদের আরও ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। গণতন্ত্রকে পেতে হলে, স্বাধীনতাকে রক্ষা করতে হলে ও অধিকার ফিরে পেতে ত্যাগ স্বীকারের মধ্য দিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে হবে। পতাকাকে তুলে ধরতে হবে। তাই আসুন ৭ নভেম্বর এই দিনটিতে আমরা শপথ করি, গণতন্ত্র ও অধিকার রক্ষায় এই সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরে যাব না।’
এমএইচ/এসজি