সরকার দেশের অর্থনীতি ঝাঁঝরা করে দিয়েছে: মির্জা ফখরুল
সরকার দেশের অর্থনীতিকে ‘ঝাঁঝরা’ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। ‘রিজার্ভের টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি’- প্রধানমন্ত্রীর এ বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, রিজার্ভের টাকা চিবিয়ে খাননি, গিলে ফেলেছেন। গোটা দেশের অর্থনীতিটা আপনারা গিলে ফেলেছেন।
শুক্রবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) এক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মির্জা ফখরুল এ মন্তব্য করেন। জাতীয়তাবাদী মুক্তিযোদ্ধা দলের উদ্যোগে ‘সরকারের পদত্যাগ, নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন ও খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
তিনি বলেন, আজকে ওরা খুব কঠিন অবস্থায় পড়েছে। ওই যে বিলিয়ন ডলার রিজার্ভ, তখন বড় বড় কথা বলত- আমাদের সরকারের আমলে রিজার্ভ ৪২ বিলিয়ন ডলার আছে। তো সেই রিজার্ভটা এখন গেল কোথায়? আমি যখন এ কথা বলেছি তখন অবৈধ সরকারের প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত রাগান্বিত হয়েছেন। রাগান্বিত হয়ে বলেছেন, আমরা কি ওটা চিবিয়ে চিবিয়ে খেয়েছি। আমি উত্তরে বলেছি চিবিয়ে তো খান নাই, গিলে খেয়েছেন। গোটা দেশের অর্থনীতিটা আপনারা গিলে খেয়ে ফেলেছেন। এরা (সরকার) সর্বভুক। আজকে দেশকে তারা (সরকার) ঝাঁঝরা করে দিয়েছে। আওয়ামী লীগের হাত থেকে যদি দেশকে সরানো না যায় তাহলে দেশের কোনো অস্তিত্ব থাকবে না।
তত্ত্বাবধায়ক সরকার না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে জানিয়ে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আন্দোলনের কোনো বিকল্প নাই। জাতীয় নির্বাচন তো পরে। আগে একে (সরকার) বিদায় করতে চাই। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের পরিস্কার কথা এই সরকারকে চলে যেতে হবে, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা দিতে হবে, সংসদটাকে বিলুপ্ত করতে হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত না তারা (আওয়ামী লীগ সরকার) পদত্যাগ করছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না সংসদ বিলুপ্ত হচ্ছে, যতক্ষণ পর্যন্ত না তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন হচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত এদেশের মানুষ বসে থাকবে না। তারা লড়াই করবে, সংগ্রাম করবে, আন্দোলন করবে। শান্তিপূর্ণ উপায়ে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থান সৃষ্টি করে জনগণ এদের পরাজিত করবে।
তরুণদের উদ্দেশ্যে মির্জা ফখরুল বলেন, মুক্তিযোদ্ধারা দেশের স্বাধীনতা অর্জন করে দিয়েছে। এখন আপনাদের দায়িত্ব হচ্ছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে, সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানব থেকে দেশকে মুক্ত করবেন। দেশে আবারও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবেন এবং মানুষের অধিকারগুলো ফিরিয়ে নিয়ে আসবেন। আসুন, আমরা গণআন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের অধিকারকে ফিরিয়ে আনি।
মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি ইশতিয়াক আজিজ উলফাতের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক সাদেক আহমেদ খান, জ্যেষ্ঠ সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম মিলনের যৌথ সঞ্চালনায় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য জয়নুল আবদিন ফারুক, ফজলুর রহমান, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, স্বনির্ভর বিষয়ক সম্পাদক শিরিন সুলতানা, মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক মহাসচিব নঈম জাহাঙ্গীর, কেন্দ্রীয় নেতা মুরাদ হোসেন, মোকসেদ আলী মঙ্গলীয়া, আবদুল হালিম, শরীফ হোসেন, খালেদা আখতার, জাতীয়তাবাদী মুক্তিযুদ্ধ প্রজন্মের রায়হান আল মাহমুদ, ইব্রাহিম হোসেন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএইচ/এসজি