আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করেছে: ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা সেই বাংলাদেশকে ফিরে পেতে চাই যেখানে আমরা মুক্তভাবে কথা বলতে পারব, যেখানে আমরা স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে পারব। যেখানে একজন মেরিন ইঞ্জিনিয়ারকে হাঁটতে গিয়ে ছুরিকাঘাতে নিহত হতে হবে না, যেখানে একজন মাকে রাস্তায় চলতে গিয়ে ধর্ষিত হতে হবে না। যেখানে মানুষ তার অধিকার রক্ষায় সভা সমাবেশে যেতে সাঁতার কাটতে হবে না।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আমাকে বলতে হয় যে, ফিরিয়ে দাও আমার বাংলাদেশ। কথা তো এমন ছিল না, কথা ছিল আমি আমার সমস্ত অধিকার প্রতিষ্ঠা করে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তুলব, নতুন স্বপ্ন দেখব। আজকে আওয়ামী লীগ আমাদের সেই স্বপ্নকে ধ্বংস করেছে।’
সোমবার (২৪ অক্টোবর) রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশনের ২৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভার আয়োজন।
লোডশেডিং এর তীব্র সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার এতো দিন বলছে শতভাগ বিদ্যুৎ নিশ্চিত করেছি। উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করা হচ্ছে ২৫ হাজার মেগাওয়াট। প্রয়োজন ১০ হাজার, হাতে থাকার কথা ১৫ হাজার মেগাওয়াট। অথচ কিছুক্ষণ আগে এখানেই দেখলাম লোডশেডিং। বিদ্যুৎ চলে গেল। তাদের উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী খুব স্পষ্ট করে বলেছেন পয়সাই নেই বিদ্যুৎ কোথা থেকে দেব? ব্যবসায়ীদের এক অনুষ্ঠানে উপদেষ্টা অসহায়ভাবে বলেছেন দিনে বিদ্যুৎ দিতে পারব না রাতে বিদ্যুৎ দেব। অথচ তাদের নাকি পয়সার অভাব নেই। ৪২ বিলিয়ন ডলার (রিজার্ভ) আছে তাহলে ওইগুলো গেল কোথায়? এই হচ্ছে তাদের উন্নয়ন, এই হচ্ছে বাংলাদেশ উন্নয়নের রোলমডেল। এই হচ্ছে বাংলাদেশকে বিশ্বের মানুষ অবাক বিস্ময়ে তাকিয়ে দেখে!’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই আওয়ামী লীগ আমাদের রাজনৈতিক কাঠামোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। অনেক ঘাত প্রতিঘাত উপেক্ষা করেও আমরা রাজনৈতিক একটা কাঠামো তৈরি করে ছিলাম ১৯৯১ সালে। একটা গণতান্ত্রিক নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনের মধ্যে দিয়ে সরকার গঠন করা হবে। এই আওয়ামী লীগ সেই ব্যবস্থাকে ধ্বংস করতে ১৭৩ দিন হরতাল করে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠায় আন্দোলন করেছে। তাদের সঙ্গে সেইদিন জাতীয় পার্টি ও জামায়াত ইসলামী। অথচ যখন দেখেছে তাদের খারাপ কাজের ফলে জনগণ আর ভোট দেবে না; তখন তারা তত্ত্বাবধায়ক বিধান বাতিল করে দিয়েছে। এতে সাহায্য করেছে বিচারপতি খায়রুল হক। বিচারবিভাগকে তারা দলীয়করণ করে বিচারবিভাগের স্বাধীনতাকে ধ্বংস করতে শুরু করল। চুরি ছাড়া এদের অর্জন কিছু নেই; যত মেগাপ্রজেক্ট তত চুরি।’
আয়োজক সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনারের সভাপতিত্বে বক্তব্যে রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আব্দুল মঈন খান, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমান উল্লাহ আমান, ডা. সিরাজ উদ্দিন আহমেদ প্রমুখ।
এসএন