পুলিশ সুপারের ‘বেতার বার্তা’ সংবিধানে নেই: বিএনপি
সারা দেশে পুলিশের বিশেষ শাখার নির্দেশনায় বিরোধী নেতা-কর্মী, সমর্থক-শুভাকাঙ্খীদের তথ্য সংগ্রহের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
রাঙামাটি পুলিশ সুপারের ‘বেতার বার্তা’র বিষয়টি তুলে ধরে শুক্রবার (৭ অক্টোবর) এক সংবাদ সম্মেলনে এই প্রশ্ন তুলে বিএনপি।
এক প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব দাবি করেন, ‘শুধু বিরোধী নেতা-কর্মী নয়, সমর্থক ও ডোনারদেরও তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে।’
আদালতে যাবেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখনো এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়নি। এখন দেশের মানুষকে আপনাদের মাধ্যমে জানাচ্ছি।’
‘যেসব অতি উৎসাহী দলবাজ কর্মকর্তা এখতিয়ার বহির্ভূতভাবে সরকারি পদবীর অপব্যবহার করে অত্যন্ত হীন ও নগ্নভাবে এসব অবৈধ কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত দেশের সচেতন নাগরিকরা তাদের অবশ্যই চিহ্নিত করে রাখবে’- বলেন তিনি।
সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদীন বলেন, ‘এই যে সার্কুলারটা দিয়েছে এটা সংবিধান বর্হিভূত কেন? তার কারণ হলো, সভা-সমাবেশ এবং রাজনীতি করার অধিকার প্রতিটি নাগরিকের আছে। সরকারের বিরুদ্ধে যাতে কোনো রকম আন্দোলন না হয়, জনগণ যাতে রুখে দাঁড়াতে না পারে সেজন্য এই সার্কুলার জারি করা হয়েছে। এই সার্কুলার অত্যন্ত বেআইনি।’
তিনি বলেন, ‘এই ধরনের সার্কুলার পুলিশের আইনেও নাই, আমাদের সংবিধানেও না। কোথাও আপনি পাবেন না। অতীতে কোনো সরকারই স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত এই ধরনের সার্কুলার পুলিশের মাধ্যমে ইস্যু করে নাই।’
সুপ্রিম কোর্টের সাবেক অ্যাটর্নি জেনারেল অ্যাডভোকেট এজে মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘পুলিশের এই সার্কুলার অর্থাৎ বেতার বার্তায় তিনটা শব্দ দেখলে আপনারা বুঝতে পারবেন ওদের প্রচেষ্টাটা কী? অর্থ যোগান দাতা, জনবল সংগঠক সহযোগী-এর মানে বিরোধী রাজনৈতিক কর্মীর ডাটাবেজ তৈরি করবে যেন কেউ বিরোধী দল করতে না পারে। এটাই হচ্ছে উদ্দেশ্য। হুইচ ইজ আমাদের ফান্ডামেন্টাল রাইটটা খর্ব করা হচ্ছে।’
‘এটা করার অধিকার কারও নেই। এসব করে জনগণকে ভীত সন্ত্রস্ত করা হচ্ছে। সংবিধান এটা অ্যালাউ করে না।’
বিএনপির আইন বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, ‘এই সার্কুলার সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন, প্রচলিত আইনের পরিপস্থী। মূলত এটা জারি করা হয়েছে অসৎ উদ্দেশ্য নিয়ে। রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী কখনোই বিএনপি বা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নাম উল্লেখ করে কোনো ধরনের সার্কুলার তারা দিতে পারে না।’
তিনি বলেন, ‘সম্পূর্ণ বেআইনি ও আইন বহির্ভূতভাবে তারা এ কাজ করছেন। এই থেকে প্রমাণিত হয় যে, এই রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো কোনো রাষ্ট্রের কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে না। বর্তমান অগণতান্ত্রিক শাসকগোষ্ঠী তথা এক ব্যক্তির নির্দেশে রাবার স্ট্যাম্প হিসেবে রাষ্ট্রীয় পুলিশ বাহিনী কাজ করছে।’
এমএইচ/এসজি