জনগণ চায় না এমন সরকারকে রাখা হবে না: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, 'জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলার চেষ্টা করছে বিএনপি। যুগপৎ কিংবা যে পন্থায় হোক ঐক্য গড়ে তোলা হবে। ভোটাধিকার ফিরিয়ে নিতে দাবি আদায়ে খুব শিগগিরই এই বিষয়ে সুরাহা হবে। জাতীয় ঐক্যের মধ্যে দিয়ে সরকারের পতন নিশ্চিত করা হবে। প্রথমে সরকার পতনের মাধ্যমে নির্বাচন আদায় করা হবে। এরপর আগামীর রাষ্ট্র মেরামতে ঐক্যবদ্ধ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। সবাই মিলে সরকার হটিয়ে জবাবদিহিমূলক সরকার গঠন করা হবে, রাষ্ট্রের অনেক সংস্কার করা প্রয়োজন। সম্মিলিত প্রয়াস প্রয়োজন।'
বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলে। স্বাধীনতা ফোরাম নামে একটি সংগঠন এই স্মরণ সভার আয়োজন করে।
গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, 'একটি দেশ ও জাতি যখন বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়ে তখন দেশের সমগ্র মানুষ ঐক্যবদ্ধ একটি প্রচেষ্টা চালায়। অতীতে যতবার জাতীয় ঐক্য গড়ে উঠেছে সেই জাতীয় ঐক্য কখনো বৃথা যায়নি, জাতীয় ঐক্যের প্রাপ্ত ফসল কার গোলায় গেছে সেটা হচ্ছে বড় কথা। তাই এবার জাতীয় ঐক্যের ফসল যাতে জনগণের গোলায় যায় সেই চিন্তা ভাবনা বিএনপি করছে। ইতিমধ্যে আপনারা জাতীয় ঐক্যের বিষয় শুনেছেন আমিও আমার দলের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করতে চাই যে, একসঙ্গে পথ চলা পাশাপাশি পথ চলা অথবা আলাদা আলাদা মঞ্চে আলাদা আলাদা রাস্তায় আমরা একযোগে কাজ করতে চাই। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টা জনগণের ইচ্ছায় সেটা হতে পারে যুগপৎ। সেটা হতে পারে কখনো কখনো আলাদা আন্দোলন কখনো কখনো একসঙ্গে এক মঞ্চে আন্দোলন। আমরা যদি দেশে একটি অবাধ সুস্থ গ্রহণযোগ্য নির্বাচন এবং ফ্যাসিবাদী সরকারকে গণতান্ত্রিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সরাতে চাই তাহলে ন্যূনতম কর্মসূচির ভিত্তিতেই আমরা যে ধরনের আলোচনা করছি সেটা খুব শিগগিরই অগ্রসর হবে। পাশাপাশি একটি কথা আছে অতীতের যে তিক্ততা যে প্রতারণা সেজন্য জাতীয় রূপরেখায় জাতীয় ঐক্যের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন নিশ্চিত করতে কাজ করা হচ্ছে। আমরা এর মাধ্যমে পরে রাষ্ট্রের গুণগত পরিবর্তন করতে চাই। তাহলে আমরা চূড়ান্ত রায়ের আগেই পারব কিন্তু সাজানো গোছানো নিয়ে যদি মত দেখা দেয় তাহলে সম্ভব নয়।'
তিনি বলেন, স্বৈরাচারেরও লজ্জাবোধ থাকে, কিন্তু আজকের এই লুণ্ঠনকারী সরকার তারা বুক টান করে বলে, যারা ক্ষমতায় থাকে সম্পদ লুণ্ঠনে ব্যস্ত থাকে তাদের চোখে ছানি পড়েছে তারা চোখে কিছু দেখে না। এই সরকার এককভাবে ক্ষমতায় থাকতে তারা যে লুণ্ঠনকারীর ভূমিকায় তাদের পরিণতি কী হবে আমি বলতে পারব না। তবে ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় নৈতিক অবক্ষয়, দাম্ভিকতা, অহংকার ও লুণ্ঠনকারী জনগণকে প্রতারণা করার ফলাফল অত্যন্ত ভয়ানক হয়েছে। এমন ভয়ানক হয়েছে যে মৃত্যুর পরেও মানুষ কাঁদতে ভয় পেয়েছে।
আজকের জঙ্গিবাদের তকমা দেওয়া হয় হত্যা করা হয় কিন্তু দেশে যদি জঙ্গিবাদ থাকে কিংবা দেশগুলোর দিকে তাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সম্মিলিতভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হয়। কাজেই জঙ্গিবাদকে ব্যবহার করে যারা দেশটাকে লুটপাট করছে তাদের বিরুদ্ধেও রুখে দাঁড়ানো একইভাবে ঐক্যবদ্ধ হতে হয়।
প্রশাসনের উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, 'আপনারা যারা প্রশাসনে আছেন এই সরকারের লুটপাটের অংশীদার অথবা কিছু না কিছু পেয়েছেন, তাদের বলব চাকরি যাবে না। এখন থেকে আপনারা সরকারের অবৈধ কাজে যাবেন না। আপনার চাকরির স্বাভাবিক যে দায়িত্ব সেই স্বাভাবিক কাজটা করেন, সরকার রক্ষা করার দায়িত্ব প্রশাসনের পোশাকধারী অপোশাকধারী যেই হোন না কেন, এখনো সময় আছে জনগণের পক্ষে আসেন। আপনাদের চাকরি আপনারাই করবেন, আমরা চাকরি করতে যাব না। কিন্তু যে সরকারকে জনগণ চায় না সেই সরকারকে টিকিয়ে রাখার ক্ষেত্রে যেই হোক তাকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।'
সরকার ক্ষমতায় থাকতে সবরকম চেষ্টা করছে, দেশে-বিদেশে ছুটছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এসএন