রাজপথে প্রত্যেকের হাতে মোটা মোটা লাঠি থাকবে: গয়েশ্বর
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, ‘কোনো বক্তব্যে সরকার যাবে না, বক্তব্যে দেশও স্বাধীন হয়নি। দেশ স্বাধীন হয়েছে যুদ্ধে আর সেই যুদ্ধের নেতৃত্ব ও ঘোষণা দিয়েছিলেন জিয়াউর রহমান।’
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘অশান্তির মা শেখ হাসিনা যেখানে ক্ষমতায় সেখানে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি দিয়ে কিছু হবে না। আজকেও সমাবেশে আসতে বাধা দেওয়া হয়েছে, শেষ পর্যন্ত বাধা দিয়ে কোনো কাজ হয়নি। আগামী দিনে রাজপথে প্রত্যেকের হাতে মোটা মোটা লাঠি থাকবে, কাউকে আঘাত করার জন্য নয় বরং আত্মরক্ষার্থে।তবে পাল্টা আঘাত এলে আঘাত করতে হবে। সাহসিকতার সঙ্গে এগিয়ে যেতে হবে, বিজয় নিশ্চিত। এরা পরাজিত হবে।’
বুধবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীতে এক জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে এই জনসভার আয়োজন করা হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে হামলা করা হচ্ছে, মামলা দেওয়া হচ্ছে, গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। ওরা কারা? তাদের আপনারা বিচারের আওতায় এনে বিচারের মুখোমুখি করবেন কি না সেটা আপনাদের ব্যাপার কিন্তু আপনি আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, আর আপনার নেত্রী শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী, তাই এইসব কার্যক্রমের জন্য জনগণের কাঠগড়ায় আপানাদের বিচার হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমার বাড়িতে কোনো কর্মসূচি ছিল না কিন্তু আমার বাড়ি কেন ভাঙচুর করা হলো? আপনাদের বাড়ি ঘর কিন্তু আমরাও চিনি। আমরাও যদি শুরু করি তাহলে কিন্তু পালানোর জায়গা পাবেন না। ইচ্ছে করলেও কিন্তু পাশের দেশে জায়গা পাবেন না? জেলখানা থেকে বের হয়ে সহকর্মীদের কী বলেছিলেন স্মরণ করেন, সে কথা বলার সময় আসছে। আমরা লড়াই করে দেশ স্বাধীন করেছি, দেশ কারো বাবার একার নয়। জনগণের ভোটের অধিকার ফেরত আনতে আন্দোলন করছি, বিএনপির ক্ষমতার জন্য আন্দোলন নয়, জনগণকে শৃঙ্খলমুক্ত করতেই এই আন্দোলন।’
পুলিশ বাহিনীর উদ্দেশে গয়েশ্বর চন্দ্র বলেন, ‘অনির্বাচিত অবৈধ সরকার বিদেশে টাকা পাচার করছে, বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা করে মায়ের বুক খালি করেছেন এইগুলো হিসাব দেবেন না? হিসেব কিন্তু দিতে হবে। আপনারা শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রেখে নিশ্চিত থাকতে চান… মনে রাখবেন যেমন কর্ম তেমন ফল হবে। জনগণের পক্ষে থাকুন অতীতের অপকর্ম মাফ করে দিলাম। জনগণের আন্দোলনের মুখোমুখি হবেন না। একটা কথা মনে রাখবেন আপনাদের ভুল বুঝানো হয় যে, বিএনপি ক্ষমতায় এলে আপনাদের চাকরি থাকবে না। এটা ভুল ধারণা কারণ আমরা জানি কোনটা ইচ্ছাকৃত কোনটা অনিচ্ছাকৃত। জনগণের পক্ষে আসেন বিপক্ষে যাবেন না। জনগণ আপনাদের পোশাককে ভয় করেন না, সম্মান করেন।’
ইভিএম নিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ইভিএম পদ্ধতি হচ্ছে নির্বাচনের আগে বেশকিছু টাকা লুটপাটের সুযোগ সুবিধা দেওয়া। আমরা এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে নির্বাচন করব না। আমরা নির্বাচন করব যখন নিরপেক্ষ সরকার গঠন হবে, যখন এই সংসদ বিলুপ্ত হবে।
বিএনপির আন্দোলন নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের বক্তব্যের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘২০১৩ ও ২০১৫ সালের আন্দোলন চোখে দেখেননি? মাত্র রিহার্সেল চলছে ফাইনাল খেলায় কর্মীরা নামেননি, এখনোই আন্দোলন করতে পারে না বলে কা কা করেন কেন? মনে রাখবেন কারো রক্ত বৃথা যাবে না, অতীতেও বৃথা যায়নি। রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র এনেছি রক্ত দিয়ে প্রতিষ্ঠিত করব। আমার ভাইকে মরতে হয়েছে, মরতে হয় আমিও মরব রক্তের ঋণ পরিশোধ করব। হাসিনার সব খেলা শেষ, দিনের ভোট রাতে কাটার লোক নেই। শেখ হাসিনাকে ছাড়াই ভোট হবে।’
নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের তীব্র সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘অনির্বাচত সরকার এরা দাম বাড়িয়েছে, এরা দাম কমাবে না। আমাদের প্রধান দায়িত্ব এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামানো। জনগণ আগামী দিন যাদের দায়িত্ব দেবে তারা ক্ষমতায় গিয়ে দাম কমাবে, মৌলিক অধিকারসহ ন্যায় বিচারের পথ নিশ্চিত করবে। এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয়, এদের কাছে দাবি চেয়ে লাভ নেই। জনগণের দাবি এক ফ্যাসিবাদী খুনি লুটেরা সরকারের পদত্যাগ।’
এসএন