‘অবৈধ ক্ষমতা ধরে রাখতে সরকার রক্তপাত ঘটাচ্ছে’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের বক্তব্যের কঠোর সমালোচনা করেছেন বিএনপি সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের বলেছেন আমরা কোনো নির্দেশনা দিইনি সমাবেশে হামলা করার জন্য তার এই কথাতেই প্রমাণিত হয় ওবায়দুল কাদের সাহেবরাই নির্দেশ দিয়েছেন হামলা করার জন্য। না হলে একটা ছাত্রের হাতে চাইনিজ কুড়াল থাকবে কেন? রামদা থাকবে কেন? পাড়ায়-মহল্লায় গ্রাম-গঞ্জে থেকে জাতীয় পর্যায় পর্যন্ত ছাত্রলীগ মানেই হচ্ছে মূর্তিমান আতঙ্কের নাম। এখন মায়েরা তার সন্তানকে ঘুম পাড়াবে ছাত্রলীগের ভয় দেখিয়ে। বলবে বাবা ঘুমিয়ে যা না হয় ছাত্রলীগ আসবে। ছাত্রলীগকে একটা রক্তচোষা ভ্যানপিয়ারে পরিণত করেছেন ওবায়দুল কাদেররা। এদের নাম শুনলেই প্রত্যেকটি জায়গায় আতঙ্কের সৃষ্টি হয়।’
মঙ্গলবার (২০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিএনপির এই মুখপাত্র বলেন, ‘এই যে রক্তপাত তারা (সরকার) করছেন। এই যে রক্তগঙ্গা বইয়ে দিচ্ছেন এটার উদ্দেশ্য হচ্ছে তারা অবৈধ সত্তা নিয়ে যেভাবে টিকে আছেন এই টিকে থাকাটাকে রক্ষা করার জন্যই রাষ্ট্রশক্তিকে অবৈধভাবে দখল করে তারা এই কাজ গুলো করছে। ধারাবাহিকতায় সবচাইতে অমানবিক নারায়ণগঞ্জ জেলাধীন রূপগঞ্জ উপজেলায় আজকে কয়েকদিন ধরে সরকারি দলের যে তাণ্ডব চলছে এটা নজিরবিহীন।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে উগ্রতা, হিংস্রতা এবং বেপরোয়াভাব। আপনারা দেখেছেন যারা এই তাণ্ডব চালাচ্ছে তাদের অধিকাংশই হচ্ছে ছাত্রলীগের নেতারা। উপজেলা ছাত্রলীগের নেতাকে আপনারা দেখেছেন চাইনিজ কুড়াল নিয়ে তার সঙ্গে ছাত্রত্বের কোনো সম্পর্ক নাই।’
বিএনপি এবং ছাত্রদলের যে সকল নেতা-কর্মী যারা মশাল মিছিল করেছে তাদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে হামলা চালানো হয়েছে।রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মাসুদকে না পেয়ে তার বৃদ্ধ মা-বাবাকে এমন কঠিনভাবে প্রহার করা হয়েছে তারা এখন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে হাসপাতালে। এ ছাড়া, সেখানে বিএনপি নেতা-কর্মীদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে লুটপাট করেছে ছাত্রলীগ যুবলীগ। যা দেশের গণমাধ্যমে এসেছে, যোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘দেশব্যাপী তাণ্ডব চলছে। সহিংস রক্তপাতের যে পরিকাঠামো নির্মাণ করেছেন শেখ হাসিনা তাতে আমাদের অনেক নেতা-কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন এবং চোখ অন্ধ হয়ে গেছে স্প্লিন্টারে। সেই সঙ্গে প্রাণ কেড়ে নেওয়া হয়েছে তিনজনের। ভোলাতে দুইজন এবং নারায়ণগঞ্জে একজন।
তিনি বলেন, ‘গতকাল গণমাধ্যমে এসেছে কীভাবে চাইনিজ কুড়াল নিয়ে বিএনপি এবং ছাত্রদলের নেতাদের বাড়িতে গিয়ে নেকরের মত হামলা চালাচ্ছে ছাত্রলীগ এবং যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। রক্ত তৃষ্ণায় তারা কাতর হয়ে গেছে এটাই আমাদের কাছে মনে হচ্ছে। সেই রক্ত তৃষ্ণায় কাতর হয়েই রক্তের ঘ্রাণ নেওয়ার জন্য বিএনপি এবং তার অঙ্গ সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে বাড়িতে হানা দিচ্ছে।’
সংবাদ সম্মলেন উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় নেতা আসাদুল করিম শাহীন, সাইফুল আলম নীরব, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ প্রমুখ।
এমএমএ/