গুলি খাব তবুও রাজপথ ছেড়ে যাব না: মির্জা আব্বাস
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, রাজপথ আমরা আপনাদের হাতে ছেড়ে দেব না। সময় এসে গেছে, রাজপথে আমরাও থাকব। বিএনপি নেতারা, ছাত্র নেতারা, যুবদল নেতারা গুলি খাওয়া শিখে গেছে। সুতরাং ভয়ের কোনো কারণ নেই। বুক পেতে দেব। গুলি খাব কিন্তু রাজপথ ছেড়ে যাব না। সরকারের পতন না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকব।
সোমবার (১২ সেপ্টেম্বর) বিকালে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনের সড়কে আয়োজিত এক সমাবেশে এসব কথা বলেন তিনি।
মির্জা আব্বাস বলেন, বিএনপির এই যে মিছিল শুরু হয়েছে তা আর শেষ হবে না। আওয়ামী লীগকে ক্ষমতাচ্যুত করার আগ পর্যন্ত বিএনপির এই মিছিল শেষ হবে না।
তিনি বলেন, এই যে মামলা মোকাদ্দামা, এই যে গোলাগুলি এত সহজে আমরা ছেড়ে দেব না। এরশাদের সময় আন্দোলন হয়েছে তখন তো গোলাগুলি হয়নি। ওটা ছিল এক প্রক্রিয়া। এখন গোলাগুলি হচ্ছে সুতরাং আমরাও ভিন্ন প্রক্রিয়া নেব। আন্দোলনের ভিন্ন কায়দা হবে। আন্দোলন সব সময় এক রকম চলে না, অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমরা না দেখলেও সরকার মনে মনে প্রচণ্ড রকম ভয় পেয়েছে। ভয় পাওয়ার কারণে দিকবিদিক জ্ঞান শূন্য হয়ে পড়েছে।
আওয়ামী লীগের উদ্দেশ্যে মির্জা আব্বাস বলেন, আমরা ঢাকার প্রতিটা অলিতে গলিতে মিছিল মিটিং করব। আপনাদের ঠেকানোর কোনো ক্ষমতা থাকবে না। দেখব আপনাদের পুলিশ কজন আছে আর আমাদের কর্মী কজন আছে। প্রতিটা গলিতে মিছিল হবে, প্রতিটা গলিতে মিটিং হবে। যদি কেউ গুলি করতে চায় তাকেও আমরা ছাড় দিয়ে কথা বলব না।
তিনি বলেন, শাওন, রহিম ও নুরে আলম আত্মাহুতি দিয়েছে। এর আগে স্বাধীনতার জন্য বহু মানুষ আত্মহুতি দিয়েছে। আমরাও দেশের স্বাধীনতার সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য আত্মহুতি দেওয়ার জন্য প্রস্তুত। যেদিন সময় আসবে সেদিন ইনশাআল্লাহ সামনে থাকব। কদিন আর বাঁচব। কিন্তু আমাদের সন্তানদের জন্য একটি নিরাপদ ভবিষ্যৎ রেখে যেতে চাই। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে এই হায়ানা সরকারের হাতে রেখে যাওয়া যাবে না।
ভারত সফরে বিএনপি খুশি হয়নি আওয়ামী লীগ নেতাদের এমন বক্তব্যের জবাবে মির্জা আব্বাস বলেন, খুশি হব কেন? আপনারা আঁচল ভরে নিয়ে গেলেন আসলেন খালি হাতে। তিস্তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি, ফেনী নদী নিয়ে আলাপ করলেন কিন্তু তিস্তা নিয়ে আলাপ হলো না। তাহলে আপনারা কী নিয়ে আলাপ করেছেন? পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্দুল মোমেন সাহেব আগেই তো গোমর ফাঁস করে দিয়েছে। ভারত সরকারের সহায়তা ছাড়া দেশে আওয়ামী লীগ টিকে থাকতে পারবে না। আর আমরা বলতে চাই দেশের জনগণের সহায়তা ছাড়া কোনো দল ক্ষমতায় আসতে পারবে না।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে ভোট দেবে না, এটা আওয়ামী লীগ খুব ভালো করে জানে। এজন্য তারা ইভিএমের মাধ্যমে ভোট করতে চায়। ইভিএমে কোথায় চাপলে কী হয় এটা একটি বাচ্চা পোলাপানও জানে। সুতরাং ইভিএম খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন না। এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হওয়ার প্রশ্নই উঠে না। এ সরকারের অধীনে যে নির্বাচন কমিশন আমরা তাকেও মানি না। নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন কমিশন হবে। তার অধীনে নির্বাচন হবে এবং সেই নির্বাচন আমরা অংশগ্রহণ করব ইনশাআল্লাহ।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সামনের সড়কে বিএনপি মহানগর দক্ষিণ জোন-৩, শাহবাগ-রমনা থানার উদ্যোগে জ্বালানি তেল ও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং পুলিশের গুলিতে ভোলায় নুরে আলম, আব্দুর রহিম ও নারায়ণগঞ্জে শাওন প্রধান হত্যার প্রতিবাদে এই সমাবেশ হয়। বিভিন্ন ওয়ার্ড থেকে নেতা-কর্মীরা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মিছিল নিয়ে এই সমাবেশে অংশ নেয়।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক লিটন মাহমুদের সভাপতিত্বে এবং এম এম হান্নানের সঞ্চালনায় সমাবেশে বক্তব্য রাখেন ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানুল্লাহ আমান, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম, গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলন, বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি