রাজপথে ফয়সালার প্রস্তুতি নিতে মোশাররফের আহ্বান
রাজপথে ফয়সালা করতে সবাইকে প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, ‘এই সরকারের হাত থেকে দেশের জনগণকে রক্ষা করতে হবে। নির্বাচন নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলছেন। কিন্তু আমরা দেখেছি এই সরকারের আমলে কোনো দিন নির্বাচন সুষ্ঠু হয় নাই, সুষ্ঠু হবে না। তাই এই সরকারের অধীনে নির্বাচন প্রশ্নই আসে না। কোনো স্বৈরাচারী সরকার আপসে ক্ষমতা ছেড়ে যায়নি। তাই ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা ফ্যাসিস্ট ও ভোটবিহীন আওয়ামী লীগ সরকারকে হটাতে হবে। অবশ্যই রাজপথে আন্দোলনের মাধ্যমে হটাতে হবে। সেজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে।’
শুক্রবার (৯ সেপ্টেম্বর) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে মহিলা দলের ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত র্যালিতে অংশ নেওয়ার আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মহিলা দলের র্যালিটি নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে থেকে শুরু করে নাইটেঙ্গেল মোড় হয়ে ইউটার্ন নিয়ে পলওয়েল মার্কেট সামনে দিয়ে ফকিরাপুল মোড় হয়ে ইউটার্ন নিয়ে পুনরায় দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে এসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও পুলিশের বাধার মুখে স্কাউট ভবনের সামনেই পণ্ড হয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফর নিয়ে বিএনপির এই প্রবীণ নেতা বলেন, ‘তিনি (প্রধানমন্ত্রী) ভারত সফরে গিয়েছেন। কিন্তু কী নিয়ে এসেছেন? প্রত্যেকবার তিনি শুধু দিয়েই এসেছেন, কিছু নিয়ে এসেছেন বলে দাবি করতে পারেননি। যাওয়ার আগে অনেক কথা বলতে শুনেছি, অনেক চুক্তি হবে, কিন্তু কোনো চুক্তি হয় নাই। শুধু সমঝোতা স্মারক হয়েছে, যার অর্থ হচ্ছে ইচ্ছাপ্রকাশ করা। ওইটা ইচ্ছাপ্রকাশ করছি, এটা ইচ্ছাপ্রকাশ করছি। আসলে চুক্তি ছাড়া ইচ্ছাপ্রকাশের কোনো মূল্য নেই। রোহিঙ্গারা দেশের জন্য বোঝা হয়ে রয়েছে অথচ রোহিঙ্গা ইস্যুতে কোনো আলাপ-আলোচনা হয় নাই। সীমান্তে প্রতিনিয়ত হত্যা, মাদকদ্রব্য দেশে নিয়ে আসা হচ্ছে। এগুলো নিয়ে কথা হয় নাই। দেশের জনগণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট কোনো আলোচনা হয় নাই। আমরা জানি না তার এই সফরের অন্য কোনো উদ্দেশ্য আছে কি না। দেশের মানুষ জানতে চায় দেশের প্রধানমন্ত্রী ভারতে গিয়ে কী নিয়ে এসেছেন।’
খন্দকার মোশাররফ বলেন, ‘গণতন্ত্রের জন্য আজীবন লড়াই করে যাওয়া নেত্রী খালেদা জিয়াকে বানোয়াট মামলায় ফরমায়েশি রায়ে অন্তরীণ করে রাখা হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ কিন্তু বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য যেতে দিচ্ছে এই অনির্বাচিত সরকার। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানও ঠিক একইভাবে ফরমায়েশি রায়ে সাজাপ্রাপ্ত হয়ে বিদেশে থাকতে বাধ্য হচ্ছেন। তিনি দেশে ফিরে আসতে পারছেন না।’
তিনি আরও বলেন, ‘দেশে আজ গণতন্ত্র নেই, মানুষের অধিকার নেই। দেশের অর্থনীতি সম্পূর্ণ বিধ্বস্ত। সিন্ডিকেটের কারণে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হচ্ছে এই সরকার। অবৈধ ও ভোটবিহীন সরকার না হলে জ্বালানি তেলসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করতে ব্যর্থ হতো না। ব্যর্থ হচ্ছে কারণ এই সরকার জনগণের সরকার নয়। যারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে তারা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিতে পারবে না। যারা লুটপাট করে দেশের অর্থনীতিকে খাদের কিনারায় নিয়ে গেছেন তারা অর্থনীতি পুনরুদ্ধার করতে পারবে না।’
মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাসের সভাপতিত্বে বক্তব্যে রাখেন সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হেলেন জেরিন খানসহ মহিলা নেত্রী মোছা. নায়েবা ইউসুফ, মোছা. রুনা লায়লা রুনা, মোছা. রুমা আক্তার, মোছা. নাসিমা আক্তার কেয়া প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি