'আওয়ামী লীগ এখন লাশ ছিনতাইকারীর দলে পরিণত হয়েছে'
ভোট ডাকাতি, লুটপাট, ব্যাংক ডাকাতির পর আওয়ামী লীগ সরকার এখন লাশ ছিনতাইকারী দলে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
বৃহস্পতিবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে ১০টার দিকে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
রিজভী বলেন, ১ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার নারায়ণগঞ্জে বিএনপির ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালনকালে পরিকল্পিতভাবে রাইফেল দিয়ে যুবদল নেতা মো. শাওনকে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। যুবদলের নেতাকর্মীদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নিয়ে গুলিবিদ্ধ হয়ে শহীদ হলেও এখন আওয়ামী লীগ সেই লাশ রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ছিনতাইয়ের চেষ্টা করছে। প্রশাসন লাশ জিম্মি করে রেখেছে, জানাজা পর্যন্ত পড়তে দিচ্ছে না। এটি নজীরবিহীন, পৈশাচিক ও হৃদয়বিদারক ঘটনা। এত বড় হত্যাকাণ্ড ঢাকার জন্য আওয়ামী লীগের এমপি-মন্ত্রীরা জঘন্য মিথ্যাচারে লিপ্ত হয়েছে। আমি এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং অবিলম্বে তার লাশ হস্তান্তরের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি বলেন, মিথ্যা বলতে বলতে আওয়ামী লীগ এখন মিথ্যার প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ নারায়ণগঞ্জে নিহত যুবদলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে আওয়ামী লীগ কর্মী বলে দাবি করছে। আর কিছু মিডিয়া সেটা আবার প্রচার করছে। যদিও অধিকাংশ মিডিয়া আজকে র্যালিতে যে টি-শার্ট গায়ে দিয়ে অংশ নিয়েছিল তার ছবি এবং লাশের গায়ে থাকা টি-শার্টের ছবি দিয়ে সত্যটা প্রচার করেছে।
রুহুল কবির সংবাদ সম্মেলনে প্রমাণ হিসেবে বিএনপি ও যুবদলের বিগত দিনের বিভিন্ন কর্মসূচিতে শাওনের অংশগ্রহণের ছবি দেখিয়ে বলেন, শাওন জেলা যুবদলের একজন সক্রিয় কর্মী। বিএনপির প্রতিটি কর্মসূচিতে সে অংশগ্রহণ করেছে। যুবদল নেতা ইসহাক সরকার, আড়াইহাজারের বিএনপি নেতা নজরুল ইসলাম আজাদ, জেলা যুবদলের নেতাদের সঙ্গে ইতোপূর্বে বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেছে। যুবদল কর্মী শাওনের হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দিতে তাকে এখন নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে।
তিনি বলেন, নারায়ণগঞ্জের গডফাদার শামীম ওসমানের নির্দেশে আজকে বিএনপির র্যালিতে গুলি করে তাকে হত্যা করা হয়েছে। পুলিশের গুলিতে আহত এখনো অনেকেই ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালসহ নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন হাসাপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।
রিজভী বলেন, শুধু হত্যা করেই ক্ষান্ত হয়নি। এখন পুরো নারায়ণগঞ্জে আতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। বিএনপি নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি হামলা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর গুলি চালিয়ে, হত্যা করে এখন তাদের বিরুদ্ধেই মামলা করার পাঁয়তারা করছে।
বিএনপি নেতাকর্মীদের উপর হামলার সময় হাতুড়ি হাতে এক পুলিশ সদস্যদের ছবি দেখিয়ে রিজভী বলেন, এরা কারা? পুলিশকে কি হাতুড়ি অস্ত্র হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এতেই প্রমাণিত হয় এরা ছাত্রলীগ-যুবলীগ-শ্রমিক লীগের কর্মী।
তিনি আরও বলেন, নূরে আলম, আ. রহিম, শাওন জীবন দিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলনে নেতাকর্মীদের উদ্বুদ্ধ করেছেন। তাদের রক্ত বৃথা যাবে না। রাজপথেই এর ফয়সালা হবে এবং শেখ হাসিনার সিংহাসন ধুলায় মিশে যাবে।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির সহ-আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ, যুবদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি মামুন হাসান, সহ-সভাপতি নুরুল ইসলাম নয়ন, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক শফিকুল ইসলাম মিল্টন, যুগ্ম সম্পাদক গোলাম মাওলা শাহীন, সাংগনিক সম্পাদক ইসহাক সরকার, দপ্তর সম্পাদক কামরুজ্জামান দুলাল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এসজি