বাংলাদেশের উন্নয়নের বন্ধু চীন: জামায়াত আমির
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান । ছবি: সংগৃহীত
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, ১৯৭৬ সাল থেকে বাংলাদেশের উন্নয়নে চীন আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। বাংলাদেশের যতগুলো বড় প্রকল্প রয়েছে, অধিকাংশগুলোতে চীনের সহায়তা রয়েছে।
বাংলাদেশের দীর্ঘতম সেতুতে চীনের আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা পার্টনারশিপ ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, যা দক্ষিণবঙ্গের প্রায় সাড়ে ৫ কোটি মানুষের জীবনকে সহজ করে দিয়েছে।
জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার সফিপুরে রোববার সকালে চীন এবং জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে খাদ্যসামগ্রী ও কম্বল বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সবচাইতে যে বড় সম্মেলন কেন্দ্র রয়েছে— চীন-বাংলাদেশ সম্মেলন কেন্দ্র। এটি মূলত চীন আমাদের উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে বাস্তবায়ন করেছিল। কিন্তু পরে বন্ধুত্বের নিদর্শন হিসেবে পুরোটাই বাংলাদেশকে উপহার দিয়েছে। আমরা এ জন্য বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে রিপাবলিক অব চায়না তার সম্মানিত প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং চীনের জনগণকে আমরা আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, চীনের এই যাত্রা আমাদের জীবনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত এবং মুসলমানদের একটি ঐতিহ্যগত সম্পর্ক চীনের সঙ্গে রয়েছে। চীন থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখানে এসেছেন। তারা এখানকার সমাজ পরিবর্তনের অবদান রেখেছেন। আবার এই অঞ্চল থেকেও জ্ঞানীগুণী ব্যক্তিরা তাদের জ্ঞানের পরিসর আরও বৃদ্ধি করা জন্য চীন সফর করেছেন। সেখান থেকে বিজ্ঞান প্রযুক্তি ভাষা উৎকর্ষ সাধন করে এসেছেন। দুনিয়ায় ভাষার দিক থেকে যেসব জাতি খুবই কাছাকাছি তাদের মনের আদান-প্রদান তা হবে চমৎকার। আমরা চাই যে চীনের সঙ্গে আমাদের ভাষাগত বন্ধন আরও সুদৃঢ় হউক। তাহলে আমাদের হৃদয়ের বন্ধন আরও সুদৃঢ় হবে।
জামাআত আমির বলেন, চীন সরকার ইতোমধ্যে বাংলাদেশে অনেকগুলো কল্যাণমূলক কাজের পদক্ষেপ নিয়েছেন। আমরা আশা করব চাইনিজ ভাষা শিক্ষার একটা উচ্চতর একাডেমি তারা এখানে গড়ে তুলবে। যাতে করে আমাদের পরবর্তী জেনারেশন ভবিষ্যত প্রজন্ম চায়নার সঙ্গে আরও বেশি ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারে। আজ বিশ্বে যে কয়টি দেশ বিজ্ঞান প্রযুক্তি প্রকৌশলে একেভারেই সামনের সারি থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে চায়নার তার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দেশ। অতএব চায়না থেকে আমাদের পাওয়া এবং জানার অনেক কিছু আছে।
এ সময় চীনা রাষ্ট্রদূত এইচ ই ইয়াও ওয়েন বলেন, চীন সরকারের পক্ষ থেকে গাজীপুরের জনগণের জন্য কিছু শীতের কম্বল ও খাদ্যসামগ্রী নিয়ে এসেছি। শীতকালে তাপমাত্রা কমে যাওয়ায় অনেকের জীবনমাত্রা দুরূহ হয়ে পড়েছে। এই কম্বল শীত নিবারণে সহায়ক হবে।
তিনি আরও বলেন, জামায়াতের আমিরকে ধন্যবাদ জানাই, বাংলাদেশের মানুষকে সহায়তা করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আমি এই ওয়ামি স্কুল পরিদর্শন করে খুশি হয়েছি। এই স্কুলে অনেক এতিম শিক্ষার্থী জামায়াতে ইসলামীর মাধ্যমে থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এই এতিম শিক্ষার্থীরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ছে। আমরা এই প্রতিষ্ঠানে চীনের পক্ষ থেকে সহায়তা দেব। আমরা চীনে ভবিষ্যতে এতিম ও শিক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাব আমাদের চীনের জীবনযাত্রা দেখার জন্য।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর জেলা জামায়াতের আমির ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম, জেলা সাধারণ সম্পাদক শফিউদ্দিন আহম্মেদ, কালিয়াকৈর উপজেলা জামায়াতের আমির বেলাল উদ্দিন সরকার প্রমুখ।