দূতাবাসগুলোকে অপপ্রচারে ব্যবহার করছে সরকার: মির্জা ফখরুল
নিশিরাতের সরকার ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখতে রাষ্ট্রীয় দূতাবাসগুলোকে অপপ্রচারে ব্যবহার করছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, হাজার ১৯৭৫ বা এর সংবিধান সংশোধন করে বাকশাল গঠন করার মধ্য দিয়ে তারা এক পর্যায়ে যেমন সাংবিধানিকভাবে এক দলীয় সরকার কায়েম করেছিল, রাষ্ট্রকে দলীয় হাতিয়ারে পরিণত করেছিল, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে নিজেদের পক্ষে এবং বিরোধী দল দমনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করেছিল, তার চেয়েও ফ্যাসিস্ট কায়দায় রাষ্ট্রের সকল প্রতিষ্ঠানকে এখন তারা ব্যবহার করেছে। যদিও সাংবিধানিকভাবে বাকশাল ব্যবস্থা কায়েম করা হয়নি। জাতীয় সংসদ, স্থানীয় সরকার কাঠামো, আমলাতন্ত্র, ফরেন সার্ভিস ক্যাডার থেকে শুরু করে সমস্ত ক্যাডার সার্ভিস বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বাহিনী, নির্বাচন কমিশন, দুর্নীতি দমন কমিশন, মানবাধিকার কমিশন, আইন সংস্কার কমিশনসহ সকল প্রতিষ্ঠান তারা কেবলমাত্র অবৈধ ক্ষমতা প্রলম্বিত করার কাজে লাগিয়েছে।
বুধবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে খালেদা জিয়ার গুলশানের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
সরকারের প্রতি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে দলটির মহাসচিব বলেন, এখনো সময় আছে এই অপতৎপরতা বন্ধ করে নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকার গঠন করার ব্যবস্থা নিন। সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ও অবাধ ভোটাধিকার নিশ্চিত করার কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করুন। নিশিরাতের নয় জনগণের নির্বিঘ্নে ভোট প্রদানের জন্য সকলের কাছে গ্রহণযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচনের মধ্য দিয়ে প্রকৃত অর্থে জনগণের সরকার গঠন করার মৌলিক শর্ত পূরণ করুন।
মির্জা ফখরুল বলেন, রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করার চলমান অপতৎপরতার সর্বশেষ প্রমাণ হচ্ছে বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিস ক্যাডার সমন্বয়ে গঠিত পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দলীয় তৎপরতা পৃথিবীর দেশে দেশে বাংলাদেশের স্বার্থ সুরক্ষা দেওয়াই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ সকল থানাসমূহের দায়িত্ব জনগণের ট্যাক্সের টাকায় ওই দুটির সময় ব্যয় বহন করা হয় এবং জনগণের ট্যাক্সের টাকায় সকল দূতাবাসে কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বহন করা হয়। অথচ এই প্রতিষ্ঠানটি দলীয়করণ করে জনগণের স্বার্থ বিরোধী কাজে লাগানো হচ্ছে, মিথ্যাচার এবং প্রতারণা করার কাজে লাগানো হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যসহ বাংলাদেশি অধ্যুষিত বিভিন্ন শহরের কর্মকর্তাগণ সরকারি দলের অনুষ্ঠানসমূহে নিয়মিত উপস্থিত থেকে দলীয় কর্মীর মতো আচরণ করেন, যা পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মর্যাদা ধুলিস্যাৎ করেছে। পেশাদারী কর্মকর্তা-কর্মচারীগণ ক্ষুব্ধ হলেও মৌন থাকত বাধ্য হচ্ছেন।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘গুম-খুন-ক্রসফায়ারের নামে হত্যা, বিচারবহির্ভুত হত্যাকাণ্ড রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলোকে ব্যবহারের মাধ্যমে জনগণের বিরুদ্ধে দাঁড় করানো হয়েছে। লজ্জাজনকভাবে আমাদের রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান এবং তার কর্মকর্তাদের মার্কিন নিষেধাজ্ঞা পড়তে হয়, যা জাতির জন্য অত্যন্ত কলঙ্কজনক।’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
এমএইচ/এসআইএইচ