তিন মামলায় বিএনপি নেতা রবিউলসহ ৭৩ জনের কারাদণ্ড
ছবি: সংগৃহীত
রাজধানীর কলাবাগান, বংশাল ও কোতোয়ালি থানার মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব রবিউল ইসলাম নয়নসহ ৭৩ নেতাকর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
রোববার (১০ ডিসেম্বর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ দণ্ড দেন। এছাড়া এসব মামলায় অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ৩৮ জনকে খালাস দিয়েছেন আদালত।
রায়ে আদালত কলাবাগান থানার মামলায় রবিউল ইসলাম নয়নসহ ৪০ জনকে পৃথক তিন ধারায় দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেন। পাশাপাশি দুই হাজার ৭০০ টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৭ দিন বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেন। মামলার তিন ধারার সাজা একসঙ্গে চলবে বলে রায়ে উল্লেখ করেছেন বিচারক। ফলে তাদের একবছর কারাভোগ করতে হবে। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়া এ মামলা থেকে ২৬ জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সিরাজুল ইসলাম, শাহ আলম সৈকত, জাকির হোসেন, নোমান, এলিন, ওয়াসিউল হাসিব আনিক, পলাশ হাওলাদার, আমিরুল বেপারী চৌধুরী, শফিকুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর হোসেন, আলমগীর হোসেন, রিপন আহম্মেদ, আশরাফুল ইসলাম, শাহ পরান, মাহমুদুল হাসান রুম্মান, কামাল, ফারুক, ফরহাদ, ইসমাইল শেখ, জুয়েল, শফিকুল ইসলাম, বাচ্চু মিয়া, রবিউল ইসলাম, মোস্তফা, রুবেল, রুবেল হোসেন, সোহেল, সিদ্দিক, ফয়সাল, শহিদুল, রাসেল, আবদুল লতিফ, রুবেল, মনির হোসেন, রিয়াজুল হাসান রাসেল, রাজিব হাসান শিবলু, মাহফুজ (চঞ্চল), জসিম রানা জসিম, জোবায়ের হোসেন ও অনুপ চন্দ্র রায়।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৩ সালের ১৩ নভেম্বর পুলিশের কাজে বাধা ও ককটেল বিস্ফোরণের অভিযোগে মামলাটি করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ২০১৪ সালের ৩০ নভেম্বর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। বিচার চলাকালে ছয়জন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
বংশাল থানার মামলায় বিএনপির ২৫ জনের কারাদণ্ড: ২০১৮ সালে ঢাকার বংশাল থানায় দায়ের করা নাশকতার আরেক মামলায় বিএনপির ২৫ নেতাকর্মীকে পৃথক দুই ধারায় তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে দুই ধারায় ৪ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ১৪ দিনের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ শেখ সাদী এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- সোহেল, রাজু, বল্লম বাজু, সিরাজ, মামুন, রনি, মঈন, আজিম, ওমর ফারুক, ইমরানুল হক ওয়াহিদ, মামুনুর রশিদ মামুন, মাসুদ রানা, তাইজুদ্দিন, নাজিবুল্লাহ, শাহজাহান খান, বিল্লাল হোসেন, আমির হোসেন বিপু, স্বপন, সৈয়দ মঞ্জুরুল হক, আরিফুর রহমান, রাজিয়া আলম, জুবায়ের আলম, তাইজু, সাঈদ ও হাজী মাছুম।
মামলার সূত্রে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৬ সেপ্টেম্বর রাজধানীর বংশাল থানা এলাকায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে মিছিল বের করে বিএনপি। মিছিল চলাকালে নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় বংশাল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আজাহার হোসেন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় পেনাল কোড ও বিস্ফোরকদ্রব্য আইনে অভিযোগ আনা হয়।
তদন্ত শেষে ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে ২০১৯ সালের ৩০ জুন বংশাল থানার এসআই মো. আবু সাঈদ চৌধুরী আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। ২০২২ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. হাসিবুল হকের আদালত চার্জগঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিক বিচারকাজ শুরু করেন। বিচার চলাকালে চার্জশিটভুক্ত ১৫ জন সাক্ষীর মধ্যে তিনজন আদালতে সাক্ষ্য দেন।
কোতোয়ালি থানার মামলায় আটজনের কারাদণ্ড: অবরোধে নাশকতার অভিযোগে রাজধানীর কোতোয়ালি থানার আরেক মামলায় বিএনপির আট নেতাকর্মীকে দেড় বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। পাশাপাশি প্রত্যেককে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে একমাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট রাজেশ চৌধুরী এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আনোয়ারুল আজিম, হায়দার আলী বাবলা, সুমন হোসেন, শাহিন, আলাউদ্দিন, হীরা, রজ্জব আলী পিন্টু ও সেন্টু। এছাড়া অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় মামলার চার্জশিটভুক্ত ১২ আসামিকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ১ অক্টোবর বিএনপি-জামায়াতের অবরোধ চলাকালে পুরান ঢাকার বাবুবাজারে গাড়ি ভাঙচুর ও যানবাহনে অগ্নিসংযোগের অভিযোগে মামলা দায়ের করে পুলিশ। কোতোয়ারি থানার এসআই মো. আব্দুল হাকিম বাদী হয়ে মামলাটি করেন। মামলা দায়েরের পর তদন্ত শেষে একই বছরের ২০ অক্টোবর আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। মামলার বিচার চলাকালে আদালতে মোট আটজন সাক্ষ্য দেন।