শাপলা চত্বরের চেয়েও করুণ পরিণতি হবে বিএনপির: ওবায়দুল কাদের
ছবি সংগৃহিত
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ১৮ তারিখের সমাবেশ উপলক্ষ্যে বিএনপির নেতা-কর্মীরা ঢাকায় আসতে শুরু করেছে। ঢাকার হোটেলগুলোতে কোনো সিট খালি নেই। সেই ডিসেম্বরের মতো সরকার পতনের স্বপ্ন দেখছেন মির্জা ফখরুল। শাপলা চত্বরে কী হয়েছিল, মনে আছে? শেষ রাতে সবাই পালিয়ে গিয়েছিল। বিএনপির আরও করুণ পরিণতি হবে।
ঢাকা অবরোধ করলে বিএনপিকে অবরোধ করা হবে বলে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। বিএনপি ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র করছে অভিযোগ তুলে কাদের বলেন, ‘মির্জা ফখরুল ক্ষমতা দখল করার জন্য নেতাকর্মীদের অতিরিক্ত কাপড় নিয়ে ঢাকা আসতে বলেছেন। তো আমরা কি দাঁড়িয়ে ললিপপ খাবো? আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরোধ হয়ে যাবে। খেলা হবে। বিএনপির পরিণতি শাপলা চত্বরের থেকেও করুণ হবে।’
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী যুবলীগের উদ্যোগে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা কলেন। বিএনপি-জামায়াতের অগ্নিসন্ত্রাস, হত্যা, দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত এ সমাবেশে যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ সভাপতিত্ব করেন।
তিনি বলেন, ঢাকা অবরোধ করতে এলে শাপলা চত্বরে হেফাজতের যে অবস্থা হয়েছিল বিএনপিকে তার চেয়েও করুণ পরিণতি বরণ করতে হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদে।
২০১৩ সালের ৫ মে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচিতে শাপলা চত্বরের কথা স্মরণ করিয়ে তিনি বলেন, শাপলা চত্বরে থেকে কী হলো শেষ রাতে? পালিয়ে গেলো না? আমি বলতে চাই না, আরও করুণ পরিণতি হবে বিএনপির। শেখ হাসিনা মাথা নত করেন না, আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় করেন না। বিএনপির পরিণতি শাপলা চত্বরের চেয়েও খারাপ হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, সারাদেশ থেকে লোক এনে শহরে জড়ো করছে বিএনপি। তারা ঢাকা অবরোধ করতে চায়। আমরাও প্রস্তুত আছি। অবরোধ করলে বিএনপি অবরুদ্ধ হয়ে যাবে, বিএনপিকে অবরোধ করা হবে।
তিনি বলেন, খেলা হবে, ছাড় দেবো না, ফখরুল। ডিসেম্বরের চেয়েও কড়া খেলা হবে। আওয়ামী লীগের অ্যাকশন, যুবলীগের অ্যাকশন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘হাওয়া থেকে পাওয়া, ফখরুল বলে পশ্চিমা বিশ্বের সমর্থন আন্দোলনে নাকি বিএনপিকে সাহস যোগাচ্ছে? আমরা এটা জানি না, এ খবর হাছা নাকি মিছা? মিথ্যা কথা আর কত বলবা, ফখরুল?
তিনি বলেন, পশ্চিমা বিশ্বের যারা বাংলাদেশে এসেছে, যারা আমাদের সঙ্গে কথা বলেছে, যারা বিদেশে কথা বলেছে, তারা বলেছে বাংলাদেশের কোনো রাজনৈতিক দলকে সমর্থন তারা করে না। এ কথা আমেরিকাও বলেছে, এ কথা ইউরোপও বলেছে। ফখরুল কোথা থেকে মিছা, আজগুবি খবর নিয়ে এলো।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, এখন চলে কোয়ার্টার ফাইনাল খেলা। আগামী মাসে সেমিফাইনাল আর জানুয়ারি মাসে হবে ফাইনাল খেলা। খেলা হবে ভোট চোরদের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, লুটপাট ও অর্থপাচারকারীদের বিরুদ্ধে।
দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশে ওবায়দুল কাদের বলেন, ১৮ অক্টোবর সবাই আমরা জমায়েত হবো। বিএনপি চুরি করে প্রবেশ করছে। আমরা কি বসে বসে ললিপপ খাব? যুবলীগ, ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ সবাই প্রস্তুত আছি। এবার অবরোধ করলে বিএনপিই অবরোধ হয়ে যাবে। তাদের (বিএনপিকে) অবরোধ করতে হবে। তারা এবার পালাবার পথ পাবে না।
বিএনপির অর্থ সহায়তা বেড়েছে আগের চেয়ে। তারা বিদেশিদের ওপর নির্ভর করে সাহস সঞ্চার করেছে। আর আওয়ামী লীগের সাহস জনগণ। আমরা জনগণের সমর্থন থেকে সাহস পাচ্ছি। জনগণ যতক্ষণ সঙ্গে আছে, ততক্ষণ ভয় নেই। আমরা ন্যায় ও নীতির পক্ষে আছি।
যতক্ষণ জনগণ সঙ্গে আছে, ততক্ষণ ভয় নেই। বিদেশি সমীক্ষা এসে পড়েছে, বাংলাদেশের ৭০ ভাগ লোক আওয়ামী লীগকে সমর্থন করে।’
অনুষ্ঠানে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, বিএনপি নেতা রিজভী অভিযোগ করেছেন যে, খালেদা জিয়াকে সরকার বিষ দিয়ে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দিচ্ছে। অথচ যে বাসায় খালেদা জিয়ার চিকিৎসা হচ্ছে, সেটা তারই বাসা। তার চিকিৎসার নেতৃত্বে রয়েছেন তারেক রহমানের স্ত্রী ডা. জোবায়দা এবং ড্যাবের সভাপতি ডা. জাহিদ। তাদের পরামর্শেই চিকিৎসা চলছে। এখন আমাদের সাবধান হতে হবে। কেননা খালেদা জিয়াকে বিষক্রিয়ার অভিযোগ এনে বিএনপি কোনো ছক কষছে কিনা। তারা নিজেরাই খালেদা জিয়াকে হত্যা করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায় কিনা- এ বিষয়ে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
যুব সমাবেশে আরও বক্তৃতা করেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশ, সাধারণ সম্পাদক মাইনুল হোসেন খান নিখিল প্রমুখ।