বিশ্বজুড়ে আমাদের অনেক বন্ধু রয়েছে, কিন্তু কোনো প্রভু নেই : ড. হাছান মাহমুদ
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক। ড. হাছান মাহমুদ
বিভিন্ন ইস্যুতে বিএনপি বিদেশিদের কাছে গুরুত্ব পাচ্ছে না। ফলে বারবার প্রত্যাখ্যাত হয়ে মির্জা ফখরুল সুর পাল্টিয়ে আওয়ামী লীগকে দোষ দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
শনিবার (২৬ আগস্ট) সকাল ১০টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) নবাব নওয়াব আলী সিনেট ভবনে ঢাবির ইনস্টিটিউট অব জেনোসাইড স্টাডিজ আয়োজিত ‘গণহত্যা ও বিচার : রোহিঙ্গা সংকটে বাংলাদেশের অবস্থান’ শীর্ষক সেমিনারে গিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, বিশ্বজুড়ে আমাদের অনেক বন্ধু রয়েছে, কিন্তু কোনো প্রভু নেই। সবার সঙ্গে সুন্দর সম্পর্ক, কারো সঙ্গে শত্রুতা নয়– এই পররাষ্ট্রনীতি নিয়েই আমাদের পথচলা। অন্যদিকে বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন পোস্টে নিজে কলাম লিখে বাংলাদেশ থেকে যেন কোনো গার্মেন্টস পণ্য কেনা না হয় এবং বাংলাদেশকে যেন কোনো সাহায্য না করা হয় সেই আহ্বান জানিয়েছেন। মির্জা ফখরুলও কংগ্রেসম্যানদের চিঠি পাঠিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে বলেছেন। এমনকি তারা অনেক কংগ্রেসম্যানের সই জাল করে ধরাও খেয়েছেন।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ব্রিকস সম্মেলনে আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে দাওয়াত করে নেওয়া হয়েছে, তিনি স্বেচ্ছায় যাননি। এই সম্মেলনে মোট ৪০টি দেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, যার মধ্যে মাত্র ছয়টি দেশকে নতুন সদস্যপদ দেওয়া হয়েছে। বাকিদের অন্য কোনো সম্মেলনে সদস্য দেওয়া হতে পারে। সুতরাং গুরুত্ব না দেওয়ার ব্যাপারটা সদস্যপদ না পাওয়া সব দেশের জন্য প্রযোজ্য। বিদেশিদের কাছে আমরা না, বিএনপি যাতায়াত করে। তাদের কাছে প্রত্যাখ্যাত হয়ে বিএনপি সুর পাল্টে বলছে, আমাদের নাকি বিদেশিরা গুরুত্ব দিচ্ছে না।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে তথ্যমন্ত্রী বলেন, এটি একটি মানবিক সমস্যা, যার সমাধান করা অতি জরুরি। ১৯৯১ সালে যখন রোহিঙ্গারা বাংলাদেশে আসে, বিএনপি সরকার তাদের ফেরত পাঠাতে পারেনি। তারও আগে ১৯৭৬-৭৭ সালের দিকেও রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। মিয়ানমার সরকার কূটনীতিক সমাধানে না গিয়ে ভিন্ন পথ অবলম্বন করছে। মাঝে তারা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চাইলেও সেই প্রতিশ্রুতি তারা ভঙ্গ করেছে। তবে আমরা কূটনৈতিক প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছি এবং কিছুদিন আগেও বড় রকমের অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু আন্তর্জাতিক মহলের যেই চাপ সৃষ্টি করার কথা ছিল, তারা সেটি করছে না। চীন ও ভারতের গুরুত্ব এখানে অনেক বেশি, এজন্য আমরা তাদের মাধ্যমে চাপ প্রয়োগের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো এখন সন্ত্রাসীদের আস্তানা হিসেবে গড়ে উঠছে। যার ফলে কিছু সুবিধাভোগী মৌলবাদী ও জঙ্গিরা সেখান থেকে সুবিধা ভোগ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। এসবের কারণে আইনশৃঙ্খলার ব্যাঘাত ঘটছে, যা ওই সমগ্র অঞ্চলের জন্য হুমকিস্বরূপ।