মীর জাফর বেইমানি করে তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা / ছবি : পিএমও
মীর জাফর বেইমানি করে তিন মাসও ক্ষমতায় থাকতে পারেনি, দুই মাসের মাথায় তাকে চলে যেতে হয়েছিল। একই ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে। মোশতাককে বিদায় আর জিয়াউর রহমান নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দিয়ে ক্ষমতায় বসে। সেনাপ্রধান আবার রাষ্ট্রপতি, সংবিধান লঙ্ঘন করে,সেনা আইন লঙ্ঘন করে।বুধবার (১৬ আগস্ট) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, জাতির পিতাকে হত্যা করে সংবিধান না মেনে খুনি মোশতাক নিজেকে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করে। রাষ্ট্রপতি ঘোষণা করেই জিয়াউর রহমানকে বানাল সেনাপ্রধান। ষড়যন্ত্রের সঙ্গে জিয়াউর রহমান ওতপ্রোতভাবে জড়িত।
শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালির জাতীয় জীবনে সবচেয়ে একটি কলঙ্কময় অধ্যায়। বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দুঃখজনক ঘটনা ঘটেছিল এই ১৫ আগস্ট। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট নির্মমভাবে হত্যা করা হয় বাঙালির জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। একই সঙ্গে আমার মা, আমার তিন ভাই, কামাল-জামালের বউদের নির্মমভাবে হত্যা করেছে।
তিনি আরও বলেন, ইতিহাসের এ জঘন্য ঘটনা বাংলার মাটিতে ঘটে যায়। সেই কারবালার ঘটনাকেও যেন হার মানায়। কারবালার ঘটনা শিশু-নারীদের হত্যা করা হয়নি, কিন্তু ১৫ আগস্ট শিশু-নারীদেরও তারা ছাড়েনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন নির্বাচন নিয়ে অনেকে উতলা হয়েছে। তাদের কাছে আমার প্রশ্ন- ২০০১ সালে যখন আমাদের নেতাকর্মীদের নির্যাতন করেছে, তখনতো নির্বাচন নিয়ে তাদের এত মাথাব্যথা ছিল না। ৯৬ সালে খালেদা জিয়ার বিতর্কিত নির্বাচন নিয়ে তো তাদের এমন চেতনা দেখিনি। খালেদা জিয়ার ভুয়া ভোটার নিয়েও তো তাদের কোনো উদ্বেগ দেখিনি। এ দেশের যারা ধ্বংসযজ্ঞ চালালো, তাদের সঙ্গে বসতে হবে কেন? আমার মনে হয়, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা তাদের পছন্দ না। এদের উদ্দেশ্য, নির্বাচন বা গণতন্ত্র না। এরা উন্নয়নের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে চায়।
খালেদা জিয়ার সমালোচনা করে তিনি বলেন, ৯১ সালে ক্ষমতায় আসার পর তার (খালেদা জিয়া) আসল রূপ বেরোলো। ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন শুরু করলো। জিয়াউর রহমানের সঙ্গে বিয়ের সময় জন্ম তারিখ ১৫ আগস্ট উল্লেখ করেননি। সার্টিফিকেটেও নেই। এমনকি ফাস্ট লেডি হিসেবে সে যে পাসপোর্ট করেছেন, সেখানে ১৫ আগস্ট জন্মদিন ছিল না। ক্ষমতায় আসার পর মিথ্যা উৎসব শুরু করেছে জঘন্য হত্যাকাণ্ডের দিন। কত জঘন্য এটা! আজকে তাদের কাছে মানবাধিকারের কথা শুনতে হয়। মানবাধিকার সে সময় কোথায় ছিল?
তিনি বলেন, ইতিহাস কখনো মুছে ফেলা যায় না। এটাই বাস্তবতা। ভেবেছিল কোনোদিন এ হত্যাকাণ্ডের বিচার হবে না। আমি কৃতজ্ঞতা জানাই এ দেশের মানুষকে। ২১ বছর পর তাদের সমর্থনে ক্ষমতায় এসে সেই বিচারের উদ্যোগ নিই। ৩৫ বছর সময় লেগেছে বিচার পেতে। কিছু খুনির রায় কার্যকর হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এতে সূচনা বক্তব্য দেন দলটির সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।
এতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন, কার্যনির্বাহী সদস্য অ্যাডভোকেট তারানা হালিম, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ শাখার সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, উত্তরের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি বক্তব্য দেন।
সঞ্চালনা করেন আওয়ামী লীগের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপ প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আব্দুল আওয়াল শামীম।