‘আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসলে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ সরকার আবারও একতরফা নির্বাচন করে ক্ষমতায় আসতে চায়। তবে একটি কথা মনে রাখতে হবে যে, আবারও আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের সার্বভৌমত্ব থাকবে না।
বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বিকালে রাজধানীর লেডিস ক্লাবে এক অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বিএনপির চিকিৎসক সংগঠন ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব) এর উদ্যোগে চিকিৎসক সমাবেশ, দোয়া ও ইফতার মাহফিল হয়। অনুষ্ঠানে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ভার্চুয়ালি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে জবরদখলকারী সরকার চেপে বসেছে। আজকে কীভাবে সাংবাদিক, সম্পাদক, চিকিৎসক, আইনজীবী শিক্ষকদের হেনস্তা করা হচ্ছে। কোনো সত্য বলা যায় না, প্রকাশ করা যায় না। গত ১৪ বছরে দেশের নির্বাচনী ব্যবস্থা ভেঙে দিয়েছে। এ সরকার নতজানু সরকার।
তিনি বলেন, আজকে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে সংকটকাল পার করছে। অথচ ১৯৭১ সালে আমরা সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে দেশের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলাম। মূলত সবার সমান সুযোগ তৈরির জন্য যুদ্ধ করেছিলাম। আজকে স্বাধীনতার ৫২ বছর পরও সেগুলো বাস্তবায়ন হয়নি। একটি অবৈধ সরকার অস্ত্রের মুখে আমাদের সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যেই তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিধান বেগম খালেদা জিয়া সংবিধানে যুক্ত করেছিলেন সেই বিধান এই সরকার আদালতের মাধ্যমে বাতিল করেছে। আজকে তাদের বিরুদ্ধে কথা বললেই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মাধ্যমে নির্যাতন করা হচ্ছে। বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেপ্তার করে দিনের পর দিন কারাগারে রাখা হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার অর্থনৈতিকভাবে দেশকে পঙ্গু করার পর এখন সারের দাম বৃদ্ধি করেছে। এর মাধ্যমে সবকিছুর দাম আবারও বাড়বে। পরিবহন ভাড়া বাড়বে। কৃষকের খরচ বাড়বে।
তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নিপীড়ন প্রসঙ্গে বলেন, আজকে আমাদের ৩৫ লাখ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়েছে। অসংখ্য নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে। দেশের অর্থনীতিকে তারা ফোকলা করে দিয়েছে।
মির্জা ফখরুল বলেন, চিকিৎসকরা দেশের সচেতন নাগরিক। আজকে আমাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সেটিই বলেছেন। আজকে আসুন সবাই মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ি। এই সরকারকে বাধ্য করতে হবে আমাদের ১০ দফা দাবি মানতে এবং একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নতুন নির্বাচন কমিশনের মাধ্যমে নির্বাচন হতে হবে। যে নির্বাচনে দেশের মানুষ তাদের পছন্দের সরকার গঠন করতে পারবে।
তিনি আরও বলেন, পৃথিবীর সব আন্দোলন তখনই সফল হয় যখন সচেতন নাগরিক মাঠে নামে। এ দানবীয় সরকারকে পরাজিত করে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। কী করে এদেশকে কল্যাণের রাষ্ট্রে পরিণত করা যায়, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা. হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা. মো. আবদুস সালাম ও সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব ডা. মো. মেহেদী হাসানের পরিচালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান ডা. এজেডএম জাহিদ হোসেন, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবদুস সালাম, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব উন খান সোহেল, বিএনপি নেতা অধ্যাপক ডা. ফরহাদ হালিম ডোনার, আবদুল হাই শিকদার, ডা. একেএম আজিজুল হক, ডা. সিরাজুল ইসলাম, অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম, ডা. মো. রফিকুল ইসলাম, অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, প্রকৌশলী রিয়াজুল ইসলাম রিজু, কাদের গণি চৌধুরী, অধ্যাপক ডা. রফিকুল কবির লাবু, ডা. পারভেজ রেজা কাকন, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, ঢাবি সাদা দলের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ডা. শহীদুল আলম, ড্যাবের নেতাদের মধ্যে ডা. এমএ সেলিম, ডা. মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, ডা. মোস্তাক রহিম স্বপন, ডা. শহীদ হাসান, ডা. জহিরুল ইসলাম শাকিল, একেএম মহিউদ্দিন ভুইয়া মাসুম, ডা. শাহ মুহাম্মদ আমান উল্লাহ প্রমুখ।
এ ছাড়া ড্যাবের কেন্দ্রীয় নেতা ডা. সৈয়দ মাহবুবুল আলম, ডা. এএস হায়দার চৌধুরী পারভেজ, ডা. সৈয়দা তাজনিন ওয়ারিস সিমকী, ডা. শহিদুর রহমান, ডা. সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা. সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা. এরফানুল হক সিদ্দিকী, ডা. আদনান হাসান মাসুদ, ডা. জাহেদুল কবির জাহিদ, ডা. নিলোফা ইয়াসমিনসহ পেশাজীবী নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এমএইচ/এসজি