‘সরকার আবারও একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সরকার বিরোধী মত ও বিরোধী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধ করে আবারও একতরফা নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। তবে এবার আর আগের মতো একতরফা নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়ী হলে সবাইকে নিয়ে জাতীয় সরকার করবে বিএনপি। তবে অবাধ নিরপেক্ষ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য আন্দোলনের কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা সংগ্রাম করছি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য। এমন একটি সরকার আমাদের উপর চেপে বসেছে। যে সরকার মানুষের মর্যাদা দিতে জানে না। মানুষের জীবনের মূল্য দিতে জানে না। তারা যেকোনো উপায় হোক ক্ষমতা আঁকড়ে ধরতে চায়। কেউ বাদ যাচ্ছে না। শুধু বিএনপি নেতা-কর্মীরা নয়, সাধারণ মানুষও বাদ যাচ্ছে না। নওগাঁর একজন মহিলাকে কী কারণে র্যাব তুলে নিয়ে গেল। তার কারণ এখনো জানা যায়নি।
শুক্রবার (৩১ মার্চ) রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকায় ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ইফতার মাহফিল এসব কথা বলেন তিনি।
এদিকে ইফতার মাহফিলের সংবাদ সংগ্রহের জন্য যাওয়া কয়েকজন সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনা ঘটে। এতে বেসরকারি টেলিভিশন এনটিভির বিশেষ প্রতিনিধি ইমরুল আহসান জনি, চ্যানেল আইয়ের প্রতিবেদক আখতার হাবিবসহ বেশ কয়েকজন সাংবাদিক আহত হন।
সাংবাদিকদের উপর হামলার ঘটনায় আন্তরিক দুঃখ প্রকাশ করেন মির্জা ফখরুল। অতিথিদের (সাংবাদিক) সম্মান রক্ষা করতে না পারায় নিজ দলের নেতা-কর্মীদের সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মনে হয় না তারা দলকে ভালোবাসে। তারা অতিথিদের সম্মান রক্ষা করতে জানে না।
মির্জা ফখরুল এসময় শৃঙ্খলার মধ্যে আসতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সরকারের দালালরা অনুষ্ঠানে ঢুকে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করছে। তারা গণমাধ্যমের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করছে।
ডিজিটাল আইনের কথা তুলে ধরে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এ আইনের অপপ্রয়োগ করা হচ্ছে। এই অপপ্রয়োগের ফলে একজন অসহায় নিরাপরাধ নারীকে জীবন দিতে হলো। এর দায় কে নেবে? এর সম্পূর্ণ দায় সরকারকেই নিতে হবে। প্রথম আলো সম্পাদকের বিরুদ্ধে শুধু মামলা নয়, এই সরকার আরও তিনজন সম্পাদককে দেশ ছাড়তে বাধ্য করেছে। তারা হলেন- সংগ্রামের সম্পাদক আবুল আসাদ, আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান ও যায়যায়দিনের সাবেক সম্পাদক শফিক রেহমান। অসংখ্য নেতা-কর্মীকে নির্যাতন, হয়রানি করছে ও আজকের সাংবাদিকদের প্রতি নির্যাতন করা হচ্ছে। আজকের সংবাদপত্র স্বাধীনতা, ভোট দেওয়ার স্বাধীনতা, কথা বলার স্বাধীনতা, কোনোটাই নেই দেশে।
তিনি বলেন, সরকার আবারও একদলীয় শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করার জন্য সব গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠানগুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে নাই। কিন্তু রাজনৈতিক দলের সব কার্যক্রম বন্ধ করে দিয়েছে। তারা সবকিছু নিয়ন্ত্রণে রাখতে চায়। তারা আবারও একটা নতুন নির্বাচনের পাঁয়তারা করছে। ১৪ ও ১৮ সালের মতো রাতে ভোট করে ক্ষমতায় থাকতে চায়। কিন্তু সেটি এদেশে জনগণ হতে দেবে না।
মহাসচিব আরও বলেন, আমরা ১০ দফা দিয়েছি। সেখানে বলেছি, এই সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই তত্ত্বাবধায়ক সরকার নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করবে। জনগণের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে সরকার গঠিত হবে। নির্বাচনে যদি বিএনপি সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়। তার মাধ্যমে জাতীয় সরকার গঠন করা হবে। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রের কাঠামো মেরামত করা হবে। কারণ বর্তমান সরকার সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে দিয়েছে।
এমএইচ/এসজি