আমি এমন বাংলাদেশ চাইনি: মির্জা ফখরুল
সরকার নিজেদের ইচ্ছা মতো সংবিধানে বিধি-বিধান চালু করছে মন্তব্য করে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আমি এমন বাংলাদেশ চাইনি। আমরা চেয়েছি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে জনগণের ভোটাধিকার থাকবে, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ন্যায়-সাম্য থাকবে।
বৃহস্পতিবার (১৬ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টাস ইউনিটিত এক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে ২৭ দফা রূপরেখার গুরুত্ব ও অপরিহার্য শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট।
মির্জা ফখরুল বলেন, এই সরকার অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে রাষ্ট্রের মূল স্তম্ভগুলো ধ্বংস করছে। রাষ্ট্রের সঙ্গে জনগণের যে চুক্তি সেটা ভেঙে ফেলেছে। তারা নিজেদের ইচ্ছে মতো বিধি-বিধান সংবিধানে চালু করেছে। অথচ বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার আন্দোলন ইতিহাস ছিল গণতন্ত্রের ইতিহাস। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে ভিন্ন মত হলেও কথা বলার স্বাধীনতা থাকবে। আজ স্বাধীনতার এত বছর পরও বলতে হয়, দেশে কথা বলার স্বাধীনতা নেই, স্বাধীনতা চাই।
তিনি বলেন, আজকে যে বাংলাদেশ আমরা সেটা চাইনি। অন্তত আমি এমন বাংলাদেশ চাইনি। এতে যদি আমায় কেউ ফাঁসি দেয়, দিতে পারে। আমরা চেয়েছি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ, যেখানে জনগণের ভোটাধিকার থাকবে, আইনের শাসন, মানবাধিকার, ন্যায়-সাম্য থাকবে।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, আজ এমন এক সময় আমরা আলোচনা সভা করছি, যার আগের দিন দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়ে আইনজীবীদের নির্বাচনকে ঘিরে একটি ন্যাক্কারজনক ঘটনা ঘটেছে। আমরা তার তীব্র নিন্দা ও ধিক্কার জানাচ্ছি। সুপ্রিম কোর্টের ন্যাক্কারজনক ঘটনা প্রমাণ করে, বর্তমানে বাংলাদেশে গণতন্ত্র তো নেই, আইনের শাসনও নেই। এমনকি সরকার আছে কি না আমার সন্দেহ।
তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ১৯৯৬ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থার দাবিতে আপনারা, জামায়াত ও জাতীয় পার্টি আন্দোলন করেছেন। সেইদিন দাবি আদায়ে ১৭৩ দিন হরতাল করেছেন, গান পাউডার দিয়ে ১৭ জনকে মানুষ পুড়িয়ে হত্যা করেছেন, লগি বৈঠা দিয়ে পিটিয়ে মানুষ হত্যা করেছেন। এখন বলেন বিএনপি আগুন সন্ত্রাস করে। আরে আগুন সন্ত্রাস তো আপনারাই শুরু করেছেন। লজ্জা করে না, এখন কথায়-কথায় বলেন সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে। সভ্য দেশে তাই হয়। আমাদের স্পষ্ট কথা, যারা ক্ষমতায় আছেন তারা অসভ্য মধ্যযুগীয় বর্বরতার চেয়েও খারাপ। যা কোনো সভ্য দেশে হতে পারে না।
দেশের বুদ্ধিজীবীদের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে আমার খুব কষ্ট হয়, যখন দেখি দেশে কিছু বুদ্ধিজীবী আছেন। যারা দেশের এই অনিয়ম ও দুর্নীতির ব্যবস্থাকে সমর্থন করেন, সমর্থন করেন শেখ হাসিনাকে। এমনভাবে তারা চাটুকারিতা করে চরম শীর্ষে চলে যায়।
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে বিএনপি মহাসচিব বলেন, এই আন্দোলন বিএনপি কিংবা কোনো দল বা ব্যক্তি লড়াই সংগ্রাম নয়। এটা দেশের ১৮ কোটি মানুষের বেঁচে থাকার সংগ্রাম। আসুন আমরা সবাই নেমে পড়ি। তাদের সরিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যবস্থা করি।
১২ দলীয় জোটের সমন্বয়ক মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে সভায় বক্তব্য রাখেন কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ইবরাহিম, বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা প্রমুখ।
এমএইচ/আরএ/