‘সরকারের ব্যর্থতায় রাজধানী এখন বিস্ফোরণের নগরী’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, অনির্বাচিত সরকারের ব্যর্থতার কারণে ঢাকা মহানগরী এখন বিস্ফোরণের নগরীতে পরিণত হয়েছে। এ সব বিষয়ে যাদের নজরদারি করার কথা, তারা সবাই দুর্নীতিতে জড়িত হয়ে পড়েছেন। কোনো নজরদারি হচ্ছে না, নজর নেই। যার সর্বশেষ প্রতিফলন রাজধানীর সিদ্দিক বাজারের একটি বাণিজ্যিক ভবনে বিস্ফোরণে ১৭ জনের প্রাণহানি। হতাহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শতাধিক।
বুধবার (৮ মার্চ) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে আয়োজিত র্যালি উদ্বোধন পূর্বসমাবেশে এ কথা বলেন মির্জা ফখরুল। পরবর্তীতে জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের উদ্যোগে র্যালি অনুষ্ঠিত হয়।
তিনি বলেন, আজ বিশ্ব নারী দিবস। এই দিন সারা পৃথিবীতে নারীরা তাদের উন্নয়ন মুক্তি ও ক্ষমতায়নের জন্য পালন করে আসছে— বাংলাদেশেও এই দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ নারীদের ক্ষমতায়ন ও সচেতনতার মাধ্যমে সমাজকে সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভব এই বিষয়টি প্রথম উপলব্ধি করেছিলেন শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান। তিনিই সর্বপ্রথম মহিলা ও শিশু মন্ত্রণালয় গঠন করেছিলেন। পরবর্তীতে নারী উত্তরসূরী মহীয়সী নারী নেত্রী খালেদা জিয়া এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখেন। খালেদা জিয়া হচ্ছেন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম নারী মুক্তিযোদ্ধা যদিও কথাটা বলা হলে অনেকের গায়ে লাগে কারণ খালেদা জিয়া যখন পাক বাহিনীর হাতে বন্দি অবস্থায়, তখন তারা পাক সরকারের তত্ত্বাবধানে ছিলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, দুর্ভাগ্যজনক আজকে নারী প্রধানমন্ত্রী জোর করে হলেও অথচ তার সময়ে নারী নির্যাতন সবচেয়ে বেশি হচ্ছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে নারীরা যেভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন অতীতে আরও এরকমভাবে হয়েছে কি না আমাদের জানা নেই। মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতান আহমেদ একজন সাবেক এমপি হলেও শুধু কথা বলার অপরাধে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়, কোনো ডিভিশন দেওয়া হয়নি। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে মিথ্যা মামলায় প্রথমে পাঁচ বছর পরবর্তীতে ১০ বছর সাজা দেওয়া হয়েছে। তিনি অত্যন্ত অসুস্থ, জামিন প্রাপ্য হলেও জামিন দেওয়া হচ্ছে না। জামিন থেকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছে। বিদেশে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হচ্ছে না।
মহিলা দলের নারী নেত্রীদের উদ্দেশে মির্জা ফখরুল বলেন, আপনাদের আরও বেশি করে সোচ্চার, সংগঠিত হতে হবে। সংগঠিত করতে হবে দেশের সমগ্র নারী সমাজকে। অধিকার আদায়ে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা আমাদের বড় কাজ। বিশেষ করে নারীদের উপর কোথাও নির্যাতন-নিপীড়ন হলে আপনাদের প্রথমেই প্রতিবাদ করতে হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য সাম্প্রতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে এক মেয়ে শিক্ষার্থীর উপর যেভাবে আক্রমণ করা হয়, কোনো নারী সংগঠন বা নারীদের তেমনভাবে প্রতিবাদ জানাতে দেখিনি।
ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারা সবসময় উন্নয়নশীল উন্নয়নশীল কথা বলেন অথচ কাতারে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দেখা গেল অনুন্নত দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম। প্রশ্ন হচ্ছে তাহলে কোথায় গেল আপনাদের উন্নয়ন ও উন্নয়নশীলতা।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেছেন সভাপতি আফরোজা আব্বাস, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য বেগম সেলেমা রহমানসহ জাতীয়তাবাদী মহিলা দলের নারী নেত্রীরা।
এমএইচ/আরএ/