গণতন্ত্রে গোপনে আলোচনার প্রয়োজন নেই: কাদের
গণতন্ত্রে গোপনে আলোচনার প্রয়োজন নেই বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, ‘আমরা যা করি প্রকাশ্যে করি, গণতন্ত্রে ব্যাক ডোরে (গোপনে) আলোচনার কোনো প্রয়োজন নেই। দরকার হলে আমিই ফখরুল সাহেবকে ফোন করব, না হয় উনি দেবেন।’
সোমবার (৬ মার্চ) সচিবালয়ের সভাকক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন।
সাংবাদিকরা প্রশ্ন রাখেন নির্বাচনের আগে বিএনপির সঙ্গে আলোচনায় বসার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না বা ‘গোপনে’ কোনো আলোচনা হচ্ছে কি না।
তিনি বলেন, ‘সেক্ষেত্রে তিনিও যেমন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে ফোন করতে পারেন, তেমনি বিএনপি নেতাও তাকে কল করতে পারেন। তবে যাই হোক না কেন, সব ‘প্রকাশ্যে’ হবে। ‘গোপনে’ কিছু তারা করেন না।
এ সময় সাংবাদিকরা জানতে চান কল করার কোনো সম্ভাবনা আছে কি না? জবাবে কাদের বলেন, ‘আমি দেখছি না।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘নির্বাচন নিয়ে বিরোধের কারণে রাজনীতিতে যে শঙ্কা দেখা যাচ্ছে, সেটি কেটে যাবে। তবে বিএনপির দাবি অনুযায়ী নির্বাচনকালীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার ‘ফিরবে না’ বলেও জানান তিনি।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কালো মেঘ আসে, সেটা আমাদের দেশে নতুন নয়। কী হবে সেটা পূর্বানুমাণ করে তো বলা যাবে না। তবে আমি আশাবাদী মানুষ, মেঘ কেটে যাবে।’
তিনি বলেন, ‘আমি স্পষ্ট করে বলতে চাই, দুনিয়ার বিভিন্ন দেশে নির্বাচন হয়। কিন্তু বাংলাদেশে এমন কিছু ঘটেনি যে সংবিধান পরিবর্তন করতে হবে এবং এমন কোনো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়নি যে, সংবিধানের বাইরে যেতে হবে।’
সংবিধানের বাইরে কোনো ছাড় দেব না। অন্যান্য দেশে যেভাবে নির্বাচন হয় সেভাবেই হবে। সংবিধান পরিবর্তন করে কারও সঙ্গে আপস করতে হবে এমন বিপদে পড়িনি। এই সংবিধান কাটাকাটির কোনো সুযোগ নেই, যোগ করেন তিনি।
বিএনপির আন্দোলন এবং অর্থনৈতিক সংকট- কোনটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছেন-এমন প্রশ্নে কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলনের হুমকি তারা ‘পাত্তা দিচ্ছেন না’। অর্থনৈতিক সংকট সামাল দেওয়াকেই গুরুত্ব দিচ্ছেন ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপির আন্দোলন বাস্তবে যত গর্জে তত বর্ষে না। তর্জন গর্জনই সার। পদযাত্রা, নিরব পদযাত্রা থেকে এখন তারা নিঃশব্দ মানববন্ধনে। আন্দোলনের যতটুকু গতি আশা করেছিল, সেটা নেই। আন্দোলনে নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণ কিছুটা থাকলেও জণগণের অংশগ্রহণ নেই। এটাকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখছি না। আর আন্দোলন করলে রাজনৈতিকভাবে মোকাবিলা করব, সহিংসতা করলে জনগণের জানমাল রক্ষায় যা করার প্রয়োজন তাই করব।
মন্ত্রী বলেন, ‘রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধ অচিরেই থেমে যাবে এমন নয়। যার ফলে সারা দুনিয়াতে সংকট আছে, বাংলাদেশেও সংকট আছে। আমাদের বেশি দামে আমদানি করতে হয়। প্রধানমন্ত্রী সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। এই সংকট সামাল দেওয়াই বড় চ্যালেঞ্জ। আর সরকারের সে চেষ্টার উপর জনগণের আস্থা আছে। তারা (বিরোধী রাজনৈতিক দল) উসকে দেওয়ার চেষ্টা করে সাড়া পায়নি।
ফখরুল বলেছেন কথা বললেই মামলা দেয়, এ বিষয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, কথা বললেই মামলা দেয়, প্রমাণ কী? তারা তো দেশে ’৭৫-এর হাতিয়ার গর্জে উঠুক আরেকবার, সেই স্লোগানও দিচ্ছে। প্রতিদিন প্রধানমন্ত্রীসহ সবাইকে নিয়ে বক্তব্য দিয়ে আক্রমণ করছে। তারপরও কি তাদের নেতারা জেলে আছেন? যার যা খুশি বলে যাচ্ছে।
এনএইচবি/এমএমএ/