অপকর্মে জড়িতদের আইনের আওতায় আনতে কাদেরের নির্দেশ
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, গুটিকয়েক অপকর্মকারীদের জন্য আওয়ামী লীগের বদনাম হতে পারে না। এদের কারণে সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড ম্লান হচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের নামে নানা অপকর্মে জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার জন্য আমি নি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানকে অনুরোধ করেছেন।’
শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত শান্তি সমাবেশে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ উদ্যোগে আয়োজিত এই সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সহসভাপতি নুরুল আমিন।
বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, মহানগর দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির প্রমুখ। সমাবেশ সঞ্চালনা করেন দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদকে এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ছাত্রলীগের পরিচয় ব্যবহার করে যেসব অপকর্ম হচ্ছে, এগুলো দুর্বৃত্তের কাজ। এই দুর্বৃত্তরা দলের নাম ব্যবহার করে। এদের পরিচয় দুর্বৃত্ত। এদের আওয়ামী লীগের কোনো সংগঠনে থাকার অধিকার নেই। অপকর্মকারীদের শেখ হাসিনা ছাড় দেন না। বিশ্বজিৎ হত্যাকারীরা ছাত্রলীগ পরিচয়ে রক্ষা পেয়েছে? বুয়েটের আবরার হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত, ছাত্রলীগ পরিচয়ে তারা ছাড় পেয়েছে? এদের বিচার হয়নি? এরা রক্ষা পায়নি।
তিনি বলেন, ‘স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকেও আমি বলেছি, এদের শুধু দল থেকে বহিষ্কার করলে হবে না। এদেরকে আইনের আওতায় আনতে হবে। এই গুটিকয়েক দুর্বৃত্তের জন্য আওয়ামী লীগের বদনাম হতে পারে না। যারা অপকর্ম করবে তাদের বিরুদ্ধেও খেলা হবে।
ওবায়দুল কাদের অর্থ পাচারকারীদের সাবধান করে বলেন, ‘শেখ হাসিনা কঠোর হচ্ছেন। কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না। যারা অন্যায় করবেন, অপরাধ করবেন দলের পরিচয় ব্যবহার করে তাঁদের ছাড় নেই। আমরা এত উন্নয়ন করছি আর গুটিকয়েক অপকর্ম করে সেটা ম্লান করবে, সেটা আমরা হতে দেব না।’
তিনি বলেন, ‘অপকর্মকারীদের দলে স্থান দেবেন না। এদেরকে এনে মিছিল বড় করার দরকার নেই।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, জনগণ যতদিন আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় রাখবে, ততদিন ক্ষমতায় থাকবে।
বিএনপির আন্দোলনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘বিএনপি লাফালাফি ও বাড়াবাড়ি করছে। জনগণের কাছে এখনো ডাক দিয়ে সাড়া ফেলতে পারেনি। সংবিধান থেকে এক চুল আমরা নড়ব না। নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। কোনো নড়চড় হবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকার একেবারেই ভুলে যান। ওই অস্বাভাবিক ও অসাংবিধানিক সরকার বাংলাদেশে আসবে না।’
তিনি আরও বলেন, সরকার পদত্যাগ করবে কেন? মামাবাড়ির আবদার? কোন দোষে সরকার পদত্যাগ করবে। কী কারণে নির্বাচনের আগে সরকারের পতন হবে? কারণটা কী? হাওয়া ভবনের যুবরাজকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য? খাম্বা সরকারকে বাংলাদেশের মানুষ আর ক্ষমতায় বসতে দেবে না।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন,আগামী এক বছরের জন্য আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিয়েছে। বিএনপির পাল্টাপাল্টি কোনো কর্মসূচি তারা দিচ্ছেন না দাবি করে তিনি বলেন, প্রতিদিনই কর্মসূচি চলবে বাংলাদেশের যেকোনো জায়গায়। কখনো সম্মেলন, কখনো শান্তি সমাবেশ, কখনো গণসংযোগ-এই ভাবে। আওয়ামী লীগ কর্মসূচি দিয়ে আগামী নির্বাচন পর্যন্ত মাঠে থাকবে, জনগণের ঘরে ঘরে যাবে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, ‘কাউকে নামতে দেব না, এই কথা বলব না। সবাই নামুক। রাজপথ সবার। আপনাদের (বিএনপি) আমরা ভয় পাই না। ভয় অগ্নিসন্ত্রাসকে।’
তিনি বলেন, ‘আমিও বলছি আমরা পাহারাদার, জনগণের স্বার্থে আমরা পাহারাদার। অগ্নিসন্ত্রাসের বিরুদ্ধে পাহারাদার। এরা কখন আগুন নিয়ে মাঠে নামে বলা মুশকিল। সে জন্য জনগণের জানমাল নিরাপত্তায় পাহারা দেব। আপনারা আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দৃশ্য অবলোকন করব, কীভাবে সেটা হবে? তাদের হাতে ক্ষমতা ফিরিয়ে দিতে পারি না। তাদের অধিকার নেই ক্ষমতায় বসার।’
আবোলতাবোল না বলে নির্বাচনে আসতে বিএনপির প্রতি আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘হুমকি–ধামকি দিয়ে লাভ নেই। পালাবেন আপনারা, আমরা পালাব না। আমাদের পালানোর জায়গা বাংলাদেশ। আমরা দেশের বাইরে পালাব না।’
তিনি বলেন, গত এক যুগে বিএনপির সম্মেলন হয়নি। এ বিষয়টি তারা সম্প্রতি ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের বৈঠকেও উপস্থাপন করেছেন বলে জানান তিনি।
কাদের বলেন, ‘তাদের ভেতরেই গণতন্ত্রের চর্চা নেই, তারা দেশে গণতন্ত্র কীভাবে আনবে।’
এনএইচবি/এমএমএ/