‘বাংলাদেশে যে গণতন্ত্র নেই তা আন্তর্জাতিকভাবেও স্বীকৃত’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেছেন, আওয়ামী লীগ সরকার গায়ের জোরে ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। মানুষের ভোটের অধিকার হত্যা করেছে। এটা কি শুধু আমরা বলি, সাধারণ জনগণও বলে। শুধু তাই নয় আজকে আন্তর্জাতিকভাবেও এটা স্বীকৃত যে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই।
তিনি বলেন, এর আগে আমেরিকায় গণতান্ত্রিক সম্মেলন হয়েছিল, বাংলাদেশ দাওয়াত পায়নি। আবার নতুন করে আরেকটি ডেমোক্রেটিক কাউন্সিল হচ্ছে, সারা পৃথিবীর গণতান্ত্রিক দেশ আমন্ত্রিত হয়েছে। বাংলাদেশকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। তার অর্থ এই এদেশের জনগণ এবং আন্তর্জাতিক বিশ্ব বুঝতে পেরেছে আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক হবে না।
শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে রাজধানীর উত্তরায় গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার এবং ফ্যাসিস্ট সরকারের পদত্যাগসহ ১০ দফা দাবিতে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপি আয়োজিত পদযাত্রা কর্মসূচি উদ্বোধনের আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির উদ্যোগে অনুষ্ঠিত পদযাত্রাটি উত্তরা জসিম উদ্দিন মোড় থেকে শুরু হয়ে বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে আব্দুল্লাহপুর বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়।
খন্দকার মোশাররফ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা। বিদ্যুতের বিল দিতে পারে না, পানির বিল দিতে পারে না, গ্যাসের বিল দেয় কিন্তু গ্যাস থাকে না। মানুষ অত্যন্ত খারাপ অবস্থার মধ্যে মানবেতর জীবনযাপন করছে। সেজন্য বিএনপি জনগণের এসব দাবি নিয়ে রাস্তায় নেমেছে। আমরা যখন এসব দাবিতে সমাবেশ করি তখন সরকার বানচাল করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু তাদের ষড়যন্ত্র টিকেনি। জনগণ সব কর্মসূচি সমর্থন করে সফল করেছে। কয়েকদিন আগে আমরা ইউনিয়নে ইউনিয়নে এ ধরনের পদযাত্রা কর্মসূচি দিয়েছিলাম। স্বাধীনতার পর জনগণের দাবি নিয়ে কোনো রাজনৈতিক দল এ ধরনের কর্মসূচি দেয়নি। আমরা দিয়েছিলাম এবং দেশের জনগণ তা সফল করেছে।
আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক দেউলিয়াত্বের কারণে বিএনপি ঘোষিত কর্মসূচির দিনে পাল্টা কর্মসূচি দিয়ে রাস্তায় থাকার চেষ্টা করছে দাবি করে ড. মোশাররফ বলেন, কিন্তু তাতে কোনো লাভ হচ্ছে না। আজকেও ঢাকা শহরে তারা শান্তি সমাবেশ করেছে। খবর নিয়ে দেখেন কয়টা মানুষ সেখানে গিয়েছে। জনগণ আর তাদের সমাবেশে যায় না। কারণ জনগণ এ পর্যন্ত প্রতারিত হয়েছে। বার বার প্রতারিত হয়েছে। তারা আর আওয়ামী লীগ দ্বারা প্রতারিত হতে চায় না।
এই সরকারের অধীনে বিএনপি নির্বাচনে যাবে না জানিয়ে তিনি বলেন, আজকে সরকার বিদেশিদের কাছে বলে আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু হবে, সবাই নির্বাচনে আসবে। বিএনপির সঙ্গে যারা যুগপৎ আন্দোলনে আছে আমরা পরিষ্কারভাবে বলে দিতে চাই শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন সুষ্ঠু হয়নি, নিরপেক্ষ হয়নি। আগামীতেও হবে না। তাই শেখ হাসিনার অধীনে কেউ নির্বাচনে যাবে না। জনগণ সেই নির্বাচন হতে দেবে না। এবার আর কোনো ছলচাতুরী করে জনগণকে বিভ্রান্ত করা যাবে না।
তিনি আরও বলেন, এই সরকার লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস করে দিয়েছে। ডলারের অভাবে ব্যবসায়ীরা আমদানি করতে পারে না। বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকা সত্ত্বেও জ্বালানি আমদানি করতে পারে না বলে লোডশেডিং হচ্ছে।
ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ডাকসুর সাবেক ভিপি আমান উল্লাহ আমানের সভাপতিত্বে ও সদস্য সচিব আমিনুল হকের পরিচালনায় সমাবেশে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু, বিএনপি নেতা কামরুজ্জামান রতন, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, তাবিথ আউয়াল, কৃষিবিদ শামীমুর রহমান শামীম, মুনসী বজলুল বাসিত আনজু, আনোয়ারুজ্জামান আনোয়ার, সাইফুল আলম নীরব, এসএম জাহাঙ্গীর হোসেন, হাসান জাফির তুহিন, সাইদ সোহরাব, সুলতানা আহমেদ, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা এসএম জিলানী, রাজিব আহসান, ছাত্র নেতা কাজী রওনকুল ইসলাম শ্রাবন প্রমুখ।
এমএইচ/এসজি