‘পদযাত্রা-পদলেহন করে সরকারকে বিদায় দেওয়া যাবে না’
পদযাত্রা-পদলেহন করে সরকারকে বিদায় দেওয়া যাবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
তিনি বলেন, ‘বিএনপি দিনের বেলায় পদযাত্রা আর রাতে কূটনীতিকদের পদলেহন করে। এই সব করে আওয়ামী লীগ সরকারকে বিদায় দেওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগের ভিত অনেক গভীরে প্রোথিত।’
সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘সারাহ ইসলাম ক্যাডাভেরিক ট্রান্সপ্লান্ট সেল’ উদ্বোধন সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য শেষে আগামী ১৮ ফেব্রুয়ারি সব মহানগরে বিএনপির পদযাত্রা কর্মসূচি নিয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
হাছান মাহমুদ বলেন, ‘এই কর্মসূচি আসলে পদযাত্রা নয়, বিএনপি এই পদযাত্রার নামে সারা দেশে বিশৃঙ্খলা তৈরি করতে চায়। কয়েকদিন আগে ইউনিয়নে ইউনিয়নে পদযাত্রা করে তারা বিশৃঙ্খলা করার অপচেষ্টা চালিয়েছে। আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের সতর্ক পাহারায় এবং প্রশাসনের সতর্ক দৃষ্টির কারণে যেভাবে করতে চেয়েছিল সেভাবে করতে পারেনি। এরপরও বিভিন্ন জায়গায় তাদের অস্ত্রধারীদের, সন্ত্রাসীদেরকে দেখা গেছে। এখন আবার ১৮ তারিখ কর্মসূচি দিয়েছে।’
সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা মহামারির মধ্যেও প্রত্যেক মানুষকে বিনামূল্যে করোনার টিকার প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ডোজ দেওয়া হয়েছে এবং এখন চতুর্থ ডোজ দেওয়া হচ্ছে। বিশ্বমন্দার মধ্যে, রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে অর্থনৈতিক টালমাটাল পরিস্থিতির মধ্যেও বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে -এটি আমার বক্তব্য নয়। বিশ্বব্যাংকের এ অঞ্চলের ভাইস প্রেসিডেন্ট, বিশ্বব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এসে বলে গেছেন। আইএমএফের রিপোর্টে আমরা করোনা মহামারির মধ্যেও মাথাপিছু আয়ে ভারতকে ছাড়িয়েছি।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের সরকার যখন এইভাবে দেশকে উন্নয়নের দিকে নিয়ে যাচ্ছে, তখন বিএনপি এবং তার মিত্ররা নানা ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে দেশে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা চালাচ্ছে।’
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপিকে অনুরোধ জানাব এ সমস্ত বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির অপচেষ্টা না চালিয়ে আগামী নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করতে, সেটিই তাদের জন্য মঙ্গলজনক হবে।’
এর আগে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মরণোত্তর অঙ্গদানের মাধ্যমে নিজের মৃত্যুর পরও আরও মানুষকে বাঁচিয়ে রাখার উদ্যোগটি অসাধারণ। মরণোত্তর অঙ্গদান করে চারজন মানুষকে সুস্থ করে তোলা সারাহ ইসলামের মা এখানে উপস্থিত আছেন। আমি সারাহ ইসলামের বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করে বলব, তিনি যে অসাধারণ কাজ করে গেছেন তা আমাদের সামনে এক অনন্য উদাহরণ।’
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা সরকারি হাসপাতালগুলোর উন্নয়নের জন্য অনেক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন উল্লেখ করে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষায়িত একটি হাসপাতাল তৈরি ও চালু হয়েছে, কিছুদিনের মধ্যেই পুরোদমে চালু হবে। সেটি যে কোনো উন্নত দেশের চিকিৎসার চেয়ে কম নয় বরং অনেক ক্ষেত্রেই উন্নততর সেবা দেবে।’
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী সারা দেশে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর উদ্যোগ নিয়েছেন। প্রতি ৬ হাজার মানুষের জন্য একটি কমিউনিটি ক্লিনিক গড়ে দিয়েছেন। ৩০ প্রকারের ওষুধ বিনামূল্যে সেখানে দেওয়া হয়। এই অসাধারণ কাজটি উপমহাদেশে অন্য কোনো দেশে নেই, এগুলো আমাদের সরকার করেছে।’
বিএসএমএমইউ উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহম্মদ শারফুদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে মরণোত্তর অঙ্গদানকারী সারাহ ইসলামের মাতা শবনম সুলতানা এবং মানব অঙ্গ প্রতিস্থাপন সার্জনরা অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন।
এনএইচবি/এমএমএ/