নৌকায় ভোট দিতে রাজশাহীবাসীর ওয়াদা নিলেন প্রধানমন্ত্রী
রাজশাহীতে বিগত ১৪ বছরের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের চিত্র তুলে ধরে নৌকায় ভোটের ওয়াদা নিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার (২৯ জানুয়ারি) বেলা ৩টায় মাদ্রাসা মাঠে মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিভাগীয় জনসভায় অংশ নেওয়া নেতা-কর্মী ও সাধারণ মানুষদের হাত উঁচিয়ে ওয়াদা করান তিনি।
এর আগে রাজশাহী জেলার ২৬টি সমাপ্ত উন্নয়ন প্রকল্প কাজের উদ্বোধন ও ৬টি উন্নয়ন প্রকল্প কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী।
রাজশাহীবাসীকে উদ্দেশ্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৯ সাল থেকে এই ১৪ বছরে রাজশাহী জেলা ও মহানগরে ১০ হাজার ৬৬০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প আমরা বাস্তবায়ন করে দিয়েছি। রাজশাহী নগরে ৪ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছি। আজকে কিছুক্ষণ আগে ১ হাজার ৩৩৩ কোটি টাকার ২৬টি প্রকল্প উদ্বোধন করলাম ও ৩৭৫ কোটি টাকার ৬টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলাম। এই প্রকল্পগুলো রাজশাহীবাসীর জন্য উপহার হিসেবে দিয়ে গেলাম।
তিনি বলেন, এই রাজশাহীতে কর্মসংস্থানের তেমন কোনো ব্যবস্থা নেই। ইতোমধ্যে আমরা অনেকগুলো পদক্ষেপ নিয়েছি। জাতির পিতা এখানে জুট, টেক্সটাইল মিল চালু করেছিলেন। সেগুলোকে ৭৫ পরবর্তী সরকার ধ্বংস করে দিয়েছে। এমনকি রেশম শিল্প পর্যন্ত ধ্বংস করে দিয়েছে। এগুলোর উন্নয়নে সরকার আবারও কাজ করছে। এই রাজশাহী সব সময় অবহেলিত ছিল। আপনারা বিগত মেয়র নির্বাচনে আমাদের ভোট দিয়েছেন। বিভিন্ন নির্বাচনে আমাদের নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জয়যুক্ত করেছেন। এ কারণে আমি রাজশাহীর মানুষকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা জনগণের কল্যাণে কাজ করি। কিন্তু এই রাজশাহীতে কি অবস্থা ছিল? ২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার যখন ক্ষমতায়, পুরো রাজশাহীতে খুন, গুম, সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, ধর্ষণ, নির্যাতন; এই রাজশাহীতে মহিমা, রজিফাদের উপর কীভাবে অত্যাচার করেছে ওই বিএনপি-জামায়াত জোট। একটা বাচ্চা মেয়ে গ্যাং রেপের শিকার হলো। তার পরিবার নৌকায় ভোট দিয়েছিল এ কারণে। নৌকায় ভোট না দিলে দেশ স্বাধীন হতো না। দেশ স্বাধীন না হলে জিয়াউর রহমান মেজর থেকে মেজর জেনারেল হতো না, এটা তারা ভুলে যায়। আর দেশ স্বাধীন না হলে খালেদা জিয়াও প্রধানমন্ত্রী হতে পারত না। সেই নৌকার উপর বিএনপির এত রাগ কেন? প্রশ্ন রাখেন প্রধানমন্ত্রী।
এসময় রাজশাহীর বিত্তশালীদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, রাজশাহীতে আন্তর্জাতিক মানের হোটেল-রেস্টুরেন্ট না থাকায় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ব্যবস্থা হয় না। আপনারা এখানে রেস্টুরেন্ট করেন, আমরা আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ভেন্যু করে দিচ্ছি।
রাজশাহীতে অনেক ঐতিহ্য ছিল, সেগুলোকে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা বর্তমান সরকার করছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাজশাহীতে মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাই ছিল না। এখন ডিজিটাল সেন্টার, ট্রেনিং সেন্টার করে দিয়েছি। এখানে শিল্প প্রতিষ্ঠান হবে। যোগাযোগ ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। এখানকার মানুষের ভাগ্যের আরও পরিবর্তন হবে।
জনসভার সভাপতিত্ব করেন রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মোহাম্মদ আলী কামাল। এসময় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
এসজি