সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন শেখ হাসিনা, মঞ্চে নেতারা
আনুষ্ঠানিকভাবে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা।
শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টায় সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে তিনি দেশের প্রাচীন এই রাজনৈতিক দলের ২২তম জাতীয় সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন উদ্বোধন করেছেন। এরপর ১০টা ২৫ মিনিটে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী এবং দলীয় পতাকা উত্তোলন করেন ওবায়দুল কাদের। এরপর দলের কেন্দ্রীয় নেতারা মঞ্চে আসেন। তারপর আধঘণ্টা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে। শোকপ্রস্তাব উত্থাপন করবেন দলের দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া।
ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর অবয়বের উপরে নৌকার আদলে বানানো হয়েছে মূল মঞ্চ। রয়েছে কঠোর নিরাপত্তা। কাউন্সিলে প্রবেশের ৫টি ফটক।
সাধারণ সম্পাদকের প্রতিবেদন উপস্থাপন করবেন ওবায়দুল কাদের। স্বাগত বক্তব্য দেবেন অভ্যর্থনা কমিটির আহ্বায়ক শেখ ফজলুল করিম সেলিম। আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার বক্তব্যের মধ্য দিয়ে সম্মেলনের প্রথম অধিবেশন শেষ হবে। আওয়ামী লীগের এবারের জাতীয় সম্মেলনে সারা দেশ থেকে প্রায় সাত হাজার কাউন্সিলর ও লক্ষাধিক নেতা-কর্মী অংশ নেবেন। উদ্বোধনী পর্বের পর বিকেলে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে শুরু হবে কাউন্সিল অধিবেশন। এই অধিবেশনে দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হবে।
সম্মেলন উপলক্ষে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে পদ্মা সেতুর ওপর নৌকার আদলে তৈরি ৮০ ফুট দৈর্ঘ্য ৪৪ ফুট প্রস্থের মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে। মূল মঞ্চের উচ্চতা হবে ৭ ফুট। সাংস্কৃতিক পর্বের জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা মঞ্চ। এ ছাড়াও পর্যাপ্ত এলইডি মনিটর রয়েছে, যেখানে সম্মেলনের কার্যক্রম দেখা যাবে। পোশাক ও সাদা পোশাকে রয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সরব উপস্থিতি।
এদিকে গত সম্মেলনের মতো সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুল ও রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববিকে ঘিরে চলছে নানা আলোচনা।
মুক্তিবোধ আর প্রগতিবাদী রাজনীতির মূলস্বরকে কেন্দ্র করে রচিত হয়েছে ‘থিম সং’। সাংবাদিক ও গীতিকবি জুলফিকার রাসেলের লেখা গানটি গেয়েছেন দেশের খ্যাতনামা কয়েকজন কণ্ঠশিল্পী। আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার পরিকল্পনায় গানটির সুর ও সংগীত পরিচালনা করেছেন পাভেল আরিন।
সম্মেলন মঞ্চে মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, শামসুল হক, মাওলানা আবদুর রশীদ তর্কবাগীশ ও হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর ছবি রয়েছে। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় চার নেতা, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা, শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়, সায়মা ওয়াজেদ পুতুলের ছবিও রয়েছে।
জানা গেছে, সম্মেলনে গঠনতন্ত্র ও ঘোষণাপত্রে তেমন কোনো পরিবর্তন আসছে না, বাড়ছে না দলের আকার; বড় পরিবর্তন আসছে না কেন্দ্রীয় কমিটিতেও। প্রতিবারের মতো এবারও সম্মেলনে বিএনপিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বাংলাদেশে নিযুক্ত বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতকে আমন্ত্রণ জানানো হলেও কোনো বিদেশি রাজনৈতিক দলের সদস্য বা প্রতিনিধিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি।
১৯৮১ সালে শেখ হাসিনা দলের সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর টানা ৯ বার দায়িত্ব পালন করছেন। সম্মেলনে এই পদে গত ৪২ বছরে কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী দেখা যায়নি। তবে গত কয়েকটি সম্মেলনে তিনি বরাবরই বয়সের ভার দেখিয়ে বিদায় নেওয়ার কথা বলেছেন। প্রতিবার কাউন্সিলদের তীব্র আপত্তিতে তাকে সভাপতির পদেই থাকতে হয়।
এসএন