বিএনপির মুখে রাষ্ট্র মেরামতের কথা হাস্যকর: কাদের
বিএনপির রাষ্ট্র সংস্কারের ২৭ দফার সমালোচনায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, যে রাষ্ট্র বিশ্বের বিস্ময়, সে রাষ্ট্রকে তারা কী মেরামত করবে। ক্ষমতায় থাকা অবস্থায় তারা (বিএনপি) রাষ্ট্রকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল। ক্ষমতায় না এলে বিএনপি নদীতে ভেসে যাবে।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডির রাজনৈতিক কার্যালয়ে দলটির ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে আয়োজিত খাদ্য উপ-কমিটির সভায় তিনি এ সব কথা বলেন।
বিএনপি রাষ্ট্রকে মেরামত করবে এটা হাস্যকর মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, যে রাষ্ট্র বিশ্বের বিস্ময়। ১৪ বছর আগের বাংলাদেশ, আর আজকের বাংলাদেশে উন্নয়ন-অর্জনের যে দৃশ্যপট, এই বাংলাদেশকে চেনাই যায় না। অথচ এই রাষ্ট্রকে তারা (বিএনপি) ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে গিয়েছিল।
মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে আওয়ামী লীগের ২২তম জাতীয় কাউন্সিল উপলক্ষে গঠিত খাদ্য উপ-কমিটির প্রস্তুতি সভায় তিনি এ সব কথা বলেন। প্রস্তুতি সভা আওয়ামী লীগ সভাপতির ধানমন্ডি রাজনৈতিক কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত হয়।
রাজধানীর একটি হোটেলে সোমবার (১৯ নভেম্বর) বিএনপির পক্ষ থেকে ‘রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের রূপরেখা’ শিরোনামে ২৭ দফা উপস্থাপন করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের আজ এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, গণতন্ত্র ও ভোট চুরি আমরা (আওয়ামী লীগ) করিনি। তারা (বিএনপি) ভোট চুরি করেছে। নির্বাচন জালিয়াতি করেছে। দলীয় লোক দিয়ে আজিজ মার্কা নির্বাচন কমিশন গঠন করেছে। ইয়েস-নো ভোট দিয়ে কি প্রহসন করেছে তা সবাই জানে। তাদের এমন জালিয়াতি নতুন কিছু না। বিএনপি গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে, মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধ ধ্বংস করেছে। স্বাধীনতার আদর্শ পদদলিত করেছে। খুনিদের পুরস্কৃত করেছে। তাদের হাতে তো রক্তের দাগ। আর বাংলাদেশকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দৃঢ় পদক্ষেপে ডিজিটাল হিসেবে মেরামত করেছে। এখন ২০৪০ সালে স্মার্ট বাংলাদেশের লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে। আজকের বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল। ক্ষমতায় এসে বাংলাদেশের অচলাবস্থা করেছিল বিএনপি। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বর্তমান সরকার সেই বাংলাদেশের উন্নয়ন সাধন করেছে।
তিনি বলেন, ১৫ আগস্ট থেকে ৩ নভেম্বর বিএনপি খুনের রাজনীতি শুরু করে। ২১ আগস্ট পর্যন্ত আমাদের ২১ হাজার নেতা-কর্মীকে হত্যা করেছে। আহসান উল্লাহ মাস্টার, শাহ কিবরিয়া, খুলনার মুঞ্জুরুল ইমাম, যশোরের শামসুর রহমান, সাংবাদিকরাও তাদের হাত থেকে রক্ষা পায়নি। তাদের হাতে তো রক্তের দাগ। কাজেই যারা ধ্বংস করে, তারা মেরামত করবে কীভাবে? এটা নতুন কিছু নয়, এটা তাদের স্ট্যান্টবাজি। এতে তাদের আন্দোলন জমবে না। মানুষ বিভ্রান্তও হবে না।
সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাব আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপি মিথ্যাচারের হোতা। তাদের মুখে সত্যেরবাণী আরেক আশ্চর্য। কারণ তারা তো মিথ্যাচার করে, মিথ্যাকে সত্য বানাতে চায়। এদেশের মানুষ এত বোকা নয়, যে তাদের মিথ্যাচার বিশ্বাস করবে। বিএনপির নেতারা ক্ষমতার লোভে মাঠে নেমেছে। কিন্তু দেশের মানুষকে আজও নামাতে পারনি। কারণ এদেশের মানুষ মনে করে মুক্তিযুদ্ধের কাণ্ডারি শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সংকট থেকে সম্ভাবনায় রয়েছে। তিনি বাংলাদেশের রূপকার। মানুষ বিশ্বাস করে। শেখ হাসিনা দেশ ছাড়া কিছু ভাবেন না। তিনি সব থেকে সৎ এবং মানুষের উন্নয়নের জন্য পরিশ্রম করেন।
দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সম্মেলনে যেন কোনো প্রকার শৃঙ্খলা বিচ্যুতি না ঘটে। এগুলো নিয়ে পত্র-পত্রিকা, আমাদের শত্রুপক্ষ ও সমালোচনার লোকের অভাব নেই। সুশৃঙ্খল সম্মেলন করে আমরা প্রমাণ করতে চাই শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ যেকোনও প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং আগামী নির্বাচনের জন্য সুসংগঠিত ও ঐক্যবদ্ধ।
আওয়ামী লীগের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে কাদের বলেন, পদ্মা সেতু করেছি, মেট্রোরেল-কর্ণফুলী টানেল প্রস্তুত। আগামীকাল ১০০ রাস্তার উদ্বোধন হবে।
আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও খাদ্য উপ-কমিটির আহ্বায়ক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন— আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন, দপ্তর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, মহিলা বিষয়ক সম্পাদক জাহানারা বেগম, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুল রহমান, দক্ষিণের সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, স্বেচ্ছাসেবক লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মেজবাহুল হোসেন সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান বাবু প্রমুখ।
এমএইচ/আরএ/