‘হাঁড়ি-পাতিল, বিছানা-বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেছে বিএনপি’
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে উদ্দেশ্য করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনার বাড়ি তো ঠাকুরগাঁওয়ে। সমাবেশ কাকে বলে তা আজকে দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের কাউন্সিল ও সমাবেশ দেখে যান। আপনারা কথায় কথায় বলেন আপনাদের সমাবেশে ঢল নেমেছে। কথায় কথায় তরঙ্গ নেমেছে। কিন্তু ঢল কাকে বলে, নদী আর সাগরের তরঙ্গ কাকে বলে তা আজ দিনাজপুরে আপনি দেখে যান। আপনারা সমাবেশের তিন দিন আগে থেকে হাঁড়ি-পাতিল, বিছানা-বালিশ নিয়ে নাটক শুরু করেন। সেই নাটকের অংশ থাকে মশার কয়েল। হায়রে নাটক।
সোমবার (২৮ নভেম্বর) দুপুরে দিনাজপুর গোর-এ শহীদ বড় ময়দানে জেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক কাউন্সিলে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এসব কথা বলেন।
দিনাজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিএনপির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে সেতুমন্ত্রী বলেন, আগামী ডিসেম্বরে খেলা হবে। এবার খেলা হবে দুর্নীতির বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে, ভোট চুরির বিরুদ্ধে, হাজার হাজার কোটি টাকা যারা বিদেশে পাচার করেছেন তাদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। ১৫ ফেব্রুয়ারির মতো নির্বাচন আর হবে না। সুষ্ঠু ভোট হবে। শেখ হাসিনা নির্বাচনের সময় রুটিন দায়িত্ব পালন করবেন। সেসময় একটা নিরপেক্ষ ভোট হবে। নির্বাচনকে সামনে রেখে মারামারি করবেন না। আপনারা উসকানি দেবেন না। আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা কিন্তু মাঠ ছেড়ে দেয়নি। আপনারা আমাদের উপর হামলা করবেন, আর আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে ললিপপ খাব। এটা কি হয়? সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের নাম শুনলে আপনাদের গা জ্বলে কেন? কারণ এই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানেই পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী আত্মসমর্পন করেছিল।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদার বলেই আজ সাজাপ্রাপ্ত আসামি হয়েও বেগম খালেদা জিয়া বাড়িতে অবস্থান করছেন। শেখ হাসিনা নিজের ক্ষমতাবলে খালেদা জিয়াকে বাড়িতে থাকতে অনুমতি দিয়েছেন।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান ও পরিবহন শ্রমিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ডিসেম্বরে বিএনপির সমাবেশের আগে ও পরে আপনারা পরিবহন ধর্মঘট দেবেন না। কিন্তু তারপরও তারা তিন দিন আগে থেকেই ঢাকায় হাঁড়ি-পাতিল ও মশার কয়েল নিয়ে অবস্থান নেবে।
দলীয় নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আপনারা সবাই দলকে এক করে রাখুন। ঐক্যবদ্ধ রাখুন। ত্যাগী নেতাদের গুরুত্ব দেন। বসন্তের কোকিলদের গুরুত্ব দিবেন। বিপদের সময় বসন্তের কোকিলদের লাইট জ্বালিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। ত্যাগীদের সেসময় খুঁজে পাবেন। নিজেদের লোক বানাবেন না। নিজেদের লোক ঠিক থাকে না। চেয়ার পড়ে গেলে কেউ সালাম দেবে না। চোখের পলকে জেল-হত্যাকাণ্ড, চোখের পলকে একুশে আগস্ট ঘটল এই ভাঙাগড়ার দেশে। এই জোয়ার ভাটার দেশে কখন কী হয়, তা আমরা জানি না। একমাত্র আল্লাহই জানেন। শেখ হাসিনা আল্লাহ ছাড়া কাউকে ভয় পায় না। একমাত্র আল্লাহকে ভয় পান। দেশের সাধারণ মানুষ কষ্টে আছেন। স্বল্প আয়ের মানুষ কষ্টে আছেন। তা দেখে শেখ হাসিনার ঘুম হারাম হয়ে গেছে। তিনি সাধারণ মানুষদের জন্য কাজ করেন, চিন্তা করেন। এই জন্য প্রতিদিন রাতে ৩ থেকে সাড়ে ৩ ঘণ্টা ঘুমান। আমরা ভাগ্যবান, শেখ হাসিনার মতো নেতাকে পেয়েছি।
সম্মেনের উদ্বোধন করেন আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সাবেক মন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন। বরেণ্য অতিথি হিসেবে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী শাজাহান খান, প্রধান বক্তা হিসেবে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের রংপুর বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক সাখাওয়াত হোসেন শফিক, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, সদস্য ও সাবেক সংসদ সদস্য অ্যাড. সফুরা বেগম রুমি, নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিম, সাবেক মন্ত্রী ও অর্থ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি আবুল হাসান মাহমুদ আলী, মনোরঞ্জন শীল গোপাল, শিবলী সাদিক, অ্যাড. জাকিয়া তাবাসসুম জুই প্রমুখ।
এসজি