‘জিয়াউর রহমান যুদ্ধে যাননি’

জিয়াউর রহমান যুদ্ধে যাননি বলে মন্তব্য করেছেন নন্দিত অভিনেতা ও নীলফামারী-২ আসনের সংসদ সদস্য ও অভিনেতা আসাদুজ্জামান নূর।
তিনি বলেন, ‘সেক্টর কমান্ডারদের বীরত্বপূর্ণ যুদ্ধের বিবরণী নিয়ে অনেক বই প্রকাশিত হয়েছে। কিন্তু জিয়াউর রহমান তো মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন একটা সেক্টরের দায়িত্বে ছিলেন। তার সম্পর্কে কোনো বই পাওয়া যায়? তার কোনো যুদ্ধের বিবরণী পাওয়া যায়? তিনি কখনো সীমান্তে গিয়ে সম্মুখ যুদ্ধে নেতৃত্ব দিয়েছেন, এমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়? না, যায় না! কেন যায় না? কারণ, তিনি যুদ্ধে যাননি।’
সোমবার (৭ নভেম্বর) রাজধানীর কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদদেশে ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গ আয়োজিত ‘৭ নভেম্বর: মুক্তিযোদ্ধা সৈনিক হত্যা দিবসের প্রতিবাদ সভা’য় তিনি এ কথা বলেন।
সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান নূর বলেন, জিয়াউর রহমান ছিলেন পাকিস্তানের অনুপ্রবেশকারী, যিনি আমাদের সঙ্গে থেকে মুশতাকের সঙ্গে হাত মিলিয়ে আন্তর্জাতিক চক্র ও পাকিস্তানিদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ষড়যন্ত্র করেন। এবং দেশে ফিরে এসে প্রথম দিন থেকেই ষড়যন্ত্র শুরু করেন।
তিনি আরও বলেন, ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছিল ১৯৬৬ সালে যখন বঙ্গবন্ধু ছয় দফা ঘোষণা করে। সেজন্য আমি মনে করি এটি একটি দীর্ঘ মেয়াদি ষড়যন্ত্র। আন্দোলনের নামে, গণতন্ত্রের নামে বিএনপি-জামাআত যা করেছিল তা একই সূত্রে গাঁথা। এরা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়, মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতে চায়। তা না হলে কেন বেছে বেছে মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করা হবে। জাতির পিতাকে কেন তারা হত্যা করল? যেন ওই পরিবারের কেউ যেন অবশিষ্ট না থাকে।
আসাদুজ্জামান নূর বলেন, কেন তারা চার নেতাকে হত্যা করল? আজকে সেই শক্তি ওই একই ধারাবাহিকতায় সক্রিয়। যে দলগুলো ৭১ সালে সক্রিয়ভাবে স্বাধীনতার বিরোধিতা করেছে, বাঙালিদের হত্যা করেছে, মা-বোনকে ধর্ষণ করেছে। যে দল স্বাধীনতার পরে জাতির পিতার পরিবারকে সপরিবারে হত্যা করেছে, ৩রা নভেম্বরে জেল হত্যা করেছে, ৭ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেছে, ৭৭ সালে বিচারের প্রহসনের নামে মুক্তিযোদ্ধাদের ফাঁসিতে ঝুলিয়েছে। সেই দলকে বাংলাদেশের মাটিতে রাজনীতি করতে দেওয়ার সুযোগ আছে বলে আমি মনে করি না।
তিনি আরও বলেন, যে দল গণতন্ত্রের নামে, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার নামে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের উপর আক্রমণ করে, ধর্মের নামে বিভ্রান্তি ছড়ায়, যারা অগ্নি সন্ত্রাস করে, যারা ধ্বংসাত্মক রাজনীতি করে সেই দলের রাজনীতি করার অধিকার বাংলার মাটিতে নেই। সেই দল নিষিদ্ধ করতে হবে।
১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারবর্গের সমন্বয়ক ও বাংলাদেশ এশিয়াটিক সোসাইটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা অধ্যাপক ড. খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে এ সময় অন্যন্যদের মধ্যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, মেজর জেনারেল (অব.) গোলাম হেলাল মোর্শেদ খান বীরবিক্রম, শহীদ কর্নেল খন্দকার নাজমুল হুদা বীরবিক্রমের কন্যা ও সংসদ সদস্য নাহিদ ইজাহার খান, শহীদ মেজর জেনারেল খালেদ মোশাররফ বীরউত্তমের কন্যা মাহজাবিন খালেদ, আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক মো. আমিনুল ইসলাম, সশস্ত্র বাহিনীতে হত্যাকাণ্ড নিয়ে গবেষক আনোয়ার কবির প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
এমএমএ/
