প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে ঢাকায় বড় শোডাউন ঘটাবে যুবলীগ
আগামী ১১ নভেম্বর (শুক্রবার) রাজধানী ঢাকার রাজপথ থেকে অলিগলি সবই থাকবে যুবলীগ নেতা-কর্মীদের নিয়ন্ত্রণে। ওই দিন ঢাকায় ১০ লাখেরও বেশি নেতা-কর্মীর জমায়েত ঘটাতে প্রস্তুতি নিয়েছে যুবলীগ। সংগঠনটির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে এই যুব সমাবেশের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ১১ নভেম্বর। সুবর্ণজয়ন্তীর এই লগ্নে যুবলীগ রাজধানীতে বিশাল সমাবেশের মাধ্যমে নিজেদের সরব উপস্থিতি জানান দিতে চায়। একইসঙ্গে স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে আঁতাতকারী রাজনৈতিক দলগুলোকে একটা বার্তাও দিতে চায়। যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবজমায়েতের আয়োজকরা বলছেন, এই ঢাকা দখলে থাকবে শুধুই যুবলীগ নেতা-কর্মীদের।
এদিন দুপুর আড়াইটায় রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এই যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখবেন।
এর আগে যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে সকালে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করা হবে।
এদিকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে যুবলীগের যুব এই সমাবেশ ঘিরে সারাদেশে ব্যাপক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে। যুবলীগ নেতারা জানিয়েছেন, দেশের ৬৪ জেলায় ৮৭টি সাংগঠনিক কমিটি রয়েছে। এসব কমিটিকে ইতিমধ্যে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে ১১ নভেম্বরে ঢাকায় যুবসমাবেশের প্রস্তুতি নিতে। সেভাবেই সকল সাংগঠনিক কমিটি প্রস্তুতি নিচ্ছে।
এই যুব সমাবেশে ১০ লাখেরও বেশি যুবকের সমাবেশ ঘটানো হবে জানিয়ে যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সুভাষ চন্দ্র হাওলাদার বৃহস্পতিবার ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, আপনারা জানেন ১১ নভেম্বর যুবলীগের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সুবর্ণজয়ন্তী। এই উপলক্ষে আমরা ১১ নভেম্বর ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে যুব সমাবেশ করব। সেখানে ১০ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটাব। সেই প্রস্তুতি এখন চলছে। এই সমাবেশের দিন ঢাকা থাকবে শুধু যুবলীগের দখলে। আর এই সমাবেশের মধ্য দিয়ে যুবলীগের শক্তি প্রদর্শন করা হবে। এই দিন সোহরাওয়াদী উদ্যান জনসমুদ্রে পরিণত হবে। ঢাকার রাজপথ থেকে অলিগলি সর্বত্রই থাকবে যুবলীগের নেতা-কর্মীরা।
সুভাষ হাওলাদার বলেন, ‘আমাদের এই সমাবেশ করার ব্যাপারে ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্মতি দিয়েছেন। তার সম্মতি পাওয়ার পর আমরা সারাদেশে যুবলীগের সাংগঠনিক কমিটিগুলোতে নির্দেশনা দিয়েছি জমায়েত সফল করার জন্য। আমরা ১১ নভেম্বর যুবলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ও সুবর্ণজয়ন্তিকে স্মরণীয় করে রাখতেই জাঁকজমকপূর্ণভাবেই এই সমাবেশ আয়োজন করছি।’
যুবলীগ সূত্রে জানা গেছে, ১১ নভেম্বরের যুবসমাবেশকে সামনে রেখে যুবলীগ ইতিমধ্যে সারাদেশ জুড়ে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছে। বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনের পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকেও প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
১১ নভেম্বর শুক্রবার হওয়ায় নগরবাসীর খুব কষ্ট হবে না বলে মনে করছেন যুবলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা। কারণ, ওইদিন অফিস, আদালত, স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকে। তা ছাড়া, সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে বিকালে। তবে সকাল থেকেই নগরীর চারপাশ দিয়েই সারাদেশ থেকে যুবলীগ নেতা-কর্মী ও যুব সমাজের প্রতিনিধিরা ঢাকায় প্রবেশ করবেন।
সমাবেশ সম্পর্কে সুভাষ চন্দ্র হাওলাদা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ওইদিন শুধু সমাবেশই হবে না। এই দিনে আমরা একটা বার্তাও দিতে চাই। আপনারা দেখেছেন যে, বিএনপি স্বাধীনতা বিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত করে যারা স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না তাদেরেকে রাজনীতি করার সুযোগ করে দিয়েছিল। সেই পরাজিত শক্তি যাতে আর কোনোভাবে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ক্ষমতায় যাওয়ার চেষ্টা না করে সেই বার্তা দেওয়া হবে।
এই সমাবেশের মাধ্যমে এটা পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হবে, যেকোনো ষড়যন্ত্র এদেশের যুবসমাজ প্রতিহত করবে। এই বার্তাটাও দেশের মানুষ এই সমাবেশ থেকে পাবে যে আমরা ঐক্যবদ্ধভাবে যেকোনো অপশক্তি মোকাবিলা করতে সক্ষম। যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস পরশের নেতৃত্বে যুবলীগ ঐক্যবদ্ধ, যোগ করেন তিনি।
এদিকে, রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, মাঠের বিরোধী দল বিএনপি সারাদেশে বিভাগীয় সমাবেশ করে সরকারকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি আগামী ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় মহাসমাবেশ করার ঘোষণাও দিয়ে রেখেছে। এরমধ্য দিয়ে দেশ অচল করে দেওয়ার যে হুমিক দিচ্ছে বিএনপি তার জবাব দিতেই প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে ১১ নভেম্বর ঢাকায় ১০ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটাতে চায় যুবলীগ।
এনএইচবি/এমএমএ/