দলীয় এমপিদের এলাকামুখি হওয়ার নির্দেশ শেখ হাসিনার
আগামী দ্বাদশ সংসদ নির্বাচন কঠিন ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা পূর্ণ হবে জানিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলীয় সংসদ সদস্যদের এলাকামুখি হওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন। নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই মানুষের কাছে ছুটে যেতে বলেছেন। প্রত্যেক এলাকার জনপ্রতিনিধিকে নিজ নিজ এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি দলীয় সংসদ সদস্যদের বলেছেন, ভোটের সময় যেভাবে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে ভোট চেয়েছেন, একইভাবে এখন থেকে মানুষের দ্বারে দ্বারে গিয়ে সেবা দেওয়ার পাশাপাশি সরকারের উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরুন।
বুধবার (২ নভেম্বর) রাতে জাতীয় সংসদ ভবনের লেভেল-৯ এ সরকার দলীয় সংসদ সদস্যদের সভাকক্ষে সংসদ নেতা ও আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিন সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগের সংসদীয় দলের সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় আওয়ামী লীগ থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের অধিকাংশই উপস্থিত ছিলেন। সেখানে আওয়ামী লীগ সভাপতি দলীয় সংসদ সদস্যদের এসব নির্দেশনা দেন।
বৈঠক সূত্র ও সংসদ সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিএনপি'র অপপ্রচারের জবাব দিতে দলীয় এমপিদের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তৎপরতা বাড়ানোর তাগিদ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। নির্বাচনকে সামনে রেখে বিএনপি সরকার বিরোধী নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে এ সকল অপপ্রচার রুখতে প্রত্যেক জনপ্রতিনিধিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
বৈঠক সূত্র জানায়, যেকোনো অপপ্রচারের বিরুদ্ধে জবাব দেয়ার পাশাপাশি জনগণের কাছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরার কথা বলেছেন। করোনা মোকাবেলায় সরকারের যে সাফল্য সেটি তুলে ধরতে এমপিদের নির্দেশ দিয়েছেন শেখ হাসিনা।
বর্তমান যে বৈশ্বিক সংকট রয়েছে সেই সংকট কাটিয়ে উঠতে পারবেন বলে এমপিদেরকে আশ্বস্ত করে আওয়ামীলীগ সভাপতি বলেছেন, আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থা থেকে লোন নিয়ে যেভাবেই হোক এই সংকট কাটিয়ে ওঠার সক্ষমতা সরকারের রয়েছে। তাই মানুষের কাছে সঠিক তথ্য তুলে ধরার জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
যে সকল সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে টেন্ডারবাজিসহ নানান অভিযোগ উঠেছে, যারা নিজস্ব বলয় সৃষ্টি করে দলের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করেছেন তাদেরকেও সতর্ক করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।
এদিকে সংসদ সদস্যদের মধ্যে অনেকেই আওয়ামীলীগ সভাপতিকে নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় নেওয়ার আগ্রহ ব্যক্ত করেছেন। একজন হুইপ বলেছেন, আপনি আগে নির্বাচনের সময় আমাদের এলাকায় যেতেন। অনেকদিন হলো এলাকায় যান না। মানুষ আপনাকে একটু কাছ থেকে দেখতে চায়। আপনাকে কাছে পেলে মানুষ আত্মবিশ্বাস পায়। তাই আমার এলাকায় একটা জনসভায় যদি একটু সময় দেন তাহলে মানুষের মধ্যে উৎসাহ বাড়বে।
নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও বিগত দুটি নির্বাচন নিয়ে বিভিন্ন মহলে নানামুখি আলোচনা সমালোচনা রয়েছে। এই বিষয় উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, আগামী নির্বাচন আর যেন বিতর্কিত না হয়। তাই মানুষের কাছে যিনি গ্রহণযোগ্য তাকেই আগামী নির্বাচনের প্রার্থী করা হবে এমন ইঙ্গিত দিয়েছেন।
তবে আওয়ামী লীগের এই সংসদীয় সভায় সংসদ উপনেতা নিয়ে কোন আলোচনা হয়নি। প্রয়াত সংসদ উপনেতার সৈয়দা সাজদা চৌধুরী জায়গায় কে আসতে পারেন সে বিষয়ে কোনো ইঙ্গিত দেয়া হয়নি বলে জানা গেছে।
আওয়ামী লীগের একাধিক সংসদ সদস্য সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে।
এনএইচবি/এএস