‘কিছুদিনের মধ্যে কাদের বিএনপিতে যোগ দেবেন’
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, গোটা রাষ্ট্রকে ক্রিমিনাল স্টেটে পরিণত করেছেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘তিনি যে সরকার পরিচালনা করছেন সেটা হচ্ছে অপরাধীদের সরকার। এ ছাড়া আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। কারণ, তার সাম্প্রতিক বক্তব্যে সেটা বুঝা যাচ্ছে।’
শনিবার (২৯ আগস্ট) দুপুরে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন, যুবদলের সাবেক সহ-সভাপতি আলী আকবর চুন্নু প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপির গণসমাবেশে সরকারের বাধা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘নানারকম প্রতিবন্ধকতা-বাধা পেরিয়ে গতকাল থেকেই রংপুর জনসমাবেশে জনতার ঢল নেমে পড়েছে। মানুষের যেন স্বতঃস্ফূর্ত উৎসবে পরিণত হয়েছে রংপুর মহানগর।’
রংপুরের বিভিন্ন জেলা উপজেলা ইউনিয়ন ওয়ার্ড থেকে মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে রংপুরে এসে মিলিত হয়েছে। মানুষ শুকনা খাবার রুটিচিরা নিয়ে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হয়েছে এ যেন এক অভূতপূর্ণ দৃশ্য।
তিনি বলেন, ‘জনতার এ স্রোত দেখে বিচলিত বোধ করছে প্রধানমন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী চেলা চামন্ডরা, মন্ত্রিসভার কিছু সিনিয়র সদস্যরা। এতে মনে হচ্ছে তারা আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র বিরোধী কথাই বলছে না বিভিন্নভাবে হুমকিও দিচ্ছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনে মনে হচ্ছে কিছুদিনের মধ্যে তিনি বিএনপিতে যোগ দেবেন। গত দুদিন আগে নারায়ণগঞ্জে ওবায়দুল কাদের বক্তব্য দিয়েছেন। আমরা যে বক্তব্য দেই সরকারের গুম খুন নির্যাতনের বিরুদ্ধে শুধু যে আমরাই দেই তা নয় বিরোধী দলগুলো এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও প্রকাশ পেয়েছে অভিযোগ করেছে সমালোচনা করেছে।
সেই সমালোচনা গুলোই পক্ষান্তরেই ওবায়দুল কাদের বলেছেন। তাতে আমার মনে হয়েছে কিছুদিনের মধ্যেই তিনি বিএনপিতে যোগ দিবেন। শতকরা ৯০ ভাগ বলছে আর দশ ভাগ বিভিন্নভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বলছে যেভাবে বলুক না কেনো মনে হয়েছে তিনি বিরোধী দলের কথাগুলোই বলছেন, যোগ করেন তিনি।
ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, গত ১৪ বছরে ফ্যাসিবাদী কায়দায় গণতন্ত্রকে হত্যা করে তাদের চিরচেনা সংস্কৃতি সেটা হল সকল রাজনৈতিক দলের কর্মকাণ্ডকে বন্ধ করে দিয়ে বাকশাল তৈরি করা।
সেই ঐতিহ্যের ধারাবাহিকতায় তারা (আওয়ামী লীগ) বাংলাদেশে নব্য বাকশাল তৈরি করেছে। এখানে কথা বলা পাবলিক প্লেসে হোক আর রুমের ভিতরে তার পরিণতি হচ্ছে গুম হয়ে যাওয়া অথবা জেলে যাওয়া। এই যে অন্যায় অবিচার তারা করছে।
তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর থেকে বাংলাদেশের মানুষের কাছে অচেনা একটা শব্দ গুম সেটা প্রচলন করেছে। মানুষের মধ্যে এখন আতঙ্কের নাম ভয়ের নাম হচ্ছে গুম। মানুষ সবসময় আতঙ্কে থাকে যে তার সন্তান হারিয়ে যাবে গুম হয়ে যাবে।’
রিজভী বলেন, ‘দেশে যখনই স্বচ্ছ নির্বাচন হবে এবং যারা ক্ষমতায় আসবে তারা এসব অন্যায়র বিচার করবে আর সেই ভয়ে শেখ হাসিনা এখন নানান পাঁয়তারা করছে নানান অভিযোগ দায়ের করছে। তিনি এবং তার সরকার জনগণের আদালতে অপরাধী হয়ে আছে এটা এখনো তার মাথায় ঢোকেনি। বিএনপি যে সভা সমাবেশগুলো করছে সেখানে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ এবং বিএনপির কর্মসূচিগুলোতে মানুষের সমর্থন আছে মানুষ বিএনপির পক্ষে আছে।
আমাদের দাবি, গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে মুক্তি। এই সরকার তার সিন্ডিকেটের মাধ্যমে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম বাড়িয়েছে, দৃষ্টান্তহীন দাম বাড়িয়েছে এর প্রতিবাদে বিএনপির এই কর্মসূচি চলছে। এ কর্মসূচিগুলোতে জনগণের অংশগ্রহণের বহিঃপ্রকাশ ঘটছে।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, আজকের সমাবেশে লোকে লোকারণ্য। শুধু সমাবেশ স্থলে নয় সারা রংপুর শহরে উৎসবের আমেজে পরিণত হয়েছে। এটার মধ্য দিয়ে দুইটা জিনিস সুস্পষ্ট হচ্ছে। বিএনপি জনগণের জন্য যে কর্মসূচি দিয়েছে সেই কর্মসূচিতে জনগণের সমর্থন। আর একটা হচ্ছে, দেশের জনগণ ইঙ্গিত দিচ্ছে আগামী দিনে এই অবৈধ সরকার পতনের আন্দোলনে জনগণের সমর্থন থাকবে।
এমএইচ/এমএমএ/