সৎ সাহস থাকলে তারেক রহমান দেশে আসুক: কাদের
বিএনপি না কি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাধাটা দিচ্ছে কে? বরং আমরা চাই, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার কৃত অপরাধের শাস্তি কার্যকর করা হোক। বুকে সৎ সাহস থাকলে সে দেশে ফিরে আসুক। তার জন্য আন্দোলনের প্রয়োজন নেই বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
শুক্রবার (২১ অক্টোবর) দেওয়া এক বিবৃতিতে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের ষড়যন্ত্রমূলক, বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান তিনি।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- সরকারকে সরাতে না পারলে নাকি জাতির অস্তিত্ব থাকবে না! আমরা বলতে চাই, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের অবিসংবাদিত নেতৃত্বে ৩০ লাখ প্রাণের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের অস্তিত্ব, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং সুরক্ষায় মহান মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্বদানকারী সংগঠন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের লাখ লাখ নেতা-কর্মী আত্মত্যাগ করেছে। এদেশের অর্থবহ অস্তিত্ব ও সার্বভৌমত্বের অতন্দ্র প্রহরী বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। সফল রাষ্ট্রনায়ক বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশের অস্তিত্ব সুদৃঢ় ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠিত। আর্থ-সামাজিক ও ভূ রাজনৈতিক সকল ক্ষেত্রেই বাংলাদেশের অবস্থান অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে আরও সুসংহত হয়েছে। বরং বিরোধিতার নামে বিএনপিই এদেশের অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তে লিপ্ত রয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন বর্তমান সরকার ব্যালটের মাধ্যমে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্বভার গ্রহণ করেছে। সংবিধান অনুযায়ী যথাসময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। জনগণের রায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সব সময় মাথা পেতে গ্রহণ করেছে। নির্বাচন ব্যতীত অন্য কোনো চোরাগলি দিয়ে সরকারকে উৎখাত করার সুযোগ নেই। নির্বাচনই সরকার পরিবর্তনের একমাত্র পথ। বিএনপি নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াত্ব ও ব্যর্থতা ঢাকতে কত কথাই বলছে। এসব কথায় জনগণ কান দেয় না। বিএনপিকে বলতে চাই, জাতির অস্তিত্ব হাজার বছর ধরে ছিল, আছে এবং থাকবে। বরং হঠকারী রাজনীতির জন্য বিএনপির অস্তিত্ব টিকে থাকবে কিনা সেটাই আজ প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, বিএনপিই হলো দেশের অস্তিত্ব, অগ্রগতি এবং সমৃদ্ধির প্রধান অন্তরায়। ইনডেমনিটি অধ্যাদেশের মতো পাশবিক মানসিকতা লালন-পালনকারী বিএনপি এবং ২০০৪ সালের ২১ আগস্টের ভয়াবহ গ্রেনেড হামলার মাধ্যমে গণহত্যা সংঘটনকারী মানবতাবিরোধী অপরাধী খুনি তারেক রহমানই হলো এদেশের শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রধান প্রতিবন্ধক। তারা তাদের তথাকথিত 'টেক ব্যাক বাংলাদেশ' আন্দোলনের নামে কার্যত হাওয়া ভবনের দুর্নীতি-দুর্বৃত্তায়ন, স্বেচ্ছাচারিতা এবং জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদের প্রত্যাবর্তন ঘটাতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা না কি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্দোলন করছে। আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে বাধাটা দিচ্ছে কে? বরং আমরা চাই, একজন সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে দেশে ফিরিয়ে এনে তার কৃত অপরাধের শাস্তি কার্যকর করা হোক।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, বিএনপি বলছে আওয়ামী লীগ না কি সব ক্ষেত্রে ব্যর্থ। তাহলে বিরোধী দল হিসেবে বিএনপি কি সফল? আন্দোলন ও নির্বাচনে যাদের ব্যর্থতা ছাড়া কিছুই নেই- তাদের মুখে এ কথা মানায় না। ক্ষমতা দখলের ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তমুখী রাজনীতি ছাড়া বিরোধী দল হিসেবে বিএনপির ভূমিকা কি? মহামারি করোনা মোকাবেলা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগসহ জাতির কোনো প্রয়োজনেই বিএনপিকে দায়িত্বশীল বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করতে দেখা যায়নি। বরং এদেশের যা কিছু নেতিবাচক ও কলঙ্কজনক অধ্যায়, যত নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ড তার প্রায় সবই বিএনপির নেতৃত্বে সংঘটিত হয়েছে। তাদের হাতে দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব, সংবিধান ও জনগণ নিরাপদ নয়।
এসএম/এসআইএইচ