বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪ | ১১ পৌষ ১৪৩১
Dhaka Prokash
Header Ad

জাতীয় পার্টি থেকে বহিষ্কার হচ্ছেন রওশন এরশাদ!

জাতীয় পার্টির প্রধান পৃষ্ঠপোষক ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতাকে রওশন এরশাদকে পাটি থেকে বহিষ্কার করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে দলের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম। একইসঙ্গে মসিউর রহমান রাঙাকে স্থায়ীভাবে বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে।

শনিবার অনুষ্ঠিত জাতীয় প্রেসিডিয়াম বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় পার্টির একাধিক নেতার সঙ্গে কথা বলে এ তথ্য জানা গেছে।

বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, রওশন এরশাদ আগামী ২৬ নভেম্বর পার্টির যে কাউন্সিল আহ্বান করেছেন সেটি বাতিলের জন্য তাকে অনুরোধ করা হবে। কিন্তু অনুরোধ জানানোর পরও রওশন এরশাদ যদি কাউন্সিলে অনড় থাকেন তাহলে তাকে পার্টি থেকে বহিষ্কার করা হবে।

সূত্র জানায়, রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা বলার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে প্রয়াত এরশাদের ভাগিনা পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আদেলুর রহমান আদেল এমপিকে। রওশন এরশাদ যদি ফোন না ধরেন সেক্ষেত্রে তার সন্তান সাদ এরশাদের সঙ্গে কথা বলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে বৈঠক সূত্র থেকে জানা গেছে।

শনিবার জাপার বনানী কার্যালয়ে সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল ১১টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক সূত্রে আরও জানা গেছে, জাতীয় পার্টি থেকে কিছুদিন আগে অব্যাহতি পাওয়া মসিউর রহমান রাঙাকে পার্টির সাধারণ সদস্য পদ থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

সূত্র জানায়, বৈঠকে জাপার সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, আমি ম্যাডামকে (রওশন এরশাদ) কিছুদিন আগে মোবাইলে বলেছিলাম-আপনি আমাদের মাতৃ সমতূল্য। আমি সবসময় আপনার সঙ্গে ছিলাম। আপনি কাউন্সিল প্রত্যাহার করুন। তিনি আমাকে ভাল-মন্দ কিছু বলেননি। এরপর একাধিকবার ফোন করলেও ফোন ধরেননি।

তিনি বলেন, সিস্টেমের বাইরে যেই কাজ করবে, পার্টির বিরুদ্ধে বিভেদ সৃষ্টি করবে সে আমার আপন ভাই হলেও তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সভায়, উত্তরবঙ্গের এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, কারও যদি গ্যাংরিন বা হাত-পায়ে পচন সৃষ্টি হয় সেক্ষেত্রে আঙ্গুল কেটে ফেলতে হয়, নতুবা পুরো হাত বা পা কেটে ফেলতে হয়। তাই সময় থাকতে ষড়যন্ত্রকারীদের সরিয়ে ফেলতে হবে।

বৃহত্তর ঢাকার এক প্রেসিডিয়াম সদস্য বলেন, দলের ভেতরে থেকে দলকে ক্ষতিগ্রস্ত করা সহজ। আর যদি আগে থেকে চিহ্নিত ষড়যন্ত্রকারীদের দল থেকে বের করে দেওয়া হয়, তাহলে তারা পার্টির তেমন ক্ষতি করতে পারবে না।

পার্টির আরেক প্রেসিডিয়াম ও দলীয় সংসদ সদস্য তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমার কাছে ম্যাসেজ আছে সাদ এরশাদ ম্যাডামকে জিম্মি করে রেখেছেন। ঢাকায় অবস্থানরত পার্টি থেকে বহিস্কৃত কয়েকজনের সমম্বয়ে শাদ ম্যাডামের মোবাইল সিজ করে রেখেছেন। তাদের আস্থাভাজন ছাড়া কাউকে রওশন এরশাদের সঙ্গে কথা বলতে দেওয়া হচ্ছে না।

প্রেসিডিয়াসম সদস্য সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা ঢাকাপ্রকাশ-কে বলেন, ম্যাডামের কাউন্সিলে কেউ যাবে না। তবে বহিস্কারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ, এখন হাসপাতালে আছি। পরে কথা বলব।

সাবেক মহাসচিব ও বর্তমানের প্রেসিডিয়াম সদস্য এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার বলেন, সংসদের বিরোধী দলীয় নেতার বিষয়ে উনারা (সংসদ সদস্য) সিদ্ধান্ত নিয়েছেন পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরই সংসদের বিরোধী দলীয় নেতা হবেন।

কাউন্সিলের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ম্যাডাম কাউন্সিল ডাক দিয়েছেন সেটা তো আমার জানা নেই। আমি ম্যাডামের সঙ্গে সরাসরি কথা বলেছি। তিনি তো আমাকে কাউন্সিলের বিষয়ে কিছু বলেননি। কারা ডাকছে সেটা আপনারা অনুসন্ধান করে দেখুন।

সভায় সূত্রে আরো জানা গেছে, সিলেট বিভাগের কয়েকটি জেলাকে কেন্দ্র করে পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এটিইউ তাজ রহমান এবং আতিকুর রহমান আতিকের মধ্যে উত্তপ্ত বাক্যবিনিময় হয়। পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নুর মধ্যস্থতায় পরে পরিবেশ স্বাভাবিক হয়।

বৈঠকে জাপার চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের তার বক্তব্যে বলেন, ‘পার্টির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করলে কাউকে ছাড় দেয়া হবে না, সে যত বড় বা শক্তিশালী হোক না কেনো। দলের মাঝে শৃঙ্খলা রক্ষার্থে আমি যেকোনো কঠোর সিদ্ধান্ত নেব।’

বৈঠকে প্রেসিডিয়ামের ৪১ সদস্যের মধ্যে ৩৮ জন এবং ২৬ এমপির মধ্যে ২০ জন উপস্থিত ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, ‘কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি, তবে কারও কারও পক্ষ থেকে দাবি তোলা হয়েছে।’   

সভায় সভাপতিত্ব করেন পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের। উপস্থিত ছিলেন মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কাজী ফিরোজ রশীদ, সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, এডভোকেট সালমা ইসলাম, প্রেসিডিয়াম সদস্য- মো. আবুল কাশেম, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, গোলাম কিবরিয়া টিপু এমপি, এডভোকেট শেখ মুহাম্মদ সিরাজুল ইসলাম, ফখরুল ইমাম এমপি, সৈয়দ মোহাম্মদ আব্দুল মান্নান, মীর আব্দুস সবুর আসুদ, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী, হাজী সাইফুদ্দিন আহমেদ মিলন, এ.টি.ইউ. তাজ রহমান, সোলায়মান আলম শেঠ, নাসরিন জাহান রতনা এমপি, ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী এমপি, লেঃ জেঃ মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, এডভোকেট মো. রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, মোঃ মিজানুর রহমান, নাজমা আখতার এমপি, আলমগীর সিকদার লোটন, এমরান হোসেন মিয়া, মেজর (অব.) রানা মোহাম্মদ সোহেল এমপি, লিয়াকত হোসেন খোকা এমপি, মোঃ জহিরুল ইসলাম জহির, মোস্তফা আল মাহমুদ, মোহাম্মদ আতিকুর রহমান আতিক, জরিুল আলম রুবেল, সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা রওশন আরা মান্নান, শেরীফা কাদের, শরিফুল ইসলাম জিন্নাহ, নুরুল ইসলাম তালুকদার, পনির উদ্দিন আহমেদ, পার্টির ভাইস চেয়ারম্যান আহসান আদেলুর রহমান।

এনএইচবি/এমএমএ/

Header Ad
Header Ad

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। ছবি: সংগৃহীত

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, সচিবালয়ের ৭ নম্বর ভবনে আগুন লাগার ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তদন্তের পর জানা যাবে এটা নাশকতা কি না।

বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৯টায় তিনি সচিবালয়ের সামনে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানান।

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, আগুন লাগে ষষ্ঠতলায়। আমাদের ফায়ার সার্ভিসে রাত ১টা ৫২ মিনিটে খবর দেওয়া হয়, তারা ১টা ৫৪ মিনিটে কাজ শুরু করে। সকাল আটটা পাঁচ মিনিটে আগুন সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে আসে। এই ঘটনায় আমাদের ফায়ার ফাইটারের একজন শাহাদাত বরণ করেছেন। তিনি দুর্ঘটনায় মারা গেছেন। তিনি একটি পাইপ নিয়ে সচিবালয় থেকে বের হয়েছিলেন। এ সময় একটা ট্রাক তাকে ধাক্কা দিয়ে তাকে আহত করেন। পরে তিনি মারা যান। তার সঙ্গে আরো দুই থেকে তিনজন আহত হয়েছেন। তারা সবাই সুস্থ আছেন।

আগুনটা ছয়তলায় লেগেছে। সেটা উপরের দিকে গেছে, নিচে আসেনি বলে জানান উপদেষ্টা।

তিনি বলেন, আগুনের ঘটনা তদন্তে আমরা একটি কমিটি গঠন করে দিচ্ছি। কেবিনেট সচিব এবং স্বরাষ্ট্র সচিবকে অলরেডি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। হাই পাওয়ারের একটি তদন্ত কমিটি করার জন্য বলে দেওয়া হয়েছে।

কোনো ষড়যন্ত্র বা নাশকতা হয়েছে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত করার আগে আমরা এটা বলতে পারব না। ইনভেস্টিগেশনের পরে আমরা বলতে পারব।

তদন্ত কমিটি কত সদস্যের হবে এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তদন্ত কমিটি যেটা সেটা পাঁচ সদস্য হতে পারে, সাতজন হতে পারে, ৯ জন হতে পারে, ১১ জন হতে পারে। এটা এই মুহূর্তে বলা যাবে না। পরে জানানো হবে।

আগুনের উৎস সম্পর্কে তিনি বলেন, তদন্তের পরে এটা বলা যাবে।

বুধবার (২৬ ডিসেম্বর) দিবাগত মধ্যরাত ১টা ৫২ মিনিটে আগুন লাগার সংবাদ পায় ফায়ার সার্ভিস। কয়েক মিনিটের মাথায় আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় পর্যায়ক্রমে ১৯টি ইউনিট ঘটনাস্থলে পৌঁছে আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে। ৬ ঘণ্টার বেশি সময় পর বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা ৫ মিনিটে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে।

Header Ad
Header Ad

সচিবালয়ে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানালেন ফায়ারের ডিজি

ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের প্রধান প্রশাসনিক কেন্দ্র সচিবালয়ে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে ৬ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এরই মধ্যে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে কথা বলেছেন ফায়ার সার্ভিসের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মুহাম্মদ জাহেদ কামাল।

তিনি জানান আগুনের সূত্রপাত নিয়ে এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৬ ডিসেম্বর) সকালে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

ডিজি জাহেদ কামাল জানান, ফায়ার সার্ভিসের ১৯টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে, যার মধ্যে ১০টি ইউনিট সরাসরি আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করছে। বড় গাড়িগুলো ভবনের ভেতরে প্রবেশে বাধা পাওয়ায় গেট ভেঙে দুটি গাড়ি ভেতরে ঢোকানো হয়। এ ঘটনায় ২১১ জন কর্মী নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন এবং বিভিন্ন কক্ষে প্রবেশ করে আগুন নেভানোর কাজ প্রায় শেষের দিকে বলে জানান তিনি।

এদিকে, আগুন নিয়ন্ত্রণের চেষ্টার সময় একটি মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটে। পানির পাম্পের সংযোগ দিতে সড়ক পার হওয়ার সময় একটি ট্রাকের ধাক্কায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সোহানুজ্জামান নয়ন আহত হন। তাকে দ্রুত ঢাকা মেডিকেলে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। সোহানুজ্জামান তেজগাঁওয়ের স্পেশাল ইউনিটে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলায়।

Header Ad
Header Ad

শেখ হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে? আল–জাজিরার প্রতিবেদন

সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণ প্রসঙ্গ ভারতের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল। দ্বিপাক্ষিক প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকা সত্ত্বেও নয়াদিল্লি ইচ্ছা করলে ঢাকার অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করতে পারে। চুক্তিতে এ ধরনের অনুরোধ নাকচ করার সুযোগ রাখা হয়েছে, ফলে শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানো হবে কিনা, তা এখনো অনিশ্চিত।

কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল–জাজিরার বিশ্লেষণধর্মী অনুষ্ঠান ইনসাইড স্টোরি এই বিষয়টি গভীরভাবে তুলে ধরেছে। “বাংলাদেশের ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রীকে কি ভারত ফেরত পাঠাবে?” শিরোনামের ভিডিও প্রতিবেদনটি মঙ্গলবার আল–জাজিরার ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।

শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে গত সোমবার দিল্লির বাংলাদেশ হাইকমিশন থেকে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে কূটনৈতিক পত্র দেওয়া হয়। গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অভিযোগে শেখ হাসিনাকে দেশে ফেরত এনে বিচারের মুখোমুখি করতে চায় অন্তর্বর্তী সরকার।

আদ্রিয়ান ফিনিঘানের উপস্থাপনায় ইনসাইড স্টোরিতে কথা বলেন ভারতের ওপি জিন্দাল গ্লোবাল ইউনিভার্সিটির আন্তর্জাতিক বিষয়ের অধ্যাপক শ্রীরাধা দত্ত, যুক্তরাজ্যের সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের সিনিয়র রিসার্চ ফেলো সোহেলা নাজনীন ও বাংলাদেশের নারী অধিকারবিষয়ক সংগঠন নারীপক্ষের সহপ্রতিষ্ঠাতা শিরীন হক।

শ্রীরাধা দত্তের কাছে আদ্রিয়ান ফিনিঘানের প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণের জন্য ভারতের প্রতি যে অনুরোধ জানানো হয়েছে, তা নিয়ে নয়াদিল্লির প্রতিক্রিয়া কেমন হতে হবে? ঢাকার এই অনুরোধ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে বলে মনে হচ্ছে। আপনি কী মনে করেন?

জবাবে শ্রীরাধা বলেন, নিঃসন্দেহে এটি (শেখ হাসিনাকে প্রত্যর্পণ) একটি বেশ জটিল প্রক্রিয়া। এখানে রাজনৈতিক বিবেচনাসহ আরও কিছু বিষয় আছে। তা ছাড়া বাংলাদেশের বিচার বিভাগ কতটা নিরপেক্ষ, তা-ও ভেবে দেখবে ভারত। পাশাপাশি কিছু টেকনিক্যাল বিষয়ও রয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ থেকে ভারতের কাছে শুধু কূটনৈতিক পত্র দেওয়া হয়েছে, গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেওয়া হয়নি। সেটাও বিবেচনায় নেবে ভারত। এ ছাড়া বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কতটা ন্যায়বিচার পাবেন—এ ধরনের নানা বিষয়ও আছে।

একই প্রশ্নের জবাবে সোহেলা নাজনীন বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে ২০১৩ সালে যে প্রত্যর্পণ চুক্তি হয়েছে, তাতে প্রত্যর্পণের অনুরোধ প্রত্যাখ্যানের সুযোগ রয়েছে। সাধারণত যেকোনো প্রত্যর্পণ চুক্তিতে এ ধরনের কিছু শর্ত থাকে। যেমন কোনো দেশ যদি মনে করে ফেরত পাঠানো ব্যক্তির ক্ষেত্রে সুষ্ঠু বিচারপ্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে না, সে ক্ষেত্রে চুক্তিবদ্ধ কোনো দেশ প্রত্যর্পণ আহ্বানে সাড়া না–ও দিতে পারে। আর শেখ হাসিনার প্রত্যর্পণের ক্ষেত্রে ভারত কী করবে, তা ভারত সরকারই ভালো বলতে পারবে।

এরপর তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে বাংলাদেশে অনেক অভিযোগ রয়েছে। তিনি কি ন্যায়বিচার পাবেন? আপনার কী মনে হয়? জবাবে সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এই রিসার্চ ফেলো বলেন, এটা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল কী ধরনের প্রক্রিয়া অনুসরণ করছে, সেটার ওপর নির্ভর করছে। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে আমি আশা করব, গণতান্ত্রিক সমাজ প্রতিষ্ঠার অংশ হিসেবে তারা সুষ্ঠু প্রক্রিয়া অনুসরণ করবে।’

শিরীন হকের কাছে আদ্রিয়ান ফিনিঘানের প্রশ্ন ছিল, শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালকে কতটা বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়? এই মধ্যে তাঁর ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয় ফেসবুকে অভিযোগ করেছেন, তাঁর মা ও আওয়ামী লীগের নেতারা রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার। রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণেই তাঁদের বিচারের কথা বলা হচ্ছে।

জবাবে শিরীন হক বলেন, এই ট্রাইব্যুনাল শেখ হাসিনার আমলেই নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছিল। কিন্তু তা দূর করার জন্য তাঁর সরকার কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। এখন তিনিই (শেখ হাসিনা) এই ট্রাইব্যুনালে বিচারের মুখোমুখি হচ্ছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবাই আশা করব, বিচারে যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে, অবাধ ও সুষ্ঠু বিচার হবে।’

তবে সবকিছু অনিশ্চিত—এমন মন্তব্য করে শিরীন হক বলেন, রাজনৈতিক প্রতিহিংসার যে কথা বলা হচ্ছে, সেটার সঙ্গে তিনি একমত নন। এর একটি কারণ হলো, ২০১৩ সালে যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার নিয়ে চাপ তৈরি করতে শাহবাগে (আওয়ামী লীগ) সরকারের পক্ষে গণজাগরণ হয়েছিল, সেখানে ফাঁসি দাবি করা হয়েছিল। এভাবেই ট্রাইব্যুনালটি বিতর্কিত হয়েছিল। এবার সে রকম কিছু হচ্ছে না। তিনি আশা করেন, এবার তেমনটি হবে না, ভিন্ন কিছু হবে।

প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে ভারত অতীতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের প্রত্যর্পণ করেছে জানিয়ে শিরীন হক বলেন, শেখ মুজিব হত্যা মামলার আসামি আবদুল মাজেদকে ফেরত পাঠিয়েছিল নয়াদিল্লি। যেহেতু অতীতে অভিযুক্তদের ভারত প্রত্যর্পণ করেছে, তাই দেশটি এবারও ঢাকার প্রত্যর্পণের অনুরোধে সাড়া দেবে।

নিউইয়র্কভিত্তিক মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ) সম্প্রতি বলেছে, বাংলাদেশ যত দিন মৃত্যুদণ্ড বিলুপ্ত করবে না, তত দিন দিল্লিকে শেখ হাসিনা ও তাঁর মন্ত্রিসভার অন্য সদস্যদের আশ্রয় দিতে হবে। হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এমন মন্তব্যের প্রসঙ্গ টেনে শিরীন হক বলেন, তারা বাংলাদেশে মৃত্যুদণ্ডের বাতিল চেয়েছে। মামলা যেমনই হোক, তিনি নিজেও সব ধরনের মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে। তবে তাঁকে (শেখ হাসিনা) বিচারের মুখোমুখি করা উচিত।

Header Ad
Header Ad

সর্বশেষ সংবাদ

সচিবালয়ে আগুনের ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
সচিবালয়ে আগুনের সূত্রপাত নিয়ে যা জানালেন ফায়ারের ডিজি
শেখ হাসিনাকে ভারত কি ফেরত পাঠাবে? আল–জাজিরার প্রতিবেদন
সচিবালয়ে আগুন নেভাতে গিয়ে ট্রাকচাপায় ফায়ার সার্ভিস কর্মী নিহত
৬ ঘণ্টা পর সচিবালয়ের আগুন নিয়ন্ত্রণে
সচিবালয়ের আগুন লাগা ভবনে রয়েছে যেসব মন্ত্রণালয়
মধ্যরাতে সচিবালয়ে ভয়াবহ আগুন, বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আট ও নয়তলা
চুয়াডাঙ্গায় দুই কোটি টাকার স্বর্ণসহ ৩ পাচারকারী আটক
দাঁড়িয়ে থাকা ট্রাকে ধানবোঝাই ট্রাকের ধাক্কা, চালক-হেলপার নিহত
কুবির আরেক ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে দিলো শিক্ষার্থীরা
টাকার বিনিময়ে ভোট দিলে জুলুমের শিকার হবেন: সারজিস আলম
চাঁদপুরে জাহাজে সাত খুন: গ্রেপ্তার ইরফান ৭ দিনের রিমান্ডে
টাঙ্গাইলে শিক্ষিকাকে কু-প্রস্তাবের অভিযোগে প্রধান শিক্ষক বরখাস্ত
ভারত থেকে ২৪ হাজার টন চাল আসছে বৃহস্পতিবার
৩০০ ফুট গভীর খাদে সেনাবাহিনীর ট্রাক, ভারতের ৫ সেনা নিহত
জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশন প্রধানের পদত্যাগ দাবি কর্মকর্তাদের
কাজাখস্তানে যাত্রীবাহী উড়োজাহাজ বিধ্বস্ত, নিহত অন্তত ৪০ (ভিডিও)
গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে জার্সি তৈরি করল চিটাগং কিংস
ভারতে অনুপ্রবেশের চেষ্টাকালে বিরামপুর সীমান্ত থেকে ২ যুবক আটক
৭ জানুয়ারি লন্ডন যাচ্ছেন খালেদা জিয়া