সহ্যের বাঁধ ভেঙে গেলে ফল ভালো হবে না: বিএনপিকে নানক
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, আমাদের মধ্যেও সহ্যের সীমা রয়েছে। সেই সহ্যের বাঁধ যদি ভেঙে যায় তার ফল ভালো হবে না। আমরা চাই দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য। জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা, জানমালের নিরাপত্তার জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তার ভূমিকা পালন করবে।
শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে হাজারীবাগে বিএনপির নেতা-কর্মীদের হামলার ঘটনায় আগারগাঁও পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন দলীয় কর্মীদের খোঁজখবর নিতে যান তিনি। আহত কর্মীদের খোঁজখবর নেওয়া শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলের নেতারা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম। দলের পক্ষ থেকে আহতদের চিকিৎসার সব ব্যয় বহন করা হবে বলেও আহতদের পরিবারের সদস্যদের আশ্বস্ত করেন নেতারা। এ ধারাবাহিকতায় আহতদের পরিবারের সদস্যদের আর্থিক স্বচ্ছলতার জন্য ৫০ হাজার টাকা দেওয়া হয়েছে।
হাজারীবাগে বিএনপির কর্মসূচি থেকে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের আহতদের সার্বিক পরিস্থিতি তুলে ধরেন জাহাঙ্গীর কবির নানক।
তিনি বলেন, শাহ আলমের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। আইরিনের দুই হাত ভেঙে দিয়েছে এবং আবদুল্লাহ এখন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। আবদুল্লাহর শরীরে ১৮টি সেলাই লেগেছে এবং তার কিডনি ড্যামেজ হয়ে গেছে। সে এখন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে আইসিইউতে সংকটাপন্ন অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে।
তিনি বলেন, এই অবস্থা বিএনপি-জামায়াত সারা দেশব্যাপী চালাচ্ছে। শুধু আওয়ামী লীগকে লক্ষ্য করে নয় তারা দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, পুলিশ বাহিনীর উপর অতর্কিত হামলা করছে। এদের খাসিলত কোনোদিনই ভালো হবে না। এরা ২০০৯ সাল থেকে একই অবস্থা সৃষ্টি করেছে। অগ্নিসন্ত্রাস করেছে, মানুষ হত্যা করেছে, রাজনীতির নামে এরা সন্ত্রাসীর পথ বেছে নিয়েছে। সরকারি অফিস জ্বালিয়ে দিয়েছে। ট্রেন লাইন উপড়ে ফেলেছে।
সাবেক প্রতিমন্ত্রী নানক বলেন, আমরা পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগের মধ্যেও একটি সহ্যের সীমা রয়েছে। সেই সহ্যের বাঁধ যদি ভেঙে যায় তার ফল ভালো হবে না। আমরা চাই দেশে শান্তি-শৃঙ্খলা এবং গণতান্ত্রিক অধিকার সমুন্নত রাখার জন্য।
মানুষের জানমালের বিধান রক্ষা করা সরকারের দায়িত্ব জানিয়ে নানক বলেন, দেশে গণতন্ত্র রয়েছে, শেখ হাসিনার সরকার দেশের সব রাজনৈতিক দলকে মিছিল মিটিং করার অধিকার দিয়েছেন। কিন্তু সেই অধিকারকে যদি মনে করা হয় যে, তারা যা ইচ্ছা তাই করবে, জনগণের উপর হামলা করবে, আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপর হামলা করবে, পুলিশের উপর হামলা করবে তাহলে আমরাও পরিষ্কারভাবে বলতে চাই, জনগণের শান্তি-শৃঙ্খলা, জানমালের নিরাপত্তার জন্য সরকারের পাশাপাশি আওয়ামী লীগও জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তার ভূমিকা পালন করবে।
এসময় আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীদের সশস্ত্র হামলায় দলের নেতা-কর্মীদের আহত হওয়ার প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, গত দুইদিন যাবৎ আমাদের আহত নেতা-কর্মীদের দেখছি। আমরা বলতে চাই, সন্ত্রাসী কায়দায় সশস্ত্র কায়দায় মানুষের উপর বিশেষ করে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, দেশটিভির সাংবাদিকদের উপর নির্মমভাবে আঘাত করেছে, আমরা এসব কর্মকাণ্ডের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।
নাছিম আরও বলেন, শান্তিপূর্ণভাবে যদি কোনো রাজনৈতিক দল রাজনৈতিক কর্মসূচি পালন করে সেক্ষেত্রে আমাদের বাধা দেওয়ার কোনো ইচ্ছা নেই। আমাদের কোনো কর্মসূচি নেই। কিন্তু কেউ যদি সন্ত্রাসী কায়দায় সশস্ত্র কায়দায় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের উপর আঘাত হানে, সাংবাদিকদের উপর আঘাত হানে, দেশের সাধারণ মানুষের উপর আঘাত হানে সেক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ তার নেতা-কর্মীদের নিয়ে, জনগণকে সঙ্গে নিয়ে জনস্বার্থে আইনশৃঙ্খলা এবং স্থিতিশীলতা রক্ষার জন্য বিএনপি জামায়াতি সন্ত্রাসী গুন্ডাদের প্রতিহত করার জন্য প্রয়োজনে রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, শান্তি সৃষ্টির লক্ষ্যে শান্তিপূর্ণ উপায়ে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে প্রতিহত এবং মোকাবিলা করা হবে।
এসএম/এসজি